এবার হেনস্থার মুখে তৃণমূল বিধায়ক তথা পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর শ্বশুর দেবপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁকে গালিগালাজ ও নিগ্রহের অভিযোগ তৃণমূল নেতা-কর্মীদেরই একাংশের বিরুদ্ধে। বর্ধমানের একটি স্কুলে স্যানিটাইজিং টানেল বসানোকে কেন্দ্র করে এদিন তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। শেষমেশ পুলিশি হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। বর্ধমানের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নালিশ জানানো হচ্ছে।
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার সকালে। টলিউড অভিনেত্রী শুভশ্রীর মাসি অনাবাসী ভারতীয় অনিতা গড়কড়ি বর্ধমানের দু'টি স্কুলে স্যানিটাইজিং টানেল বসানোর খরচ দেওয়ার মনস্থ করেন। সেই মতো তিনি শুভশ্রীর বাবা দেবপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়কে উদ্যোগী হতে বলেছিলেন। দেবপ্রসাদবাবু বর্ধমান শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের দুবরাজদীঘি হাইস্কুল ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের রেলওয়ে বিদ্যাপীঠ স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। দেবপ্রসাদবাবুর দাবি, দুবরাজদীঘি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের অনুমতি নিয়েই এদিন শ্যালিকা ও কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে সোমবার সকালে স্কুলে গিয়েছিলেন।
অভিযোগ, স্কুলে স্যানিটাইজিং টানেল বসাতে গেলে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর মহম্মদ আলি ও তাঁর ভাইপো তৃণমূলের যুবনেতা নুরুল আলম বাধা দেন। স্কুল পরিচালন সমিতির অনুমতি না নিয়ে ব্যক্তিগত নামে স্যানিটাইজিং টানেল লাগানো যাবে না বলে জানান তাঁরা। এই বাগবিতণ্ডার মধ্যেই মহম্মদ আলি ও নুরুল আলমের নেতৃত্বে একদল তৃণমূল কর্মী তাঁদের উপর চড়াও হয়। হাতে বন্দুক, লাঠি ও রড নিয়ে তাঁদের শাসানি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। দেবপ্রসাদবাবুর সঙ্গে থাকা শেখ হায়দার আলি, শেখ খোকন, শশীরাম ও গোবিন্দ মাল নামে চার তৃণমূল কর্মীকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন- বন্যা ত্রাণে পাহাড়-প্রমাণ ‘দুর্নীতি’, CAG-কে দিয়ে তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
এমনকী স্যানিটাইজিং টানেলটিরও ক্ষতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনাটি রাজ চক্রবর্তীর শ্বশুর দেবপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায় জেলা তৃণমূল নেতৃত্বকে জানিয়েছেন। শুভশ্রীর বাবা দেবপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায় এলাকায় তৃণমূলের কনভেনর বলে নিজেকে দাবি করেছেন। এদিকে, দেবপ্রসাদবাবুর তোলা অভিযোগ উড়িয়ে নুরুল আলম বলেন, 'অনুমতি ছাড়াই ব্যক্তিগত একজনের নামে স্যানিটাইজিং টানেল বসানোর চেষ্টা করছিলেন উনি। স্কুল পরিচালন সমিতির অনুমতি ছাড়া ওই ব্যক্তি ওই কাজ করেছেন। এলাকায় নিজের কর্তৃত্ব তুলে ধরতেই কাজ করতে এসেছিলেন। তাই বাধা দেওয়া হয়েছে। স্কুল পরিচালন সমিতিতে আলোচনা হলে স্যানিটাইজিং টানেলের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।' নিজেকে স্কুলের পরিচালন সমিতির সদস্য বলেও দাবি করেন নুরুল আলম।
এদিকে দুবরাজদীঘি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক নবকুমার মালিক বলেন, 'দেবপ্রসাদবাবু আমার কাছে স্যানিটাইজিং টানেল লাগানোর জন্য লিখিত আবেদন করেছিলেন। ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে আমি ওনাকে এটি করতে বলেছিলাম। যেটা ঘটল সেটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন