দুর্গাপুজোর নবমীর রাতে শুরু হওয়া ঘটনার জেরে দশমী দিনভর অশান্ত হয়ে রইল হুগলীর উত্তরপাড়া। দশমীর উদ্দেশ্য়ই হলো একে অপরকে শুভ কামনা জানানো, প্রীতি ও ভালবাসায় একে অপরকে আপন করে নেওয়া। কিন্তু উত্তরপাড়ায় চলল তান্ডব, রাস্তা অবরোধ, মারধর। দুর্গাপুজোয় শহরে অশান্তি হওয়ায় দায় এড়াতে পারছেন না পুর চেয়ারম্য়ান দিলীপ যাদব। তিনিও আপাতত মুখ লুকোতে ব্য়স্ত।
পুজো মন্ডপে ভাংচুরে অভিযুক্ত তৃনমুল কাউন্সিলর সুমিত চক্রবর্তীকে এলাকায় ঘুরতে দেখে ইয়ংস্টার ক্লাবের সদস্যরা। প্রথমে তাকে মারধর শুরু করেন স্থানীয় মহিলারা। তারপর ক্লাব সদস্য় ও অন্যান্যরা তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন। পুলিশ সুমিতবাবুকে উদ্ধার করে উত্তরপাড়া থানায় নিয়ে যায়। pic.twitter.com/1dqxqHqtIz
— IE Bangla (@ieBangla) October 19, 2018
কী ঘটেছিল নবমীর গভীর রাতে? শুক্রবার ভোরে উত্তরপাড়ার ইয়ংস্টার ক্লাবে একদল দুষ্কৃতী আচমকা হামলা চালায়। প্রথমে দুর্গামন্ডপে শুয়ে থাকা দুজনকে মারধর করে ওই দুষ্কৃতীরা। তারপর ব্য়াপক ভাংচুর চালায়। পুজো উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, স্থানীয় কাউন্সিলর সুমিত চক্রবর্তী এবং তাঁর দলবল অবস্থায় শুক্রবার ভোরে এই ক্লাবের মন্ডপে অাসেন। তাঁরা প্রত্য়েকেই মদ্য়প অবস্থায় ছিলেন। সেই সময় মন্ডপে দুজন শুয়েছিলেন। তাঁদের ওপর অাচমকাই হামলা চালায় কাউন্সিলরের দলবল। মন্ডপে রাখা চেয়ার সহ বিভিন্ন পুজোর সামগ্রী ভাঙচুর করে।
সকাল হওয়ার পর এই ভাঙচুরের খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন মন্ডপের সামনে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাতে থাকেন তাঁরা। এরপর অভিযুক্ত কাউন্সিলরের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন স্থানীয়রা। মহিলারা অবরোধ করেন উত্তরপাড়ার অার কে রোড। কি কারণে অাচমকা এই ভাঙচুর তা অবশ্য বুঝে উঠতে পারছেন না ইয়ংস্টার ক্লাবের পুজো উদ্যোক্তারা। উত্তরপাড়া থানাতে সমস্ত ঘটনা জানিয়ে অভিযোগ করা হয়।
এদিকে এদিন ওই অভিযুক্ত তৃণমূল কাউন্সিলরকে এলাকায় ঘুরতে দেখেন ইয়ংস্টার ক্লাবের সদস্যরা। প্রথমে তাকে মারধর শুরু করেন স্থানীয় মহিলারা। তারপর ক্ষিপ্ত ক্লাব সদস্য় ও পাড়ার বাসিন্দারাও কাউন্সিলরকে বেধড়ক মারধর করেন। এরপরে পুলিশ সুমিত চক্রবর্তীকে উদ্ধার করে উত্তরপাড়া থানায় নিয়ে যায়। এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসার পর সুমিত আত্মগোপন করে রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
ঘটনার পর ওই পুজো মন্ডপ পরিদর্শনে যান উত্তরপাড়া পুরসভার চেয়ারম্য়ান দিলীপ যাদব। তিনি পুরো ঘটনাক্রমকে "অনভিপ্রেত" আখ্য়া দিয়েছেন। এই ধরনের ঘটনায় তিনি লজ্জিত বলেও জানিয়ে দেন। তিনি বলেন, "ক্লাবে ভাংচুর হয়েছে, সকালে মারধর হয়েছে। কোনটাই ভুল বা মিথ্য়া আমি বলতে পারি না। আমি সব শোনার পর ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। এই শান্তিপূর্ণ শহরে এইসব ঘটনার কারণে আমার সম্মানহানি হয়েছে। শান্তি রাখতে পারলাম না দুর্ভাগ্য়বশত।"