বছর শেষের আগে একগুচ্ছ উপহারের ডালি হাতে রাজ্যে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ৩০ ডিসেম্বর শুক্রবার তিনি রাজ্যে আসছেন। এই রাজ্যকে ৭,৮০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের প্রকল্প উৎসর্গ করবেন। তার মধ্যে রয়েছে ২,৫৫০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের একাধিক পয়ঃনিষ্কাশন পরিকাঠামো প্রকল্প। এর পাশাপাশি, কলকাতায় জাতীয় গঙ্গা কাউন্সিলের দ্বিতীয় বৈঠকে তিনি সভাপতিত্ব করবেন।
হাওড়া থেকে নিউ জলপাইগুড়ি সংযোগকারী বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের সূচনা করবেন। কলকাতা মেট্রোর পার্পল লাইনে জোকা-তারাতলা প্রকল্পে মেট্রো চলাচলের উদ্বোধন করবেন। এর সঙ্গে নিউ জলপাইগুড়ি রেলওয়ে স্টেশন পুনর্নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে। সঙ্গে, ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওয়াটার অ্যান্ড স্যানিটেশন প্রকল্পেরও উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
এর মধ্যে নিউ জলপাইগুড়ি রেল স্টেশন পুনর্নির্মাণের জন্য ব্যয় হবে ৩৩৫ কোটিরও বেশি টাকা। জোকা-এসপ্ল্যানেড মেট্রো প্রকল্পের (বেগুনি লাইন) জোকা-তারাতলা সম্প্রসারিত প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। এই ৬.৫ কিলোমিটার প্রসারিত প্রকল্পে ৬টি স্টেশন রয়েছে। প্রকল্পটির জন্য ব্যয় হয়েছে ২,৪৭৫ কোটি টাকারও বেশি। কলকাতার দক্ষিণাঞ্চল যেমন সরশুনা, ডাকঘর, মুচিপাড়া এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার যাত্রীরা এই মেট্রো প্রকল্পের মাধ্যমে অত্যন্ত উপকৃত হবেন।
প্রধানমন্ত্রী চারটি রেল প্রকল্পও রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করবেন। এর মধ্যে রয়েছে বইঞ্চি-শক্তিগড় ৩য় লাইন তৈরি। যাতে খরচ হয়েছে ৪০৫ কোটি টাকা। ডানকুনি- চন্দনপুর ৪র্থ লাইন প্রকল্প। এই প্রকল্পে খরচ ধরা হয়েছে ৫৬৫ কোটি টাকা। নিমতিতা-নতুন ফারাক্কা ডাবল লাইন প্রকল্প। যাতে খরচ হয়েছে ২৫৪ কোটি টাকা। আমবাড়ি ফালাকাটা-নিউ ময়নাগুড়ি-গুমানিহাট ডবল লাইন প্রকল্প। এই লাইন বাড়াতে খরচ হয়েছে ১,০৮০ কোটিরও বেশি টাকা।
এর মধ্যে কলকাতার বন্দর আইএনএস নেতাজি সুভাষে প্রধানমন্ত্রী দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে শক্তিশালী করার আরেকটি পদক্ষেপ হিসেবে জাতীয় গঙ্গা কাউন্সিলের (NGC) ২য় সভায় সভাপতিত্ব করবেন। বৈঠকে কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী, জাতীয় গঙ্গা কাউন্সিলের সদস্য অন্যান্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা উপস্থিত থাকবেন। পাশাপাশি উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীরা থাকবেন বৈঠকে। জাতীয় গঙ্গা কাউন্সিলকে গঙ্গা নদীর দূষণ প্রতিরোধ এবং এর উপনদীগুলোর পুনর্জীবনের তত্ত্বাবধানের সামগ্রিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ৯৯০ কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গা (NMCG)-এর অধীনে ৭টি পয়ঃনিষ্কাশন পরিকাঠামো প্রকল্প (৬১২ কিলোমিটার দীর্ঘ ২০টি স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট) উদ্বোধন করবেন। এই প্রকল্পগুলো নবদ্বীপ, কাঁচরাপাড়া, হালিশহর, নৈহাটি, গারুলিয়া, ব্যারাকপুর, টিটাগড়, পানিহাটি, বজবজ, চন্দননগর, বাঁশবেড়িয়া, উত্তরপাড়া কোতরং, বৈদ্যবাটি, ভদ্রেশ্বর পৌর অঞ্চলগুলোকে উপকৃত করবে। এই সব প্রকল্পের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গে ২০০MLD-এরও বেশি শোধন ক্ষমতাযুক্ত পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্প তৈরি হবে।
আরও পড়ুন- হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত সাহা, শোকে ভেঙে পড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী আনুমানিক ১,৫৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গা (NMCG)-এর অধীনে ৫টি পয়ঃনিষ্কাশন পরিকাঠামো প্রকল্পের (8টি স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট এবং ৮০ কিমি দীর্ঘ) ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এই প্রকল্পগুলো পশ্চিমবঙ্গে পয়ঃ নিষ্কাশনের ক্ষেত্রে ১৯০MLD নতুন STP ক্ষমতা যুক্ত করবে। এই প্রকল্পগুলোয় উত্তর ব্যারাকপুর, হুগলি-চুঁচুড়া, কলকাতা পুরএলাকার গার্ডেনরিচ এবং আদি গঙ্গা (টালি নালা) এবং মহেশতলা এলাকাগুলো উপকৃত হবে।
প্রধানমন্ত্রী ডা. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি– ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওয়াটার অ্যান্ড স্যানিটেশন (DSPM – NIWAS) প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। এই প্রকল্প প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে কলকাতার ডায়মন্ড হারবার রোডের জোকায় তৈরি হয়েছে। এই ইনস্টিটিউট জল, স্যানিটেশন এবং হাইজিন (WASH) বিষয়ে দেশের অন্যতম শীর্ষ সংস্থা হিসেবে কাজ করবে। সঙ্গে কেন্দ্রীয়, রাজ্য এবং স্থানীয় প্রশাসনকে তথ্য যোগান দেবে।