মধ্যরাতে করুণাময়ীর বিক্ষোভস্থল খালি করল পুলিশ। জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হল বিক্ষোভরত চাকরিপ্রার্থীদের।
তবে, বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন চাকরিপ্রার্থীরাও। এমনকী, পুলিশের গাড়ির চাকার সামনেও তাঁরা বারেবারে শুয়ে পড়েন। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত টেনে-হিঁচড়ে ও চ্যাংদোলা করে পুলিশ ওই বিক্ষোভকারীদের গাড়িতে তোলে। করুণাময়ী থেকে সরিয়ে নিয়ে যায়।
তার মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়া চাকরিপ্রার্থীদের অ্যাম্বুল্যান্স করে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে নেওয়ার পর তাঁদের পড়ে থাকা কাগজপত্র পুলিশের নির্দেশে ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করে দেন পুরকর্মীরা।
পুলিশের এই চূড়ান্ত সক্রিয় হয়ে ওঠার আগে রাতের দিকে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন বামপন্থী সংগঠনের ছাত্র-যুবরা। তাঁরা বিক্ষোভকারীদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
জানা যায়, উচ্চ আদালত শুক্রবার বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য শুনতে রাজি হয়েছে। বিক্ষোভস্থলে ছিলেন গেরুয়া শিবিরের ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের সদস্যরাও। তাঁদের সঙ্গে পুলিশের বচসাও বেধে যায়।
তার মধ্যেই মধ্যরাতে সক্রিয়তা বাড়ান পুলিশকর্মীরা। বলপ্রয়োগ করে ২০১৪ সালের এই টেট উত্তীর্ণ আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ তাঁরা তুলে দেন। তবে, বিক্ষোভকারীরাও জানিয়েছেন, তাঁরা এখন উঠে যেতে বাধ্য হলেও বিক্ষোভ চাকরি না-পাওয়া পর্যন্ত প্রত্যাহার করবেন না। বিক্ষোভকারীদের কয়েকজনকে বলতে শোনা যায়, 'আমাদের চাকরি বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানেন না সেসব?'
বিক্ষোভকারীদের এভাবে রাতের অন্ধকারে বলপ্রয়োগ করে তুলে দেওয়ার প্রতিবাদে তীব্র ধিক্কার জানিয়েছে বিরোধী দলের নেতৃত্ব। ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার তাঁরা পথে নামার হুমকি দিয়েছে। বিক্ষোভকারী চাকরি প্রার্থীদের সমর্থনে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হতে দেখা যায় সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে। তাঁরা পুলিশের ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানান।
আরও পড়ুন- ন্যায্য আন্দোলনকারীদের ভালোবাসি-কিন্তু পুরোটা জানি না: মমতা
এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধে সাড়ে ছ'টা থেকেই বিক্ষোভকারীদের সরে যাওয়ার জন্য মাইকে ঘোষণা করতে শুরু করেছিল পুলিশ। কিন্তু, বিক্ষোভকারীরা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে তাঁদের বিক্ষোভ চালিয়ে যেতে থাকেন। এরপরই বিশাল বাহিনী দিয়ে ঘিরে ফেলা হয় করুণাময়ী চত্বর। আন্দোলনকারীদের তুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য আসে পুলিশের গাড়ি ও বাস।
৮৪ ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে বহু বিক্ষোভকারী অসুস্থও হয়ে পড়েন। তাঁদেরকে জল খাওয়াতে দেখা যায় বাম নেতা-কর্মীদের।
অসুস্থ বিক্ষোভকারীদের সরানোর ব্যবস্থা করা হয়।
কিন্তু, শেষ পর্যন্ত পুলিশের বলপ্রয়োগে বিক্ষোভকারীদের যাবতীয় প্রতিরোধ ভেঙে যায়। কান্নায় ভেঙে পড়েন আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের অনেকেই। বিরোধীরা তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।