/indian-express-bangla/media/media_files/2025/02/07/4Lu6wx256cD6BvmucFaG.jpg)
প্রতীকী ছবি।
মালদায় তৃণমূল কর্মীকে গুলি করে খুনের চেষ্টার ঘটনায় তুমুল চাঞ্চল্য ছড়ালো। রবিবার রাতে কাজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে মোটরবাইক এসে দুই দুষ্কৃতী ওই তৃণমূলকর্মীকে গুলি করে বলে অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটেছে ইংরেজবাজার থানার অমৃতি গ্রাম পঞ্চায়েতের কানাইপুর এলাকায়। রাতেই রক্তাক্ত অবস্থায় ওই তৃণমূল কর্মীকে মালদা মেডিকেল কলেজে ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়। যদিও কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ওই রোগীর পিঠের ডান দিকে অংশ ছুঁয়ে গুলি ঘেঁষে বেরিয়ে গিয়েছে।
তবে কিছুটা রক্তপাত হয়েছে। রাতভর চিকিৎসার পর সোমবার ওই রোগীকে মালদা মেডিকেল কলেজ থেকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে পুরো ঘটনাটি নিয়ে হামলাকারী সাইদ শেখ সহ দুইজনের বিরুদ্ধে ইংরেজবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই তৃণমূল কর্মী। যদিও এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারে নি পুলিশ। দুষ্কৃতীদের খোঁজ চালাচ্ছে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ বলে জানানো হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আক্রান্ত তৃণমূল কর্মীর নাম আতিমুল মোমিন (৩৪)।
তার বাড়ি অমৃতি গ্রাম পঞ্চায়েতের বেনিয়া গ্রামে। গত ৩১ জুলাই রাতে ইংরেজবাজার থানার কাজিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের লক্ষীপুর এলাকায় একটি জন্মদিনের পার্টিতে নৃশংসভাবে খুন হন মানিকচকের এক তৃণমূল নেতা আবুল কালাম আজাদ (৩০)। ওই জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আতিমুল নিমন্ত্রিত ছিল। এই খুনের ঘটনার সময় আতিমুল হচ্ছে একমাত্র সাক্ষী। ওই দিন খুনের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট এলাকার এক পঞ্চায়েত সদস্য মাইনুল শেখ সহ মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর থেকেই আতিমুলকে সাক্ষী থেকে সরে যাওয়ার জন্য ধৃতের দলবল হুমকি দিচ্ছিল বলে অভিযোগ।
পুলিশকে অভিযোগে আক্রান্ত তৃণমূল কর্মী আতিমুল মোমিন জানিয়েছেন, এদিন রাতে কানাইপুর এলাকার একটি বিল্ডিং-এর কাজ দেখে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। সেই সময় মোটরবাইকে আসা দুই দুষ্কৃতী তাঁকে লক্ষ্য করে এক রাউন্ড গুলি চালায়। মোটর বাইকে থাকা পুরনো খুনের ঘটনায় ধৃত মাইনুল শেখের ছেলে সাহিদ শেখ ছিল। তাকে চেনা গিয়েছে। অপরজন হেলমেট পড়ে থাকার কারণে তাকে চেনা যায়নি। জুলাই মাসে সেই তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনার পর থেকেই একমাত্র সাক্ষী তিনি। তাকে সাক্ষী থেকে সরে যাওয়ার জন্য রীতিমতো চাপ দিচ্ছে দুষ্কৃতীরা। দুষ্কৃতীদের প্রস্তাব না মানায় এই ভাবেই গুলি চালিয়ে খুনের চেষ্টা চালানো হয়। মঙ্গলবার আদালতে এই মামলার হাজিরার দিন রয়েছে। এখন পুরো বিষয়টি নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন তিনি।
এদিকে আক্রান্তের এক কাকা জাকির মোমিন বলেন, "আমাদের পুরো পরিবারটি তৃণমূল দল করে। ভাইপো আতিমুল এলাকার দীর্ঘদিন ধরেই সক্রিয় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত। গত ৩১ জুলাই মাইনুল শেখ ও তার দলবল আবুল কালাম আজাদ নামে এক তৃণমূল নেতাকে কুপিয়ে খুন করেছিল একটি জন্মদিনের পার্টির অনুষ্ঠানে। মৃত আবুল কালাম আজাদ ছিল মানিকচকের তৃণমূল বিধায়ক সাবিত্রী মিত্রের অনুগামী। আবুল কালামের সঙ্গে আমার ভাইপোর বরাবরই ভালো সম্পর্ক রয়েছে। ওই খুনের ঘটনায় একমাত্র সাক্ষী রয়েছে ভাইপো। তাকে এখন রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত চালাচ্ছে অভিযুক্তরা।"
তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সী জানিয়েছেন, এখানে কোনও দলের গোলমালের বিষয় যুক্ত নয়। পুরনো পারিবারিক বিবাদ যুক্ত রয়েছে। পুলিশ সেটা খতিয়ে দেখছে। ইংরেজবাজার থানার পুলিশ জানিয়েছে, লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুষ্কৃতীদের খোঁজ শুরু করা হয়েছে।