বাংলা মাধ্যমেও নিজেকে প্রমাণ করা যায় তার প্রমাণ আগেই দিয়েছে বছর ১৬-এর বাংলার এই হবু বিজ্ঞানী। এবার মুকুটে আরও এক নয়া পালক। নজিরবিহীন স্বীকৃতি পেয়ে আপ্লুত হুগলি কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্র অভিজ্ঞান কিশোর দাস। আসন্ন প্রজাতন্ত্র দিবসে বিশেষ অতিথি হিসাবে ডাক পেল দিল্লির কর্তব্যপথে।
হাত না দিয়েই পড়বে স্যানিটাইজার! করোনা কালে এমনই আবিষ্কার তাক লাগিয়েছিল সকলকে। মেলে স্বীকৃতিও। ‘ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্স ফেস্টিভ্যালে’ সেরার সেরা মুকুট আদায় করে নেয় হগলি কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্র অভিজ্ঞান কিশোর দাস।
স্বীকৃতি হিসেবে তাকে দেওয়া হয় ‘জাতীয় মেধাসম্পদ পুরস্কার’। পড়াশোনার পাশাপাশি বিজ্ঞান ভিত্তিক নানান গবেষণা করছে অভিজ্ঞান। আর সেই প্রতিভার ফলস্বরূপ এবার ডাক এল দিল্লি থেকে। বাংলার এই কিশোর বিজ্ঞানীকে দিল্লির কর্তব্যপথে সাধারণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে মোদী-ম্যাক্রঁ'র সঙ্গেই দেখতে পাবেন তামাম ভারত বাসী।
কী লেখা হয়েছে আমন্ত্রণ পত্রে? তাতে লেখা আছে “আপনি ভারত সরকার স্বীকৃত একজন বিশিষ্ট মেধাস্বত্ব অধিকারী। প্রজাতন্ত্র দিবসের ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের সাক্ষী হওয়ার জন্য আপনাকে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।”
টানা চারবার ‘আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান উৎসবে’বিজ্ঞান সংক্রান্ত কাজে নজির গড়ে ছিনিয়ে নেয় সাফল্য। অভিজ্ঞান ইতিমধ্যেই তার সৃষ্টির জন্য ডাক পেয়েছে মার্কিন মুলুকে। ফিলাডেলফিয়া যুব চলচ্চিত্র উৎসবে ‘ফিল্ম মেকার্স প্যানেলেও’ স্বীকৃতি মেলে তার।
শান্ত স্বভাবের অভিজ্ঞানের নজরকাড়া কৃতিত্বে রীতিমত গর্বিত বাবা অনিন্দ্য কিশোর দাস। অল্প বয়সেই তার আবিষ্কৃত একাধিক যন্ত্র ভারতের সেরা বিজ্ঞানীদের নজর কেড়েছে। একাধিক স্বীকৃতি মিললেও প্রজাতন্ত্র দিবসে কেন্দ্রের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রক থেকে অভিজ্ঞানকে ইমেল মারফত আমন্ত্রণপত্র পেয়ে আপ্লুত এই হবু বিজ্ঞানী ও তার পরিবার।
আরও পড়ুন : < India-China Clash:গালওয়ানেই থেমে থাকেনি চিন, সীমান্তে একাধিক হামলা ড্রাগনের দেশের, সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য >
বাবা অনিন্দ্যকিশোর দাস ছেলের এই সাফল্য নিয়ে বলেন, “এককথায় অনবদ্য। ছোট থেকে ওর মধ্যে বিজ্ঞান বিষয়ে আগ্রহ লক্ষ্য করি, পরে ধীরে ধীরে তা বৃদ্ধি পায়। সেই থেকেই একের পর আবিষ্কার সকলেরই জানা। আর ভারত সরকারের থেকে স্বীকৃতি এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না"।
অনিন্দ্যবাবু জানিয়েছেন, "অভিজ্ঞানকে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানের পাশাপাশি তাকে এক চা চক্রেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে ঘুরিয়ে দেখানো হবে দিল্লি"। এর পাশাপাশি বাবার আক্ষেপ "ভারত সরকার ছেলেকে স্বীকৃতি দিলেও রাজ্য সরকার বা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি অভিজ্ঞানের খোঁজটুকু নেয়নি। মেলেনি কোন রমকের স্বীকৃতি বা সাহায্য। সব চেয়ে দুর্ভাগ্য আজও অভিজ্ঞানকে জল কাদা পেরিয়েই স্কুল যেতে হয়। বাড়ির সামনে রাস্তাটুকু করে দেওয়া হয়নি স্থানীয় মিউনিসিপ্যালিটির তরফে"।
বাংলা মাধ্যমে আজকাল বাবা-মায়েরা সেভাবে সন্তানদের পড়ানোর বিষয়ে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেন না। এই বিষয়ে অভিজ্ঞান বলে, “এই ধারণাটা একেবারেই ভুল, মাতৃভাষাতে বিজ্ঞানচর্চা অথবা শিক্ষাকে সর্বাগ্রে গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ। আমি বাংলা মাধ্যমের ছাত্র হয়েও আন্তর্জাতিক স্তরের প্রতিযোগিতায় সাফল্য পেয়েছি। কাজেই মাধ্যমটা এখানে বড় বিষয় নয়, মেধা সেই সঙ্গে শেখার আগ্রহ সর্বপরি পরিবারের সহযোগিতা যে কোন ছাত্র-ছাত্রীর কাছে সবার আগে প্রয়োজন”। ভবিষ্যতে AI নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে রয়েছে অভিজ্ঞানের। আপাতত ফোকাস জয়েন্ট এন্ট্রাস।