বাংলায় ক্রমশ করোনার প্রকোপ বাড়ছে। কিন্তু দৈনিক সংক্রমণ বৃদ্ধির নিরিখে হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা তেমনভাবে বাড়ানো হয়নি। আর এটাই ভাবাচ্ছে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২০ জুন তারিখে, বাংলায় কোভিড পজিটিভের সংখ্যা ছিল ৪৪১। সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন ৫৬২ জন। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে কোভিড শয্যার সংখ্যা ছিল ১০,৩৪০। এর ঠিক এক মাস পরে ২০ জুলাই রাজ্যে পজিটিভের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২,২৮২ ও সুস্থতার সংখ্যা ১,৫৩৫ জন। কিন্তু মোট শয্যা সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১১,২৩৯। করোনা পজিটিভ ও সুস্থ হওয়ার সংখ্যার ব্যবধান দৈনিক ৭০০ হলেও গত একমাসে রাজ্য সরকার মাত্র ৮৯৯ শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পেরেছে।
হাসপাতালগুলোর চাপ কমাতে ইতিমধ্যেই মৃদু ও উপসর্গহীন আক্রান্তদের বাড়িতে থেকেই চিকিৎসার অনুমতি দিয়েছে রাজ্য সরকার। এমনকী হাসপাতালে ভর্তি রোগীদেরও শারীরির অবস্থার উন্নতি হলেও সাত দিনেই তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এতে শয্যা জন্য চাপ কতটা মিটবে তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ কুণাল সরকার দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন যে, ''স্বাস্থ্য পরিষেবার ৮০ শতাংশই বর্তমানে কোভিডের জন্য সুরক্ষিত করা প্রয়োজন। সংক্রমণ বৃদ্ধি রোখা না গেলে হাসপাতালের শয্যা সংখ্য়া অনেকটাই বাড়াতে হবে। এটাই সময়ের চাহিদা'
সংক্রমণ রোধে ইতিমধ্যেই মমতা সরকার সপ্তাহিক দু'দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছে। কিন্তু, এই পদক্ষেপ কতটা কার্যকরী হবে? জবাবে ডাঃ সরকার বলেছেন, 'এতে সংক্রমণ কিছুটা ঠেকানো গেলেও নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা নৈদিন ২৫ হাজার করে করতে হবে। বিশেষ করে যেখানে সংক্রমণ বৃদ্ধির হার খুব বেশি।'
জুলাই মাসের ৪ তারিখ যেখানে সুস্থতার হার ৬৬.৭২ শতাংশ ছিল, সেখানে গত কয়েকদিনে কমতে কমতে তা দাঁড়িয়েছে ৫৯.০১ শতাংশে। তবে, মার্চ, এপ্রিল, মে, জুনের তুলায় জুলাই মাসের প্রথম ২১ দিনে সুস্থ্ হওয়া রোগীর সংখ্যা অনেকটাই বেশি। এ মাসে সুস্থ্য হওয়ার সংখ্যা ৫৫.৮৬ শতাংশ।
তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডাঃ শান্তনু সেনের কথায়, ''প্রথমত, মানুষকে সতর্ক হয়ে সংক্রমণ মোকাবিলায় রাজ্য সরকারকে সহায়তা করতে হবে। দ্বিতীয়ত, সংক্রমণ বৃদ্ধি রুখে চিকুৎসার জন্য শয্যার উপর চাপ কমাতে লকডাউন জারি হয়েছে।
সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ অমিতাভ নন্দী জানিয়েছেন, চিকিৎসা পরিষেবার চাপ কমাতে রাজ্য সরকার ত্রিস্তরীয় পদক্ষেপ করুক। যেমন, 'প্রথম ও দ্বিতীয় স্তরের রোগীদের চিকিৎসা বাড়িতেই হবে। তৃতীয় পর্যাভুক্ত রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করা হোক। এছাড়াও সরকারের তরফে প্রকৃত শয্যা সংখ্যা স্পষ্টভাবে জানানো হোক। করোনার জন্য বৈজ্ঞানিক গবেষণাকে উৎসাহিত করুক রাজ্য সরকার।'
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন