রাজ্যে কংগ্রেস ভেঙে তৈরি হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তারপর থেকে ধারাবাহিকভাবে কংগ্রেস ভেঙেছে। আর ফুলে উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এবার যেন প্রত্যাবর্তনের পালা। বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে কংগ্রেসে যোগদান অব্যাহত। তা-ও ঠিক পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে। দিন কয়েক আগেই মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর হাত ধরে কংগ্রেসে যোগদান করেছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ-সহ জেলা পরিষদের প্রাক্তন বনভূমি কর্মাধ্যক্ষর ছেলে-সহ প্রায় ৬,০০০ তৃণমূল কর্মী ও সমর্থক। তারপর ক'দিন কাটতে না-কাটতেই হরিহরপাড়ায় পঞ্চায়েত সমিতির এক সদস্য-সহ ৫০টি পরিবার তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেয়।
শুক্রবার মালদার রতুয়ায় তৃণমূল নেতা প্রদীপ সাহা, রতুয়া ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য টিপু সুলতান, বাহারাল গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪ জন সদস্য ও দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১ জন সদস্য তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে ফেরেন। তাঁদের সঙ্গে কংগ্রেসে ফেরেন কয়েকশো নেতা-কর্মী। তার রেশ কাটতে না-কাটতেই এবার কেষ্টহীন বীরভূমে তৃণমূলকে ভাঙল কংগ্রেস। যে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি উপনির্বাচনে সম্প্রতি বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী জয়ী হয়েছেন, সেই সাগরদিঘি সীমান্তেই বীরভূম তৃণমূলে ভাঙন ধরল।
বীরভূমের নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের শীতলগ্রামে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিলেন পঞ্চায়েত সদস্য। তাঁর হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিলেন বীরভূম জেলা কংগ্রেস সভাপতি মিল্টন রশিদ। যোগদানকারী তাইজুদ্দিন মণ্ডল ওরফে মধু দীর্ঘদিন ধরেই কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি দু'বার কংগ্রেসের টিকিট পেয়ে শীতলগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানও হন। ২০১৪ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল যোগদান করেছিলেন। অভিযোগ উঠেছে, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ওই ব্লকে বিরোধীদের মনোনয়ন জমা করতে দেয়নি তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। ফলে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থীরা।
আরও পড়ুন- বর্ধমানে চাঞ্চল্য, বিজেপির যুব নেতাকে ছুরিকাঘাত, তৃণমূলের নিশানায় পদ্মের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকলেও গত পাঁচ বছরে এলাকার কোনও উন্নয়ন হয়নি। সেই কারণে সাধারণ বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ জন্মেছে। সেসব দেখেই নিজের পুরনো ফলে ফিরলেন তাইজুদ্দিন মণ্ডল। তিনি বলেন, 'গত নির্বাচনে আমরা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছিলাম। ভোট করতে দেওয়া হয়নি। পঞ্চায়েতে জিতে এসে কোনও কাজ করতে পারিনি। সেই আক্ষেপে পুরনো দল কংগ্রেসে ফিরলাম।' বীরভূম জেলা কংগ্রেস সভাপতি মিল্টন রশিদ বলেন, 'মধু আমাদের সঙ্গেই ছিল। এদিন তৃণমূলের বহু কর্মী নিয়ে তিনি আমাদের দলে ফিরে এলেন। আমরা অধীর চৌধুরীর অনুমতি নিয়ে তাঁদের দলে গ্রহণ করলাম।'