মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলা ডেয়ারির ঘোষণায় মাদার ডেয়ারির কর্মীদের একটা বড় অংশ হতবাক। তাঁরা ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একগুচ্ছ দাবি-দাওয়াসহ আবেদন করেছেন। এমনকী ডানকুনিতে সংস্থার চিফ জেনারেল ম্যানেজারের অফিসের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভও করেছে কর্মীরা। সিটু ইউনিয়নের বক্তব্য, "মাদার ডেয়ারির কর্মীদের অন্ধকারে রেখে বাংলা ডেয়ারির কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আমরা বুঝতে পারছি না আদপে কী হতে চলেছে। আমরা সংশয়ে আছি।" যদিও এই সংস্থার তৃণমূল ইউনিয়নের দাবি, বাংলা ডেয়ারির ফলে কর্মীরা লাভবান হবে।
মাদার ডেয়ারি এমপ্লয়ীজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ মিত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, "মাদার ডেয়ারির তহবিল থেকে ১০ কোটি টাকা নিয়ে বাংলা ডেয়ারির অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। বাংলা ডেয়ারির অডিট হলেও মাদার ডেয়ারির অডিট করা হয়নি গত চার বছর। তাছাড়া বাংলা ডেয়ারি চালু হলে মাদার ডেয়ারির জায়গা দখল করে নিতে পারে দিল্লির মাদার ডেয়ারি। আমরা চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমাদের আবেদন কর্মীদের অন্ধকারে রেখে যেন কিছু না হয়।"
আরও পড়ুন- ত্রিপুরা বিজেপিতে বিদ্রোহের সুর, সুযোগ বুঝে ময়দানে তৃণমূল
সংস্থার সিটু অনুমোদিত ইউনিয়ন বাংলা ডেয়ারি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করলেও তৃণমূল ইউনিয়নের দাবি, বাংলা ডেয়ারি চালু হলে কর্মীদের মুখে হাসি ফুটবে। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগকে তাঁরা স্বাগত জানিয়েছেন। আইএনটিটিইউসি নেতা লক্ষ্মী ঘোষ বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার উন্নয়ন করে চলেছেন। তিনি এরাজ্যে একাধিক জনমুখী প্রকল্প চালু করেছেন৷ বাংলা ডেয়ারি চালু হলে মাদার ডেয়ারির কর্মীরা লাভবান হবে।" তবে মাদার ডেয়ারির অডিট প্রসঙ্গে তিনি জানিয়ে দেন এটা সংস্থার আভ্যন্তরীন বিষয়।
এই মুহূর্তে মাদার ডেয়ারিতে স্থায়ী কর্মী ১৫০ জন, ঠিকা কর্মী ৩৫৩ জন। প্রদীপ মিত্রের দাবি, "২০১৫-এর পর থেকে ঠিকা শ্রমিকদের সঙ্গে নতুন করে কোনও চুক্তি হয়নি। ওদের এক টাকাও বেতন বৃদ্ধি হয়নি। ২০১১-১২ থেকে ২০২১ পর্যন্ত ৪৩৮ জন কর্মী অবসর নিয়েছেন, তবু নিয়োগ বন্ধ। তারওপর মুখ্যমন্ত্রীর নতুন ঘোষণায় আমরা বিভ্রান্ত।" দুদিন আগেই নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বাংলা ডেয়ারির কথা ঘোষণা করেছেন। মাদার ডেয়ারি যে পৃথক ভাবে চলবে সেকথাও তিনি জানিয়েছেন। মাদার ডেয়ারির কর্মীরা বাংলা ডেয়ারির অধীনে কাজ করবেন বা বেসরকারি কোনও সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হবে কীনা, এসব নিয়ে জোর চর্চা চলছে দুগ্ধ সংস্থার কর্মীদের মধ্যে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন