মোদী মন্ত্রিসভায় সাত বছরের বেশি ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিন্ত্রী। গত জুলাইতে পদ যেতেই রে-রে করে উঠেছিলেন। অভিমানী বাবুল ৩রা অগাস্ট পদ্ম পতাকা ছাড়েন। মাঝে ব্যবধান এক বছরের। সময়ের সঙ্গেই দলও পাল্টে ফেলেছেন বাবুল। সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে তিনি এখন বালিগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক। আর বুধবার যা ঘটল তাকে বলা যায় বাবুলের মনের ইচ্ছেপূরণ। এ দিন মমতা মন্ত্রিসভার পূর্ণমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন বাবুল সুপ্রিয়।
কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী থেকে রাজ্যের পূর্ণমন্ত্রী হওয়া তাঁর কাছে অনেক সম্মানের। শপথের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেকের প্রতি কৃতজ্ঞতা উগরে সেকথা সাফ জানিয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়। বলেছেন, 'দিদি তো আছেনই। অভিষেক যে ভাবে পাশে থেকে সাহস জুগিয়েছেন, দলের অন্য বড় নেতারাও যে ভাবে সহযোগিতায় ধাপে ধাপে এগোচ্ছি। ভগ্ন হৃদয় নিয়ে গত ৩ অগাস্ট রাত শেষ হয়েছিল। আজও ৩ অগাস্ট। দিশা খুঁজে পেলাম। খুব ভাল লাগছে।'
একসময় এই বাবুলকে জেতাতে মোদী বলেছিলেন 'মুঝে বাবুল চাহিয়ে।' জিতার পরই কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। তারপর বাংলা দখলে গেরুয়া শিবির যত তেজ বাড়িয়েছে, বাবুলও পাল্লা দিয়ে আক্রমণাত্মক হয়েছিলেন। এক ফাঁকে অবশ্য মমতার সঙ্গে বাবুলের ঝালমুড়ি খাওয়া রাজনীতিতে শোরগোল ফেলেছিল। বিজেপি নেতৃত্বের মানভঞ্জন করেছিলেন বাবুল নিজেই। ২০১৪, ১৯-য়ের লোকসভায় আসানসোল থেকে জয় পান বাবুল। পরে একুশের বাংলায় তাঁর উপরই টালিগঞ্জ বিজয়ের চ্যালেঞ্জ অর্পণ করেন মোদী-শাহরা। সে যাত্রায় অবশ্য হার স্বীকার করেছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। ক্ষোভ উগরে দেন বঙ্গ বিজেপি নেতাদের উপর।
আরও পড়ুন- মমতা মন্ত্রিসভায় রদবদল: নতুন মুখ ৮ জন, পূর্ণমন্ত্রী ৫
এরপর থেকেই বিজেপিতে বাবুলের গ্রাফ নিম্নগামী হয়ে পড়েছিল। শেষে মন্ত্রিত্ব থেকে অপসারণ। ধারা ফোঁস করেছিলেন আসানসোলের সাংসদ। দাবি করেন, তিনি খেলতে চান। প্রথম একাদশে থেকেই খেলতে আগ্রহী তিনি। পরে ধারা বজায় রেখে তাঁর তৃণমূলে যোগদান। অভিষেক বন্দ্যোপাদ্যায়ের দফতরে জোড়া-ফুলে যোগ দিলেও তারপর থেকে দীর্ঘদিন কার্যত মাঠের বাইরে ছিলে তিনি। সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রযাণের পর শিকে ছিঁড়ল বালিগঞ্জের উপনির্বাচনে। জিতে বাংলার বিধায়ক হন বাবুল। আজ শপথ নিলেন পূর্ণমন্ত্রী হিসাবে। টিম মমতায় তিনি এখন প্রথম একাদশে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণের পর এযেন যোগ্য জবাব- মনে করছেন বালিগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক। তাঁর কথায়, 'আমার সঙ্গে গত ৭ জুলাই অত্যন্ত অন্যায় হয়েছিল। বাঙালিদের প্রতি অবিচার। কেন আলুওয়ালিয়াজির মত মানুষ মন্ত্রিত্ব পেলেন না? সেদিনই ইস্তফার ইচ্ছে ছিল। ৩ আগাস্ট বিজেপি ছেড়েছিলাম। আজও সেই ৩ তারিখ। পোয়েটিক জাস্টিস দিদির হাত ধরেই এলো।'
আরও পড়ুন- আমন্ত্রণ সত্ত্বেও শপথ অনুষ্ঠানে নেই বিরোধী দলনেতা! কেন? জানালেন শুভেন্দু
কী বলছেন বিজেপি নেতৃত্ব? দলের কেন্দ্রীয় নেতা অনুপম হাজরা সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, 'দীর্ঘক্ষণ মাঠের বাইরে অপেক্ষা করার পর, হাফ-প্যান্ট থেকে ফুল-প্যান্টে পদোন্নতি, অভিনন্দন।'