বঙ্গ বিজেপিতে নারদ নারদ! প্রকাশ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি দুই তারকার। কদিন আগে রাজ্যের দুই গায়ক মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন ও বাবুল সুপ্রিয়র বাকবিতণ্ডা প্রকাশ্যে এসেছিল। এবার গেরুয়া শিবিরেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। এক আরেকজনকে দাগিয়ে দিলেন চোর বলে। পাল্টা তাঁকে চিটফান্ডের নামে বিঁধলেন অন্যজন।
এই দুই সেয়ানে-সেয়ানে হলেন হিরণ চট্টোপাধ্যায় এবং রুদ্রনীল ঘোষ। দুজনেই অভিনেতা, টলিউডের জনপ্রিয় মুখ। হিরণ বর্তমানে খড়গপুর সদরের বিধায়ক। দুজনেরই বঙ্গ বিজেপিতে যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। রুদ্রনীল তো খোদ অমিত শাহের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দেন। কিন্তু এবার দুই তারকা-নেতার মধ্যেই এবার দ্বন্দ্ব। রুদ্রনীল 'চোরেদের সঙ্গে যুক্ত' বলে মন্তব্য করলেন হিরণ। অন্য দিকে, তার পাল্টা চিটফান্ড সংস্থার মালিকের সঙ্গে হিরণের সংযোগ তুলে ধরলেন রুদ্রনীল।
একসময়ে দুজনেই তৃণমূলে ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর পরম আস্থাভাজন থেকে এখন বিরাগভাজন হয়েছেন। বিজেপিতে যোগ দেন একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে। হিরণ বিধানসভায় জয়ী হলেও হেরে যান রুদ্রনীল। রুদ্রনীলের প্রতি আক্রমণ শানিয়ে হিরণ বলেন, "রুদ্রনীলের তো পরের পর সিনেমা আসছে। তিনি যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন, তাঁরা ওঁকে নিশ্চয়ই এখন সিনেমায় সুযোগ দিচ্ছেন। উনি চোরেদের সঙ্গে কাজ করছেন। ওঁকে সংসার চালাতে হবে একজন অভিনেতা হিসেবে। উনি প্রত্যক্ষ ভাবে নয়, পরোক্ষ ভাবেই চোরেদের সঙ্গে যুক্ত।"
আরও পড়ুন মমতার একুশের সভাস্থলেই এবার অমিত শাহ? হাইকোর্টের অনুমতিতে শোরগোল
তিনি আরও বলেছেন, "রুদ্রনীল তো অনেক ছবি করছেন এই মুহূর্তে। শ্রীকান্ত মোহতার ছবিতে উনি কাজ করছেন বা অন্য যাঁদের ছবিতে কাজ করছেন, তাঁরা তো আসলে চোর!" এর পাল্টা হিরণকে বিঁধেছেন রুদ্রনীল। হিরণের সঙ্গে চিটফান্ড সংস্থার মালিকের সম্পর্কের কথা বলেছেন তিনি। রুদ্রনীলের বক্তব্য, "হিরণবাবু এর আগে একটি ছবি করেছিলেন, 'মাচো মস্তানা' বলে শুনেছিলাম আমরা। ২০১২-'১৩ হবে বোধহয়। রিমেক ফিল্মসের। পরে জানা যায়, রিমেক চিটফান্ডের যিনি মালিক, সেই পি পি তিওয়ারি ২০১২-'১৩ সালে প্রায় ৬-৭ কোটি টাকা দিয়েছিলেন।"
হিরণ শ্রীকান্ত মোহতার নাম টেনে আনায় কেন্দ্রের কোর্টে বল ঠেলে দেন রুদ্রনীল। তিনি বলেন, "শ্রীকান্ত মোহতা কোনও একটি আইনি জটিলতায় জড়িয়েছিলেন। উনি যদি চোর হন, ওঁর চ্য়ানেল রয়েছে, প্রযোজনা সংস্থা রয়েছে, যা কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন। তাহলে কেন্দ্রীয় সরকার সেগুলি বন্ধ করছে না কেন?" দুই তারকার এই ঝগড়ায় অস্বস্তিতে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ এই প্রসঙ্গে বলেছেন, 'কোথায় কী ঘটেছে জানি না! আমরা স্লোগান দিচ্ছি চোর ধরো জেল ভরো।' এবার দেখা যাক, দলীয় নেতৃত্ব এঁদের বিতণ্ডায় হস্তক্ষেপ করে কি না।