নিহতের পরিবারের সদস্যদের আশঙ্কাই সত্যি হল। পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের দেবশালা অঞ্চলের প্রাক্তন যুব তৃণমূল সভাপতি চঞ্চল বক্সি খুনে গ্রেফতার শাসকদলেরই তিন সদস্য। ধৃত আসানুল মোল্লা, মনির হোসেন মোল্লা এবং বিশ্বরূপ মণ্ডল। ধৃতদের প্রত্যেকেই দেবশালা অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা। ধৃত আসানুল ও মনির দেবশালা পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য। ধৃত বিশ্বরুপ মণ্ডল দেবশালা অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি হিমাংশু মণ্ডলের ছেলে।
রবিবার সন্ধেয় যুব তৃণমূল নেতা চঞ্চল বক্সি খুনে ধৃত তিনজনের কথা জানান জেলার পুলিশ সুপার কামনাশীষ সেন। সুপারি কিলার দিয়েই চঞ্চলকে খুন করা হযেছে বলে তদন্ত এক প্রকার নিশ্চিত পুলিশ। এদিকে, এই গ্রেফতারির কথা জানাজানি হতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে আউশগ্রামের রাজনৈতিক মহলে। এর আগে নিহত যুব তৃণমূল নেতা চঞ্চল বক্সির বাবা শ্যামল বক্সিও ছেলেকে খুনেরপিছনে দেলরই কারও হাত থাকার আশহ্কা প্রকাশ করেছিলেন। চঞ্চল খুন হওয়ার পরপরই গোটা ঘটনায় বিজেপির দিকে আঙুল তুলতে শুরু করেছিল স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। শুরু থেকেই বিজেপির দিকে আঙুল না তুলে দলেরই কারও যোগ থাকার আশঙ্কা প্রকাশ করে চঞ্চলের পরিবার।
শেষমেশ তাঁদের আশঙ্কাই সত্যি হল। এদিকে, দেবশালা অঞ্চল তৃণমূলের প্রাক্তন যুব সভাপতি চঞ্চল বক্সিকে খুনের ঘটনায় শেষপর্যন্ত তৃণমূলের লোকজন গ্রেফতার হওয়ায় কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার আউশগ্রাম ২ ব্লকের গেঁড়াইয়ে হওয়া দলীয় বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন ব্লকের দেবশালা পঞ্চায়েতের প্রধান শ্যামল বক্সি ও তাঁর ছেলে চঞ্চল বক্সি। চঞ্চল একটা সময়ে দেবশালা অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন। বৈঠক শেষে দুপুর ৩ টে নাগাদ বাবা ও ছেলে একটি বাইকে চেপে দেবশালা গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন। বাইক চালাচ্ছিলেন চঞ্চল।
বাড়ি ফেরার পথে আউশগ্রাম ও বুদবুদ থানার সীমানা লাগোয়া গেঁড়াই-মানকর রোডে উলুগড়িয়া জঙ্গলের কাছে তাঁদের পিছু নেয় দুষ্কৃতীরা। তাঁদের লক্ষ্য করে পর পর গুলি ছুঁড়তে শুরু করে দুষ্কৃতীরা। এরপরেই শ্যামল বক্সি বাইক থেকে পড়ে যান। চঞ্চলের বুকের পাঁজরে ও হাতে মোট তিনটি গুলি লাগে। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে জামতাড়া হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয় বাসিন্দারা। সেখানেই চিকিৎসকরা যুব তৃণমূল নেতা চঞ্চল বক্সিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এই খুনের তদন্তে দুই বর্ধমান জেলার পুলিশ সিট গঠন করে। সিআইডিও ঘটনাস্থলে তদন্তে যায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, চঞ্চল বক্সি খুনে ধৃতদর সোমবার বর্ধমান আদালতে তোলা হবে। তদন্তকারী অফিসাররা ধৃতদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবেন। ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করে সুপারি কিলারদের নাগাল পেতে চাইছে পুলিশ।
আরও পড়ুন- Daily Horoscope, 13 September 2021: তুলার সাফল্য, ধনুর অর্থ সঙ্কট! পড়ুন রাশিফল
উল্লেখ্য, চঞ্চল বক্সি খুন হওয়ার দু-দিন পরে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা আউশগ্রামে তৃণমূলের পর্যবেক্ষক অনুব্রত মণ্ডল। খুনিদের গ্রেফতারের জন্য তিনি পুলিশকে ১৫ দিনের সময়সীমা বেঁধে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। খুনিরা তাঁর দলের লোক হলে তাঁদের গুলি করে মারা উচিত বলে সেদিন মন্তব্য করছিলেন অনুব্রত মণ্ডল।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন