কোচবিহারের দিনহাটায় উদ্ধার হল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর ঝুলন্ত দেহ। করোনা পরিস্থিতিতে সোমবারই বাতিল হয়েছে চলতি বছরের মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। সেই অবসাদেই আত্মহত্যা বলে দাবি পরীক্ষার্থীর বাড়ির লোকেদের।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত ছাত্রীর নাম বর্ণালী বর্মন। গোপালনগর হাই স্কুলের পড়ুয়া ছিল সে। ভালো নম্বরের আশায় প্রস্তুতিও নিচ্ছিল অম্বালিকা। পড়াশোনায় ডুবে থাকত সে। পরীক্ষায় ভাল ফল করে, জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে চেয়েছিল সে। বাবা-মার মুখ উজ্জ্বল করতে চেয়েছিল ছাত্রীটি। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির জেরে চলতি বছরে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া হবে না। আত্মঘাতী ছাত্রীটির পরিবারের দাবি, এই খবর পাওয়া মাত্রই চুপচাপ হয়ে যায় বর্ণালী। বাড়ির কারোর সঙ্গেই কথা বলছিল না সে। রাতে খাওয়ার সময় পরিবারের সদস্যরা ডাকাডাকি করেও বর্ণালীর সাড়া পায়নি। এরপরই তাঁরা দরজা ভাঙে। তখনই উদ্ধার হয় বর্ণালীর ঝুলন্ত দেহ।
মৃত ছাত্রীর কাকা প্রসেনজিত বর্মন বলেছেন, 'অন্যান্য দিনের মত পড়ার ঘরে দরজা বন্ধ করে পড়তে গিয়েছিল সে। তবে অনেক রাত হয়ে যাওয়ার পরেও ঘর থেকে বাইরে না বেরনোয় হওয়ায় সন্দেহ হয় সবার৷ ডাকাডাকির পর কোনও আওয়াজ না পেয়ে দরজা ভাঙা হয়৷ দেখা যায় ফ্যান থেকে কাপড়ে ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে বর্নালী।'
পরিবারের দাবি, দেহের পাশ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি নোট। সেখানে লাল কালিতে লেখা রয়েছে, 'তোমার সব কাজের দায়িত্ব নিতে পারলাম না বাবা।'
রবিবার দুই বোর্ড পরীক্ষা হওয়া উচিত কিনা তা জানিয়ে পরীক্ষার্থী, পড়ুয়া, অভিভাবক সহ রাজ্যবাসীকে ই-মেইল করার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী। প্রায় ৩৬ হাজার মেইল জমা পড়ে। তার বেশিরভাগই পরীক্ষা নেওয়ার বিপক্ষে মত দেয় বলে জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেইল করে পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছিল দিনহাটার গোপালনগর হাই স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী বর্নালীও। কিন্তু, সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের সঙ্গে তার মত মেলেনি। আর এতেই গভীর হতাশায় ঢুবে যায় ওই ছাত্রী। বেছে নেন চরম সিদ্ধান্ত।
মাধ্যমিক, উচ্চনাধ্যমিক বাতিলের সিদ্ধান্তকে রাজ্য সরকারের অদূরদর্শী ও হটকারী সিদ্ধান্ত বলে দাবি এসএফআই-র রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্যের। তিনি বলেছেন, 'জনপ্রিয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। মনে করছে সবাই পরীক্ষার বিরুদ্ধে। কিন্তু বাস্তবে পরীক্ষার পক্ষেও মতামত রয়েছে। সরকারের অদূরদর্শী ও খামখেয়ালি সিদ্ধান্তের জেরেই এই মর্মান্তিক পরিণতি। এসএফআই এর বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলবে।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন