চালু হয়েছে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড। নামমাত্র সুদে শিক্ষাঋণ নেওয়ার সুযোগ পাবে রাজ্যের দুস্থ পরিবারের মেধাবী পড়ুয়ারা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই প্রয়াস ইতিমধ্যেই সাড়া ফেলেছে। এই ঋণের গ্যারান্টারও রাজ্য সরকার। কিন্তু, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের আবেদন করতেই চক্ষু চড়ক গাছ কালনার বি-টেক পড়ুয়া আবির মিত্রের। শিক্ষা ঋণ দিতে তাঁর বাড়ির দলিল জমা রাখতে বলেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এমনই অভিযোগ উঠল বর্ধমান সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাংকের কালনা শাখার বিরুদ্ধে।
পুরো বিষয়টি ইতিমধ্যেই ই-মেইলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েছেন অবির মিত্র। অভিযোগ জানানো হয়েছে কালনার বিধায়ক, মহকুমাশাসক সহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সব দফতরেও। ব্যাংকের এমন আজগুবি দাবি প্রত্যাহার করে তাঁকে যাতে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা দেওয়া হয় ই-মেইলে মুখ্যমন্ত্রী ও প্রশাসনের কাছে সেই আবেদন করেছেন বি-টেকের দ্বিতীয় বর্ষের এই পড়ুয়া।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবির। তাঁর বাবা প্রিয়ব্রত মিত্র একটি ওষুধের দোকানে কাজ করেন। সামান্য আয়ে চলে সংসার ও ছেলের পড়ালেখার খরচ চলে। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার খরচ প্রচুর। প্রতি সেমেস্টারে লাগে প্রায় ৩০ হাজার টাকা করে। যা অবিরের বাবার পক্যে মেটানো সম্ভব নয়। জানা গিয়েছে, সদ্য সমাপ্ত দ্বিতীয় সেমিস্টারের পুরো অর্থও অবির মেটাতে পারেননি। এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা শুনে রাজ্যের স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড ঋণের জন্য বর্ধমান সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাংকের কালনা শাখায় আবেদন জানায় সে। কিন্তু, ব্যাংকের আজব দাবিতে মাথায় হাত পড়ে ওই ছাত্রের। সে ই-মেল করে মুখ্যমন্ত্রীকে।
আরও পড়ুন- ধূপগুড়ির ঘটনা থেকে শিক্ষা, এবার বুথে বুথে টিকাকরণ শিবিরের ভাবনা নবান্নের
কেন এমন দাবি ব্যাংকের? সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাংকের কালনা শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যানেজার প্রদীপ অধিকারী অবশ্য অভিযোগ মানতে রাজি নন। তিনি বলেছেন, "লোন নিয়ে প্রাথমিক আলোচনার পর তা বর্ধমানের সেন্ট্রাল শাখা থেকে অনুমোদন পায়। এক্ষেত্রে জমি, বাড়ি বন্ধক রাখার কথা কাউকে বলা হয়নি।"
নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসনও। কালনার মহকুমাশাসক সুরেশ কুমার জগৎ-এর আশ্বাস, "ব্যাংকেরর সঙ্গে কথা হয়েছে। ওই ছাত্রের লোন পেতে আর কোনও অসুবিধা হবে না।"
শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সমাধান মিলেছে। ঋণ পাবেন অবির। উচ্চ শিক্ষায় কোলো মেঘ কেটে সুদিনের আশায় ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়ুয়া।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন