বন্যা রুখতে অবাক-আবিষ্কার, বঙ্গতনয়ের দারুণ কীর্তিকে কুর্নিশ প্রশাসনের

বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষ একটি ডিভাইস বানিয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছেন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়ুয়া।

বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষ একটি ডিভাইস বানিয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছেন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়ুয়া।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Ayon Bagh has developed a special device for flood control

বন্যা নিয়ন্ত্রণে যুগান্তকারী আবিষ্কার বঙ্গতনয়ের। ছবি: উত্তম দত্ত।

বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষ একটি ডিভাইস বানিয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছেন হুগলি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্র অয়ন বাগ। জলের উচ্চতা মাপার কাজ করবে তাঁর তৈরি এই ডিভাইস। বিশেষ এই যন্ত্রটির নাম 'ফ্লাড মনিটারিং সিস্টেম'।

Advertisment

ডিভিসি-র মাইথন বা পাঞ্চেতের মতো জলাধারগুলি অতি বৃষ্টি হলেই জল ধরে রাখতে পারে না। বাধ্য হয়েই জলাধারগুলি থেকে বিপুল পরিমাণে জল ছাড়া হয়। যার জেরে নদী বা ক্যানেলগুলিতে বিপদসীমা উপচে জল বয়ে যায়। ডিভিসির ছাড়া জলে নিম্ন দামোদরের বর্ধমান, হুগলি ও হাওড়ার একাংশে বছর-বছর বন্যা পরিস্থিতিও তৈরি হয়।

হুগলির কৃতী ছাত্র অয়নের তৈরি এই ডিভাইস নদীতেই থাকবে। আর তা দিয়ে প্রশাসনের কর্তারা তাঁদের দফতরে বা বাড়িতে বসেও জলস্তর মাপতে পারবেন। সেই সঙ্গে তাঁরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও করতে পারবেন, এমনই দাবি অয়নের। অয়ন জানিয়েছেন, তাঁর তৈরি এই ডিভাইসটি কাজ করবে আল্ট্রাসনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে। এটি পরিচালিত হবে একটি অ্যাপের সাহায্যে। পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তে যেখানে ইন্টারনেট আছে, সেখান থেকেই জানা যাবে নির্দিষ্ট সময়ে কোনও নদীতে ওয়াটার লেভেল কি অবস্থায় আছে।

আরও পড়ুন- সংক্রমণ ঠেকাতে মরিয়া রাজ্য, আরও একবার কঠোর কোভিড বিধির পথে প্রশাসন?

Advertisment

এমনিতেই বর্ষায় নদীর জল বাড়লে হলুদ সতর্কতা, লাল সতর্কতা জারি করা হয় প্রশাসনের তরফে। সাবধান করা হয় নদী তীরবর্তী বাসিন্দাদেরও। প্রয়োজনে তাঁদের সরিয়েও নিয়ে যাওয়া হয় অন্যত্র। প্রশাসনের সেই কাজেই এবার আরও গতি এনে দিতে পারে অয়নের তৈরি এই ডিভাইসটি। এছাড়াও এই ডিভাইসটির মাধ্যমে জলাধারগুলিও সুবিধা পেতে পারে বলে দাবি কৃতী এই ছাত্রের।

আরও পড়ুন- আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ, ডোমকল বিস্ফোরণে NIA তদন্ত চেয়ে শাহকে চিঠি শুভেন্দুর

অয়নের দাবি, জালাধারগুলি তাঁর ডিভাইসটি ব্যবহার করলে জল ছাড়ার ক্ষেত্রে সুবিধা পাবে। এমনিতে কিউসেক মাপে জল ছাড়ে জলাধারগুলি। তবে এক সঙ্গে অনেক বেশি পরিমাণে জল নদীগুলি নিতে পারে না। তার জেরেই প্লাবিত হয় বিস্তীর্ণ এলাকা। এই ফ্লাড মনিটারিং সিস্টেম ডিভাইস দিয়ে নিয়ন্ত্রিত জল ছাড়তে পারবে বাঁধ কর্তৃপক্ষ, এমনই দাবি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এই পড়ুয়ার। হুগলি জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা ইতিমধ্যেই এইচইটিসি কলেজে গিয়ে অয়নের কাজ দেখে এসে প্রশংসাও করেছেন।

জেলা প্রশাসন থেকেই এইচইটিসি কলেজের ইলেক্ট্রিক্যাল কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়িয়ারিং বিভাগের ছাত্র অয়নকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। হুগলির আরামবাগ মহকুমা বন্যাপ্রবণ। ফি বছরই এখানে বন্যা হয়। এই ডিভাইসকে বন্যা নিয়ন্ত্রণে কাজে লাগানো হতে পারে। তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। চন্দননগরের বাসিন্দা অয়ন জানান, ১৫ কিমি অন্তর এই ডিভাইস বসিয়ে রাখলে জলের উচ্চতা কতটা বাড়ল বা কমল তা বোঝা যাবে। জলাধারগুলি থেকে নিয়ন্ত্রিত জল ছাড়তে খুবই কার্যকরী হবে এই ফ্লাড মনিটারিং সিস্টেম।

Smart Device West Bengal Flood Situation