বিতর্কের কেন্দ্রে 'বাংলার বাড়ি' প্রকল্প। আবাস যোজনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যে একের পর এক অভিযোগে তোলপাড় অবস্থা। বিস্তর অনিয়ম ধরা পড়ছে। বহু ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, শাসক দল তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েতের সঙ্গে যুক্ত কর্তা ব্যক্তিরা যথেষ্ট সাবলম্বী হওয়া সত্ত্বেও 'বাংলার বাড়ি' প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। পাকা বাড়ি থাকলেও প্রভাবশালী হলে মিলছে এই প্রকল্প। ফলে আবাস যোজনার তালিকা নিয়ে যেমন অসন্তোষ রয়েছে, তেমনই সমীক্ষার কাজ করা আশাকর্মীদের উপরও আক্রমণ মেনেছে। বিরোধীদের নিশানায় তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও পাত্তা দিচ্ছে না জোড়-ফুল শিবির। এসবের মধ্যেই অবশ্য নড়েচড়ে বসেছে নবান্ন। কারা পাবেন 'বাংলার বাড়ি' প্রকল্প? তা নবান্নে বৈঠকের মাধ্যমে বুধিয়ে দিয়েছেন মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী।
মুখ্য সচিবের কড়া নির্দেশ, পাকা বাড়ি রয়েছে, এমন কেউ আবাস যোজনার বাড়ি পাবে না। যদি নাম উঠে থাকে, তাহলে তা দ্রুত বাতিল করতে হবে। কোনও প্রভাবশালীর কথা শোনা হবে না। এ নিয়ে কোথাও কোনও আইনশৃঙ্খলার অবনতি হলে সঙ্গে সঙ্গে নবান্নের জানাতে হবে। যেতে হবে জেলা শাসকদেরও। জেলা পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করতে হবে। প্রকল্পের কাজ স্বচ্ছতার সঙ্গে করতে হবে। সঠিক উপভোক্তাদের তালিকা তৈরিতে প্রয়োজনে প্রতিটি ব্লক অফিসারের সঙ্গে বৈঠক করতে হবে। ত্রুটি কোথায় তাও খুঁজে বের করতে হবে।
নবান্ন সূত্রে খবর, পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখে মুখ্য সচিব জানতে পেরেছেন যে, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কোচবিহার, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা সহ বেশ কয়েকটি জেলায় 'বাংলার বাড়ি' প্রকল্পে কাজ ভাল এগোয়নি। কেন এমন অবস্থা? তা জানাতে জেলাশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব।
গ্রামীণ উন্নয়নের বিভিন্ন প্রকল্পে বরাদ্দ ও টাকা পাঠানো নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত দীর্ঘদিনের। কেন্দ্রীয় অর্থ পাঠাতে প্রদানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে ও সাক্ষাৎ করে আর্জি জানিয়েছিলেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শেষমেষ প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ৮২০ কোটি টাকা নবান্নকে কেন্দ্র বরাদ্দ হয়েছে ১১ লক্ষ গ্রামীণ আবাস নির্মাণের লক্ষ্যে। এরপরই আবাস বণ্টনে বিশেষ পর্যবেক্ষক দল তৈরি করে নবান্ন। আবাস বণ্টনের কাজ নির্ভুলভাবে করতে ২১ জন উচ্চপদস্থ আধিকারিক নিয়োগও করা হয়। যাঁদের মধ্যে রাখা হয়েছে আইএএস পদমর্যাদার ৩ জন অভিজ্ঞ আধিকারিক। চলছে উপভোক্তাদের খতিয়ে দেখার কাজ। আর তাতেই উঠে আসছে বেনিয়ম।