Kali Puja 2021: দীপান্বিতা অমাবস্যায় ধুমধাম করে রাজ্যে চলছে মা কালী আরাধনা। উত্তর থেকে দক্ষিণ, গোটা রাজ্যই সেজে উঠেছে আলোর মালায়। অশুভ শক্তির বিনাশে, শুভ শক্তির উদয় হোক। এই প্রার্থনা রাজ্যব্যাপী। এই আবহে রাজ্যবাসীকে কালী পুজোর শুভেচ্ছা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি ট্যুইট করে লেখেন, ‘কালী পুজার শুভ লগ্নে সকলকে উষ্ণ শুভেচ্ছা। শক্তি, সামর্থ্য এবং জ্ঞান দিয়ে মা কালী আপনাদের এবং পরিবারকে ভরিয়ে তুলুক।‘
একইভাবে রাজ্যবাসীকে কালী পুজার শুভেচ্ছা জানিয়ে ট্যুইট করেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন বেলার দিকে তিনি পরিবার-সহ কালীঘাট মন্দির গিয়েছিলেন। তার আগে ট্যুইট বার্তায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক লেখেন, ‘মা কালী সকলকে ন্যায়ের জন্য লড়াইয়ে প্রচুর শক্তি দিক। জীবন থেকে সব কালিমা দূর হোক। প্রত্যেককে কালী পুজার শুভেচ্ছা।‘
এদিকে, এদিকে, প্রতিবারের মতো এবারেও নিজের বাড়িতে পুজো আয়োজন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজে বসে থেকে সেরেছেন পুজো প্রস্তুতি। প্রতিবার থাকে সেই পুজোয় ভোগ খাওয়ার ব্যবস্থা। এবার করোনা কারণে আয়োজন ছোট হলেও, ধুমধাম করেও পুজো উদযাপনে মুখ্যমন্ত্রী।
রাজ্যব্যাপী সর্বজনীন পুজোর সঙ্গেও ধুমধাম করে আয়োজিত হচ্ছে বাড়ির পুজো। একই অঙ্গে ভিন্ন রূপে, কালী নামেই আছে মোক্ষ। তা সে যেমনই হোক। শহর থেকে গ্রাম নানান জায়গায় রয়েছে মায়ের মহিমার অপার কাহিনী। শুধু বিখ্যাত কিছু মন্দির নয়, বেশ কিছু বাড়ির পুজোতে কিন্তু এমন বেশ কিছু ইতিহাসের ঝলক মেলে। ঠিক এরকমই একটি বাড়ি কলেজ স্ট্রিটের ভোলানাথ চাটুজ্জের চট্টোপাধ্যায় বাড়ি।
মায়ের বিগ্রহের মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু অভিনবত্ব। এরকম ভাবের নিদর্শন সহজে মেলে না। টানা চোখ, ছোট্ট মাতৃ মূর্তি, সঙ্গে জোরালো চালার আবহ, তিনি সত্যিই মৃন্ময়ী। তবে বৈশিষ্ট রয়েছে দেবীর চার হস্তের মধ্যেই। এক হাতে খড়গ সঙ্গেই মুণ্ডমালা, অন্যহাতে ত্রিশূল ন্যায় বর্শা, আরেক হাত আশীর্বাদ স্বরূপ, অন্যটি রয়েছে মুখের কাছে। এই প্রসঙ্গেই পরিবারের সদস্য সৌরভ চট্টোপাধ্যায় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, “এই হাত নির্দেশ করে অসুর নিধনের পর রক্ত পানের বৈশিষ্ট্যকে। পদ্মের আসনে দেবী মহাদেবের উপর পঞ্চমুণ্ডের আসনে অধিষ্ঠিতা। দুই সঙ্গিনীও রয়েছেন পাশে।”
ইতিহাস প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, “এটি বাড়ির প্রতিষ্ঠিত কালী মূর্তি। যথারীতি মায়ের বিসর্জন হয় না, শুধুই ঘট ভাসান দেওয়া হয়। নিত্যপুজো দিব্য চলে।” ইতিহাস বলছে, বাড়ির এবং এলাকার পরিচিত মুখ শ্রী ভোলানাথ চট্টোপাধ্যায় এই মাতৃমুর্তির প্রতিষ্ঠাতা। তিনি স্বয়ং রাজ তিলক নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তন্ত্রসাধনা এবং শক্তির আরাধনায় ছিল গভীর সংযোগ। বছর দশেক তার হদিশ ছিল না। বাড়ি থেকেই উধাও হয়েছিলেন। ফিরে আসেন বাঁশের উপর মায়ের মুখ নির্মিত কাঠামো নিয়ে। এসেই কারওর সঙ্গে কোনও কথা না বলে, প্রায় এক সপ্তাহ মতো সময় ব্যয় করেই নিজে হাতে সাজিয়ে তোলেন মা-কে। মনের ইচ্ছে অনুযায়ী, তাঁর প্রাণপ্রতিষ্ঠা করে আদিশক্তির আরাধনা শুরু করেন। যদিও পরবর্তীতে অষ্টধাতুর কালীমূর্তি স্থাপন করে বর্তমানে পুজো করা হয়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন