মধ্যযুগীয় অমানবিকতা। খিদের জ্বালায় দুটি মিষ্টি খেয়ে নেওয়ায় পিতৃমাতৃহীন কিশোরীর পিঠে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা বসিয়ে দিলেন তার কাকিমা। এর ফলে ওই কিশোরী পিঠ পুড়ে গিয়েছে। আর এই ঘটনা জানাজানি হতেই অভিযুক্ত ওই কাকিমা সারদামণি চ্যাটার্জিকে গ্রেফতার করেছে গোঘাট থানার পুলিশ। জানা গেছে, গোঘাট থানার পাশেই বাড়ি ১৪ বছরের ওই কিশোরীর। সে গোঘাট ভগবতী বালিকা বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী। কয়েক বছর আগে দুর্ঘটনায় তার বাবা মারা যায়। মা-ও তাকে ছেড়ে চলে যায়।
তারপর থেকে সে দাদু-ঠাকুমার কাছেই থাকতো। কিন্তু দাদুও কয়েক বছর আগে মারা যায়। এরপরই তার ওপর অত্যাচার শুরু করে কাকিমা। তাকে বাড়ির সমস্ত কাজ করতে বাধ্য করত। আর মারধর করত। মঙ্গলবার কাকিমা তাকে সারাদিন কিছু খেতে দেয়নি বলে অভিযোগ। খিদের চোটে তাই লুকিয়ে ওই কিশোরী দুটি মিষ্টি খেয়ে নিয়েছিল। আর তা জানতে পেরেই কাকিমা তার পিঠে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা বসিয়ে দেয়। ফলে ওই কিশোরীর পিঠ পুড়ে গিয়েছে।
ওই অবস্থাতেই বুধবার স্কুলে গিয়েছিল কিশোরী। কিন্তু, তার অস্বাভাবিক আচরণ দেখে সন্দেহ হয় শিক্ষিকাদের। তারপরই বিষয়টি জানাজানি হয়। এরপর গোঘাট থানায় নিয়ে যাওয়া হয় ওই ছাত্রীকে। তার অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় কাকিমাকে। এই ঘটনায় ওই কিশোরীর পাশে দাঁড়িয়েছে গোঘাট থানার ওসি শৈলেন্দ্র উপাধ্যায়। তিনি ওই ছাত্রীকে তার মামা বাড়িতে রেখে এসেছেন। এছাড়াও পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। অন্যদিকে এই ঘটনায় কাকিমার কঠোর শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন পাড়া-প্রতিবেশীরা।
আরও পড়ুন- তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি! মমতা ব্যানার্জির বিরুদ্ধেই সিবিআইয়ের কাছে নালিশ শুভেন্দুর
তারা অভিযোগ করেছেন, চ্যাটার্জি বাড়ি থেকে চিৎকার-চেঁচামেচি ও মারধরের শব্দ তাঁরাও পেতেন। কিন্তু, জিজ্ঞাসা করলেই সারদামণি এমন ভাব করতেন, যেন নিজের মেয়ের মতই ভাসুরের মেয়েকে দেখেন। আর, ওই ছাত্রীও ভয়ে পাড়ার কাউকে কিছু বলত না। যার ফলে, ওই কিশোরীর ওপর লাগাতার অত্যাচার চলছিল বেশ কিছুদিন ধরেই।