বুধবার রাজ্য মন্ত্রিসভার রদবদলে শিকে ছিঁড়তে পারে বাবুল সুপ্রিয়র। বালিগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ককে মন্ত্রিসভায় জায়গা দিতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গিয়েছে বাবুল ছাড়াও স্নেহাশিষ চক্রবর্তী, পার্থ ভৌমিক, উদয়ন গুহ এবং প্রদীপ মজুমদারকেও মন্ত্রী করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়াও বিপ্লব রায় চৌধুরী, তাজমুল হোসেন এবং সত্যজিৎ বর্মনদেরও প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দিতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বীরবাহা হাঁসদা স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হতে পারেন।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে হারের পরেই রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। এমনকী লোকসভার সাংসদ পদ থেকেও ইস্তফা দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। যদিও পরে তিনি সিদ্ধান্ত বদল করেন। ওই বছরেই ১৮ সেপ্টেম্বর সর্বভারতীয় তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে বাবুল তৃণমূলে যোগ দেন।
প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রটি। ওই আসন থেকেই বাবুলকে টিকিট দেয় তৃণমূল। ভোটে লড়ে জয় পান প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল। তারপর থেকেই বাবুলের মমতা মন্ত্রিসভায় ঢোকা নিয়ে জোরদার জল্পনা চলছিল। তবে সেই সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন না বলে জানা গিয়েছে।
এবার রাজ্যের নতুন মন্ত্রীদের বিষয়ে তৃণমূলের এক সিনিয়র নেতা বলেছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তরুণ মন্ত্রিসভা চেয়েছিলেন। সেই কারণেই দলের তরুণ মুখ বাবুল সুপ্রিয়, পার্থ ভৌমিক, স্নেহাশিষ চক্রবর্তীদের মন্ত্রিসভায় জায়গা দেওয়া হতে পারে।” শাসকদলের ওই নেতা আরও বলেছেন, “আমাদের সেকেন্ড ইন কমান্ড এবং সর্বভারতীয় তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও নতুন মন্ত্রিসভায় তরুণ মুখ আনতে চান। সেটাই বাস্তবায়িত হবে। তিনি বাবুল সুপ্রিয়, পার্থ ভৌমিকের মতো নেতাদের সামনে আনতে চেয়েছিলেন।”
আরও পড়ুন- ‘মুর্শিদাবাদকে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল করা হোক’, দাবি বিজেপি বিধায়কের, জোর শোরগোল
উল্লেখ্য, ২০১১ সাল থেকে পরপর তিনবার মমতা মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ দফতরগুলি আলো করে রয়েছেন মূলত কলকাতা-কেন্দ্রিক তৃণমূল নেতারাই। তবে সম্ভবত এবার সেই মিথ ভাঙছে। বুধবার রাজ্য মন্ত্রিসভার রদবদলে শহর কলকাতার বাইরের নেতারাও সম্ভবত গুরুত্বপূর্ণ দফতর পেতে চলেছেন।
আগামিকাল বর্তমান মন্ত্রীদের মধ্যেও দফতরের রদবদল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সূত্রের খবর, সিনিয়র নেতা ও মন্ত্রী মলয় ঘটক এবং মানস ভুঁইয়া আরও দায়িত্ব পেতে পারেন। উল্টোদিকে, দায়িত্ব কমানো হতে পারে ফিরহাদ হাকিম এবং চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যদের। সৌমেন মহাপাত্রকে দলের জেলা সংগঠনের সভাপতি করা হয়েছে। তাই এবার তিনি মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়তেও পারেন।
আরও পড়ুন- শাহর কাছে ১০০ তৃণমূল নেতৃত্বের নামে ‘নালিশ’ শুভেন্দুর, পার্থ হয়ে কাজের অভিযোগ
সোমবার নবান্নে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই মন্ত্রিসভায় রদবদলের কথা জানিয়েছিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী সোমবার জানিয়েছিলেন, বুধবারের রদবদলে চার-পাঁচটি নতুন মুখ তিনি অন্তর্ভুক্ত করবেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল বলেন, “সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং সাধন পাণ্ডে মারা গেছেন। পার্থ দা (পার্থ চ্যাটার্জি) জেলে। তাঁরা পঞ্চায়েত, শিল্প, ভোক্তা বিষয়ক এবং আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ দফতরের দায়িত্বে ছিলেন। আমি বেশি চাপ সামলাতে পারছি না। তাঁদের অবর্তমানে এসব বিভাগ দেখবে কে? তাই, আমাকে নতুন মুখ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কয়েকজন নেতাকে দলীয় সংগঠনেও পাঠানো হবে।”