বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে মোট ২ লক্ষ ৮৪ হাজার কোটি টাকার লগ্নির প্রস্তাব পেল রাজ্য। এই প্রস্তাব কার্যকরী হলে এই রাজ্যে ৮-১০ লক্ষ কর্মসংস্থান হবে। বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের দ্বিতীয় তথা শেষ দিনে এমনটাই জানালেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান দাবি করেছেন, নোটবন্দি ও জিএসটির কারণে দেশে ২ কোটি মানুষ কাজ হারালেও, এই রাজ্যে গত বছর ৪০ শতাংশ বেকারত্ব সমস্যা দূর হয়েছে।
এবার বিশ্ববঙ্গ বানিজ্য সম্মেলন মোট ৩৬টি দেশ থেকে ৪ হাজার প্রতিনিধি হাজির হয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন শিল্পপতি, রাষ্ট্রদূত, মন্ত্রীরাও। শুক্রবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এবার বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে ২ লক্ষ ৮৪ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাব এসেছে। যা থেকে ৮-১০ লক্ষ কর্মসংস্থান হতে পারে।’’ এবার বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে ৮৬টি মউ স্বাক্ষর হয়েছে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন- ভারত শাসনের ইঙ্গিত! কথা দিলাম, সরকার বদলালে নয়া পলিসি আনব: মমতা
বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে মমতা এদিন বলেন, ‘‘বাংলা বিনিয়োগের সেরা ঠিকানা। আমরা কোনও বনধকে সমর্থন করি না। কর্মদিবস নষ্ট হয় না। কর্মীরা আমাদের সম্পদ। আমাদের প্রতিভা রয়েছে। আগামী দিনে আরও কর্মসংস্থান করা হবে।’’ বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনেও নাম না করে মোদী সরকারকে বিঁধলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কর্মসংস্থান নিয়ে কথা বলতে গিয়ে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘নোট বাতিল ও জিএসটি-র পর এক বছরে দেশে ২ কোটি কর্মী কাজ হারিয়েছেন। অথচ আমাদের এখানে ৪০ শতাংশ বেকারত্ব সমস্যা দূর করেছি।’’
সম্মলনে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে জিন্দাল গ্রুপের সজ্জন জিন্দাল, রিলায়েন্স কর্ণধার মুকেশ আম্বানি এবং ওয়াই কো মোদীর কাছ থেকে। একঝলকে দেখে নেওয়া যাক কে কত বিনিয়োগ করতে চাইছেন বাংলায়।
আরও পড়ুন- শিলংয়ে রাজীব কুমার, সিজিও-তে ‘করণবাবু’
*সজ্জন জিন্দাল- ১১ হাজার কোটি।
*মুকেশ আম্বানি- ১০ হাজার কোটি।
*ওয়াই কে মোদী- ১৫ হাজার কোটি।
*নিরঞ্জন নন্দানি- ৫ হাজার কোটি।
*সঞ্জীব পুরি- ১.৭ কোটি।
*রাজন ভারতী- ৫ কোটি।
*ময়াঙ্ক জালান- ৩ কোটি।
সংস্থা সূত্রে খবর, পশ্চিমবঙ্গে ডিজিটাল ক্ষেত্রে আরও লগ্নি করবে আম্বানিরা। অন্যদিকে শিল্পপতি সঞ্জীব গোয়েঙ্কার বক্তব্য, গত ৩ বছরে ২৩ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে তাঁর সংস্থা।
রাজ্যে শিল্প পরিবেশ নিয়ে সম্মলনে শিল্পপতিদের এবারও আশ্বস্ত করেছেন মমতা। তাঁর বক্তব্য, এখানে বনধ বন্ধ বয়েছে, দক্ষ শ্রমিক আছে, জমির জন্য সরকারের ল্যান্ড ব্যাঙ্ক আছে, প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের যোগানও বেশ ভাল। এককথায় এই রাজ্যে শিল্প স্থাপনের জন্য আদর্শ পরিবেশ রয়েছে বলে দাবি তাঁর।
সিলিকন ভ্যালি প্রসঙ্গে শিল্পপতিদের মধ্যে আগ্রহ বাড়ছে বলে সম্মলেন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, প্রথম পর্যায়ে ১০০ একর জমির ওপর এই হাব তৈরি হয়েছে। সেখানে রয়েছে জিও, টিসিএস-সহ অন্যান্য সংস্থা। দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ১০০ একর জমি বরাদ্দ করা হয়েছে সিলিকন ভ্যালির জন্য। সেখানে থাকবে কগনিজেন্ট, আইএসআই, টেক মহিন্দ্রা-সহ একাধিক সংস্থা।