ফ্যাটি লিভার একটি অত্যন্ত পরিচিত অসুখ। নিয়মিত জাঙ্কফুড খেলে লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমে। সেটাই ফ্যাটি লিভারের অন্যতম কারণ। বিশ্বজুড়ে মহামারির মত ছড়িয়ে পড়ছে ফ্যাটি লিভার। তবে মজার বিষয় এই রোগের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোন ওষুধ সেভাবে আবিষ্কার হয়নি। শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের মধ্যে একটি হল লিভার। তাই লিভারকে সুস্থ রাখাটা খুবই জরুরি। লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমেই তৈরি হয় ফ্যাটি লিভার। বর্তমানে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে। ঠিক সেই কারণে আজ অনেকেই ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হচ্ছেন নিজের অজান্তেই । সঠিক সময়ে ফ্যাটি লিভারের চিকিৎসা না করালে লিভারে সিরোসিস এমনকী ক্যানসারও হতে পারে। ফ্যাটি লিভারকে নিয়ন্ত্রণ করার সবচেয়ে ভাল উপায় হল ডায়েট মেনে চলা। ফ্যাটি লিভারকে ঠিক রাখতে ফল,শাকসবজি ও সামুদ্রিক মাছই হবে আপনার অস্ত্র।
বিশ্বজুড়ে ফ্যাটি লিভাবে আক্রান্তের সংখ্যা হুহু করে বেড়ে চলেছে। ফ্যাটি লিভার সাধারণ ভাবে দু'ধরণের অ্যালকোহলিক এবং নন অ্যালকোহলিক। নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারের নির্দিষ্ট কোন কারণ না থাকলেও এটি খাদ্যের সঙ্গে সুস্পষ্ট ভাবেই সম্পর্কিত। অনেক দিন ধরে ফ্যাটিলিভারের সমস্যা থেকে লিভার থাকলে হার্ট বা কিডনির সমস্যাও হতে পারে। ফ্যাটি লিভারের জন্য কোন নির্দিষ্ট ওষুধ এখনও নেই। গবেষণায় দেখা গিয়েছে প্রায় ২৫শতাংশ ফ্যাটি লিভার জিনের সমস্যার কারণে হয়। আর এই জিনের নাম PNPLA3
PNPLA3 জিনের অসঙ্গতির কারণে অস্বাভাবিকহারে প্রোটিন তৈরি হয়। লিভারের কোষের ভিতর এই অস্বভাবিক প্রোটিনটা ধংস না হয়ে বাড়তে থাকে। সেটাই ফ্যাটি লিভারের কারণ । এই প্রোটিনটাকে কীভাবে ধ্বংস করা সম্ভব? তা জানলে ফ্যাটি লিভারের বিরুদ্ধে ওষুধও তৈরি সম্ভব। আর সেটাই আবিষ্কার করে চমকে দিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী এক বাঙালি চিকিৎসক বিজ্ঞানী। ইউনিভার্সিটি ইফ টেক্সাস সাউথ ওয়েস্টার্নে পিএইচডি করার সময় চিকিৎসক বিজ্ঞানী আভাস দাস BFAR নামক একটি এমন প্রোটিন আবিষ্কার করেন যা PNPLA3 থেকে সৃষ্ট প্রোটিনকে সহজেই ধ্বংস করে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ গোটা ইউরোপের আর বড়বড় ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি অনেকদিন ধরে এই প্রোটিনটিকে অবিষ্কারের চেষ্টা করলেও তারা সফল হয় নি। অবশেষে এক বাঙালি চিকিৎসক বিজ্ঞানীর হাত ধরে হল মিরাকেল। প্রসিডিংস অফ ন্যাশানাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সে'স অফ ইউনাইটেড স্টেটস বা PNAS বলে বিখ্যাত একটি জার্নালে প্রকাশিত হয় বাঙালি বিজ্ঞানীর এই গবেষণা পত্র।
সাউথ পয়েন্ট স্কুল থেকে পাস করে এনআরএস থেকে এমবিবিএস পাস করেন আভাস। এরপর পিএইচডি করতে পাড়ি দেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-এ। তিনি মনে করেন এই অবিষ্কার মানুষকে জানতে সাহয্য করবে ফ্যাটি লিভারের প্রকৃত কারণ এবং সেই সঙ্গে হয় অগণিত মানুষের মনে আশার সঞ্চার করবে ফ্যাটি লিভারের চিকিৎসার বিষয়েও।