তিন বান্ধবীর মানবিক কীর্তি, ঘর বাঁধলেন মূক-বধির কন্যা

শনিবার সকালে দুর্গাপুরের একটি মন্দিরে বিয়ের বন্দোবস্ত করা হয়েছিল।

শনিবার সকালে দুর্গাপুরের একটি মন্দিরে বিয়ের বন্দোবস্ত করা হয়েছিল।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Arrangements were made for the marriage of a deaf and dumb girl at Durgapur

নববিবাহিত দম্পতির সঙ্গে তিন বান্ধবী। ছবি: অনির্বাণ কর্মকার

মূক ও বধির মেয়ের বিয়ে দিলেন তিন বান্ধবী। পাত্রেরও কথা বলার ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। শনিবার বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন দুই তরুণ-তরুণীর বিয়ে হল দুর্গাপুরে। তিন বান্ধবী মিলেই বিয়ের সব আয়োজন করেছিলেন। শহরের তিন মহিলার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকার বিশিষ্টজনেরা।

Advertisment

শনিবার সকালে দুর্গাপুরের প্রান্তিকা সংলগ্ন মন্দিরে ওই দুঃস্থ মূক ও বধির মেয়েটির বিয়ের বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। পাত্র-পাত্রী দুজনেই বিশেষভাবে সক্ষম। পাত্রী সম্পূর্ণভাবে মূক ও বধির। তেমনই পাত্রেরও রয়েছে কথা বলার সমস্যা। তবে দু'জনেরই ঘর বাঁধার ইচ্ছা ছিল। সেই ইচ্ছেকে সম্মান জানিয়ে তাঁদের বিয়ের বন্দোবস্ত করেন তিন বান্ধবী।

3 Bengal woman help a specially abled girl to get married
মন্দিরে মালাবদল। ছবি: অনির্বাণ কর্মকার

দুর্গাপুরের মণি চৌধুরী, শম্পা গিরি এবং বুলু মণ্ডল তিন জনেই ভালো বান্ধবী। দুর্গাপুরের বিধান নগরের বাসিন্দা মণি, সেপকোর বাসিন্দা শম্পা গিরি ও বেনাচিতিতে বাড়ি বুলু মণ্ডলের। এদিন বিবাহিত এই তিন বান্ধবীই বিয়ের সব খরচ বহন করেছেন।

Advertisment

উল্লেখ্য, বেনাচিতির গোঁসাইনগরের শম্পা গিরি তাঁর দূর সম্পর্কের আত্মীয়ের কাছ থেকে ৩৪ বছরের রাখি যাদবের কথা জানতে পারেন। রাখি সম্পূর্ণ রূপেই মূক ও বধির। বাবা মারা যাওয়ার পর গোঁসাইনগরের বাড়ি বিক্রি করে দেন তাঁরা। মা-মেয়ে কোনওক্রমে বর্তমানে মায়াপুরে একটি ভাড়া ঘরে থাকেন।

3 Bengal woman help a specially abled girl to get married
শনিবার সকালে এই বিয়ে দেখতে রীতিমতো ভিড় জমে যায় মন্দির প্রাঙ্গণে।

বিবাহযোগ্যা হলেও আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে মেয়ের বিয়ে দিতে পারছিলেন না রাখির মা। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন হওয়ার জেরেই তাঁর বিয়ে দিতে সমস্যা হচ্ছিল বলে জানা গিয়েছে। একথা শুনেই শম্পাদেবী তাঁর দুই বান্ধবী মণি ও বুলুকে সব কথা জানান।

আরও পড়ুন- বর্ধমানে ভাতের হোটেলে মদের রমরমা কারবার! উঠে আসছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য

তারপর তিনজনে মিলে মূক বধির মেয়ের জন্য পাত্র খোঁজা শুরু করেন। যেমন ভাবা তেমনই কাজ। তিনজনের প্রচেষ্টায় অবশেষে দুর্গাপুরের বেনাচিতির সুভাষ পল্লির বাসিন্দা ৩৬ বছরের মুন্না যাদবের খোঁজ মেলে। মুন্নারও কথা বলার ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে।

সব দিক ভেবে বিয়ের তোড়জোড় শুরু করে দেন তিন বান্ধবী। মন্দিরে বিয়ের যাবতীয় খরচও তাঁরাই বহন করেছেন। শুধু তাই নয় আগামী দিনেও দম্পতির পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তাঁরা। মণি চৌধুরী জানান, তিনি ও তাঁর বান্ধবীরা মিলে সারা বছর ধরেই সামাজিক কাজ করে থাকেন। দুঃস্থদের পাশে দাঁড়ানোই লক্ষ্য তাঁদের। অন্যদিকে বুলু মণ্ডল জানান, তিনিও এই কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে পেরে যথেষ্টই খুশি হয়েছেন।

marriage Durgapur West Bengal