Inspiring News: তাঁর হাতের জাদুতে ক্যানভাস যেন কথা বলে! সন্দুরবনের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিল্পীর এমন দক্ষতা চোখ কপালে তুলতে বাধ্য। ছোট থেকে ভালবাসেন আঁকা। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আর পাঁচ জনের থেকে একেবারে ভিন্ন কিছু করে লাইম লাইটে আসার ইচ্ছা ছিল পাথরপ্রতিমার সমরেশ মাইতির।
কিছু করার খিদে সব সময়ই তাঁকে যেন তাড়িয়ে বেড়াত। কঠোর অনুশীলনের মধ্যে দিয়ে তিনি রপ্ত করেছে আঁকার এ এক অভিনব কৌশল। যা দেখে অবাক হয়েছেন লাখো মানুষ। ইতিমধ্যে সমরেশের খ্যাতি দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও পৌঁছেছে। মিলেছে একের পর এক স্বীকৃতি। হাতে ধরে আঁকা শেখাচ্ছেন ৪-৫ হাজার শিক্ষার্থীকে। কিন্তু কোন কিছুতেই যেন থামতে রাজি নন তিনি। সামনে লক্ষ্য গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড। তাই চলছে একের পর কৌশল অবলম্বন করে চিত্রকলা ফুটিয়ে তোলার পালা।
শুধু হাতে নয়, পা এবং মুখ দিয়েও তুলির টানে সাদা ক্যানভাসে রঙিন ছবি ফুটিয়ে তোলেন তিনি। একসঙ্গে শরীরের বিভিন্ন অংশে ২২ টি তুলি দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন প্রাণবন্ত ছবি। তাঁর এই সব অনন্য সৃষ্টি যেন কথা বলে। স্বীকৃতি হিসাবে সমরেশ নাম তুলেছেন ইন্ডিয়ান বুক অফ রেকর্ড ও ন্যাশনাল বুক অফ রেকর্ড’সে। কঠিন অনুশীলন চালাচ্ছেন গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম তোলার আশায়। কখনও আগুনে ক্যানভাসে ফুটে উঠছে শিল্পকর্ম তো কখনও দু'পায়ে তুলি গুঁজে সাদা ক্যানভাসে অবাক করা শিল্পকর্ম তাক লাগাচ্ছে সকলকে।
চরম দারিদ্রতা সঙ্গী করে বেড়ে ওঠা। অভাবের সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। ছেলেবেলাতেই বাবা প্রয়াত হয়েছেন। তার পর থেকে রীতিমত চলেছে বাঁচার লড়াই। তবে কোন কিছুতেই দমে যাননি তিনি। ছেলেবেলা থেকে আঁকতে ভালবাসতেন সমরেশ। আর সেই আঁকাকে সম্বল করেই জগতজোড়া খ্যাতি অর্জনে মরিয়া তিনি। রপ্ত করেছেন একের পর আশ্চর্য কৌশল। এবারের লক্ষ্য গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম তোলা। সেই লক্ষ্যেই কঠোর পরিশ্রম চালাচ্ছেন সমরেশ। তবে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আর্থিক প্রতিবন্ধকতা। তবে হাল ছাড়েন নি তিনি।
প্রতিবন্ধীদের আঁকা বরাবরই অনুপ্রাণিত করত সমরেশকে। সেই থেকেই মাথায় আসে আলাদা কিছু করার। আগুন জ্বালিয়ে চোখের নিমেষে সাদা ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলেন সিদ্ধিদাতা গণেশ সহ প্রখ্যাত গায়িকা লতা মঙ্গেশকরের অবয়ব। নিজের এই শিল্পকলা সম্পর্কে সমরেশ জানিয়েছেন, " ছেলে বেলা থেকে একটু অন্য কিছু করতে চেয়েছিলাম। প্রবল অর্থকষ্টে বড় হয়েছি। আঁকার প্রতি ছোট থেকেই ঝোঁক। শিল্পকর্মের জেরে সকলের থেকে আলাদা কিছু করার একটা খিদে আমাকে সব সময় তাড়িয়ে বেড়াত। মাথায় আসে একের পর এক কৌশল। তাকে কাজে লাগিয়েই চলে সাদা ক্যানভাসে চিত্রকলা ফুটিয়ে তোলার খেলা। এখন সামনে লক্ষ্য গিনেস বুকে নাম তোলা। সেক্ষেত্রে আর্থিক প্রতিবন্ধকতা কিছুটা বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে আমি আমার লক্ষ্যে অবিচল। আমি আশা রাখি আমার এই প্রতিভা একদিন বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি পাবে"।