নমুনা পরীক্ষা ২৫,৫৬২। আর, বৃহস্পতিবার নতুন করে করোনা সংক্রমিত ১৩৯। এই বিস্তর ফারাকটাই দেখিয়ে দিচ্ছে, বর্তমানে ঠিক কী অবস্থায় আছে বাংলার করোনা পরিস্থিতি। ফারাকটা যদি নমুনা পরীক্ষা আর সংক্রমিতর হিসেবের চোখে না দেখে, একটু অন্যভাবে দেখা যায়, তাহলেও কিন্তু পরিস্থিতিটা একচুলও বদলাবে না। বৃহস্পতিবার বাংলায় করোনা থেকে মুক্তি পেয়েছেন ১৫৮ জন। অর্থাত্, করোনা থেকে যাঁরা সেরে উঠেছেন, তাঁদের চেয়ে সংক্রমিতর সংখ্যাটা কম। নতুন করে কারও মৃত্যুও হয়নি।
শুধু বৃহস্পতিবারই না। বুধবারও ছবিটা ছিল একইরকম। বুধবার করোনার ২২,২২৬টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল। তার মধ্যে নতুন করে সংক্রমিতর সংখ্যা ছিল ১৫৩। করোনামুক্ত হয়েছিলেন ১৬৬ জন। কারও মৃত্যু হয়নি। এটা শুধু এক বা দু'দিন না। আসলে, এটাই এখন বাংলার করোনার প্রকৃত ছবি। বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যেই বলে দিয়েছেন করোনার নতুন স্ট্রেনের সংক্রমণ ফের ছড়াতে পারে। তাই নিয়ে আশঙ্কাও আছে। কিন্তু, একইসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা একথাও জানিয়েছেন, নতুন স্ট্রেনের সংক্রমণ ছড়ালেও তা অতটা ক্ষতিকারক হবে না।
তাই বলে, করোনাবিধি ভাঙা বা করোনাবিধি মানার ব্যাপারে গা ঢিলে দেওয়া উচিত নয়। মাস্ক থেকে দূরত্ববিধি বা স্যানিটাইজারের ব্যবহার আগের মতোই করা জরুরি। একথা পইপই করে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। তাঁরা মনে করিয়ে দিয়েছেন, করোনার কোনও প্রতিষেধক এখনও পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি। বিজ্ঞানীদের হাতে যেটুকু আছে, সেই টিকা দিয়ে স্রেফ ইমিউনিটি বা সংক্রমণের বিরুদ্ধে শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ানো যায়। তার বেশি কিছু নয়।
একইসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, করোনা বারবার রূপ বদলাচ্ছে। এই ভাইরাসের সম্পর্কে অনেক কিছুই অজানা। গবেষণা চলছে। কিন্তু, সেই গবেষণা এখনও শেষ হয়নি। সেই কারণে সতর্কতা অত্যন্ত জরুরি। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে হার্ড ইমিউনিটি গড়ে উঠেছে। যার ফলে, নতুন করে ঢেউ না-এলে, সংক্রমিতর সংখ্যা বৃদ্ধি না-পাওয়ারই কথা। নতুন স্ট্রেন না-আসা পর্যন্ত এখন গোটা বিশ্বেই করোনার গ্রাফ তাই নিম্নমুখী থাকবে বলেই বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। আলাদা কিছু না। এরাজ্যেও দেখা যাচ্ছে সেই ছবিই।