যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘নির্যাতনের’র জেরে অসুস্থ কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। ‘হেনস্থা’র পর থেকে তাঁর নিয়মিত শারীরিক সমস্যা হচ্ছে, গত ৫ দিন ধরে অসুস্থতা বাড়ায় ক্যালিফোর্নিয়ার হাসপাতালে এই মুহূর্তে চিকিৎসা করাচ্ছেন বাবুল। এ কথা বৃহস্পতিবার ফেসবুক পোস্ট করে জানিয়েছেন খোদ আসানসোলের বিজেপি সাংসদই। সঙ্গীতানুষ্ঠানে যোগ দিতে আমেরিকায় গিয়েছেন বাবুল। ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, গত ৫ দিন ধরে শারীরিক সমস্যা এতটা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, স্ত্রী ও পরিজনরা জোর করে তাঁকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘মারধরে’র জেরেই এই অসুস্থতা বলে দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী।
কী লিখেছেন বাবুল সুপ্রিয়?
ফেসবুক পোস্টে বাবুল লিখেছেন, ‘‘ক্যালিফোর্নিয়ার হাসপাতালে রয়েছি। বেশ কিছু শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে। এমআরআই করা হয়েছে। নিউরোলজিস্ট দেখছেন। বাঁ চোখের মণির পিছনে, কান পর্যন্ত যন্ত্রণা হচ্ছে। এজন্য রোজ মাথাব্যথা হয়। আধুনিক বাংলার তথাকথিত পড়ুয়াদের আক্রমণেই এই আঘাত লেগেছে। কালো পতাকা লাগানো লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। এসএফআই-নকশাল বলে যাঁরা নিজেদের বড়াই করেন, তাঁরাই সেদিন ধাক্কা মেরেছেন’’। একইসঙ্গে বাবুল লিখেছেন, ‘‘আমাদের গুরুত্ব সহকারে ভাবা দরকার, কীভাবে বাইরের গুন্ডারা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করল। আমাদের ভাবা দরকার, রাজনীতির জন্য নয়, শিক্ষার জন্য’’। তবে পোস্ট করার কিছুক্ষণ পরেই সেটি ডিলিট করে দেন বাবুল।
আরও পড়ুন: ‘বাবুল ভাল মানুষ সাজার চেষ্টা করছেন, আমায় গণপিটুনি দিয়ে মারার চেষ্টা চলছে’
উল্লেখ্য, এবিভিপি আয়োজিত নবীন বরণ অনুষ্ঠান এবং একটি সেমিনারে যোগ দিতে গিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘চরম হেনস্থা’র শিকার হন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। বাবুলকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন যাদবপুরের পড়ুয়াদের একাংশ। পাশাপাশি তাঁর উদ্দেশে ‘গো ব্যাক’ স্লোগানও দেওয়া হয়। এই ঘটনা ঘিরে মুহূর্তেই পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। বাবুলের সঙ্গে পড়ুয়াদের একাংশের রীতিমতো ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। বাবুল সুপ্রিয়কে থাপ্পড়, ঘুষি মারার অভিযোগ ওঠে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর জামাও ছিঁড়ে দেওয়া হয় এবং চুলের মুঠি ধরে টানা হয় বলে অভিযোগ। পাশাপাশি তাঁর চশমা খুলে নেওয়া হয়। প্রায় ৬ ঘণ্টা ধরে পড়ুয়াদের ঘেরাওয়ে ক্যাম্পাসে আটকে পড়েন বাবুল। শেষমেশ বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে বাবুল সুপ্রিয়কে উদ্ধার করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। এ ঘটনা ঘিরে উত্তাল হয় রাজ্য রাজনীতি।
আরও পড়ুন: ‘চিন্তা করবেন না মাসিমা, ছেলের ক্ষতি করব না’, বাবুলের বরাভয়
এদিকে, বাবুল সুপ্রিয়ের চুলির মুঠি ধরে টেনেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল সংস্কৃত কলেজের ছাত্র দেবাঞ্জন বল্লভের বিরুদ্ধে। দেবাঞ্জনকে ঘিরেও বিস্তর জলঘোলা চলছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাবুলকে নিগ্রহে অভিযুক্ত দেবাঞ্জনকে মারধরের অভিযোগ ওঠে এবিভিপির বিরুদ্ধে। বর্ধমানে রাতের অন্ধকারে তাঁর উপর হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন দেবাঞ্জন।