'বঙ্গ জীবনের অঙ্গ' বললে বোরোলিনের আগেই আসে এর নাম। সাদা ধবধবে, রসে ডোবানো নিষ্পাপ এক মিষ্টি- রসগোল্লা। উৎসব-উদযাপনে তো আছেই, আবার অসুখ বিসুখ হলে মুখি রুচি ফেরাতেই চাই-ই চাই। যে কোনো ভূমিকায় সমানে লড়ে যাওয়া রসগোল্লা এবার নাম ভূমিকায়। উদযাপন তাকে ঘিরেই। উত্তর কলকাতার বাগবাজারে তিনদিন ব্যাপী শুরু হয়ে চলেছে রসগোল্লা উৎসব।
২৮ থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত (বিকেল ৪টে থেকে) বাগবাজারের গৌরীমাতা উদ্যানে চলবে 'বাগবাজার ও রসগোল্লা উৎসব। উৎসবের আয়োজক বাগবাজার ও রসগোল্লা উৎসব একজিকিউটিভ কমিটি। রসগোল্লার আবিষ্কারক নবীন চন্দ্র দাসকে শ্রদ্ধা জানানোর উদ্দেশ্যেই এই অভিনব উৎসবের আয়োজন। উত্তর কলকাতার জোড়াসাঁকোতে নবীন চন্দ্র দাস ১৮৬৪ সালে একটি মিষ্টি দোকান খোলেন। বছর দুয়েক পর ১৮৬৬ সালে ব্যবসায় সাফল্য পান নবীন চন্দ্র। ততদিনে অবশ্য দোকান তার ঠিকানা পালটেছে। তারও আনুমানিক দু'বছর পর বাংলার মিষ্টির জগতে আসে বিপ্লব। ছানা দিয়ে নবীন চন্দ্র বানিয়ে ফেললেন আশ্চর্য এক মিষ্টি, নাম হল রসগোল্লা। বাঙালি সংস্কৃতির সমার্থক হয়ে ওঠা রসগোল্লা চলতি বছরে পূর্ণ করল দেড়শটা বছর।
আরও পড়ুন, বেপরোয়া ইচ্ছা, অদম্য জেদ ও মিষ্টি প্রেমে তৈরি ‘রসগোল্লা’
প্রসঙ্গত, গত বছরেই বাংলা পেয়েছে রসগোল্লার জিআই, অর্থাৎ এই মিষ্টির জন্ম যে বাংলাতেই, সেটি এখন সর্বজন স্বীকৃত। তিলোত্তমায় রসগোল্লা উৎসবের ঘোষণা মঞ্চে রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজা আরও একবার মনে করালেন, ২০১৮ তেই কিন্তু বাগবাজার সর্বজনীন দুর্গোৎসব ১০০ বছরে পড়ল। কলকাতায় প্রথম সর্বজনীন দুর্গা পুজো শুরু হয়েছিল এখানেই।
তিনদিনের রসগোল্লা উৎসবের আসরে থাকছেন সুরের জগতের দিকপালরা। হরিহরন থেকে চন্দ্রবিন্দু, দোহার থেকে ইন্দ্রনীল সেন, কে নেই? থাকছেন বাচিক শিল্পী জগন্নাথ বসু-ঊর্মিমালা বসু। আড্ডায় থাকছেন অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক, তনিমা সেন, মানসী সিনহা, বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী। সমগ্র অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় থাকছেন মৈত্রেয়ী মিত্র এবং সতীনাথ মুখোপাধ্যায়।
উৎসবকে আরও আকর্ষণীয়, জমজমাট করে তোলার জন্য থাকছে রসগোল্লা নিয়েই নানা রন্ধন এবং কুইজ প্রতিযোগিতা। থাকছে রাজ্যের নানা জেলার বিশেষ বিশেষ মিষ্টিও। বছর শেষের দিনগুলো তাহলে কাটুক রসে বসে টইটুম্বুর!