পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যে ফেরানো নিয়ে উত্তাল বাংলা। এরইমধ্যে ভিন রাজ্যের জোড়া পরিযায়ী শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনায় মুর্শিদাবাদ জেলাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কফিন বন্দি দেহ কবর দেওয়ার পরে সোমবার গ্রাম জুড়ে কেবলই হাহাকার। মাস কয়েক আগে ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে লকডাউনে আটকে পড়েন জঙ্গিপুরের দুই পরিযায়ী শ্রমিক। এখনও রাজ্যের হাজার হাজার শ্রমিক লকডাউনে আটকে রয়েছে অন্যত্র।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত দুই শ্রমিকের নাম সফিকুল শেখ(৩০) ও গোকুল শেখ(২৪)। তাঁদের বাড়ি সূতি থানার বালিয়াঘাটি ও সামশেরগঞ্জ থানার কোহেতপুরে গ্রামে। আরও জানা যাচ্ছে, কেরলে বাজারে বেরনোয় পুলিসের তাড়া খেয়ে পালাতে গিয়ে লরি চাপা পড়ে সফিকুলের মৃত্যু হয় রবিবার। একই সঙ্গে ওড়িশায় বাথরুমে পড়ে গিয়ে গোকুলেরও মৃত্যু হয়েছে। তাঁর সঙ্গে থাকা অন্য শ্রমিকদের দাবি, লকডাউনের জেরে বাড়ি ফিরতে না পারায় মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন গোকুল।
জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার আগে এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়"। এদিকে মৃতদের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সফিকুল কেরলের ভালানজরি এলাকায় বাজার করতে যান। তখন পুলিসের তাড়া খেয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। আচমকা একটি লরির চাকায় পিষ্ট হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর বাড়িতে মৃত্যু সংবাদ আসতেই কান্নার রোল পড়ে যায়। তাঁর স্ত্রী খাইরুন বিবি বলেন, "ঈদের আগে বাড়ি ফিরবে বলেছিল। কিন্তু, এভাবে মৃত্যু মেনে নিতে পারছি না। আমরা অসহায় হয়ে পড়লাম। আমাদের এবার কে দেখবে?"
অন্যদিকে ওড়িশার শোনপুর জেলার বনকা থানার সিংহিজুবায় লকডাউনে আটকে পড়েন গোকুল। বাথরুমে তাঁর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন সহকর্মীরা। লকডাউনের জেরে কাজ হারানো ও বাড়ি ফিরতে না পারায় দুশ্চিন্তায় ভুগছিলেন বলে জানিয়েছেন তাঁর সঙ্গে থাকা অন্যান্য শ্রমিকরা। একেই লকডাউনে বাইরে আটকে পড়েছেন বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা, তার উপর আবার এমন দুটি মৃত্যু। স্বভাবতই শেকস্তব্ধ মুর্শিদাবাদ।