Jagdeep Dhankar: বঙ্গের শীতে উষ্ণতা বাড়াচ্ছে মমতা সরকার বনাম রাজ্যপাল সংঘাত। শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন, রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অন্তর্বর্তী আচার্য হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়োগের কথা ভাবছে শিক্ষা দফতর। অসহযোগিতা করছেন আচার্য তথা রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। সেই ঘোষণার একদিনের মধ্যেই সরব হলেন রাজ্যপাল। এদিন বাগডোগরা বিমানবন্দরে সুর চড়িয়ে সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘আমার অনুমতি ছাড়া যত উপাচার্য নিয়োগ হয়েছে, সব খতিয়ে দেখব। নয়তো পদক্ষেপ করব। আমার সঙ্গে আলোচনা না করেই শিক্ষামন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করবেন বলে দিলেন! আচার্য কেন মুখ্যমন্ত্রীকে রাজ্যপাল করে দিন, তাহলে হয়তো শান্তি পাবেন। এই আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়।‘
যদিও, রাজ্যপালের এই হুঁশিয়ারিতে মুখ খুলেছেন তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, ‘রাজ্যপাল পদের অমর্যাদা করছেন। উনি এক্তিয়ার বহির্ভূত কাজ করছেন।‘ সরব হয়েছিলেন তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়। তাঁর পাল্টা, ‘রাজ্যপালকে মুখ্যমন্ত্রী করে দিলে হয়তো উনি খুশি হবেন।‘
এদিকে, রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদ থেকে রাজ্যপালকে সরাতে ভাবনাচিন্তা করছে শিক্ষা দফতর। শুক্রবার সংবাদমাধ্যমকে একথা জানান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাঁর অভিযোগ, ‘আচার্য পদে বসে দীর্ঘদিন ফাইল আটকে রেখে অসহযোগিতা চালান রাজ্যপাল। নানাভাবে শিক্ষাক্ষেত্রে বাধা তৈরি করছেন। এখন ইউজিসিকে দেখিয়ে হুমকি দিচ্ছেন রাজ্যপাল।‘ শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্য, ‘এই ভাবনা বাস্তবায়িত করতে সাংবিধানিক এবং আইনি পথ খতিয়ে দেখা হবে। নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আচার্য পদ থেকে রাজ্যপালকে আচার্য পদ থেকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে অন্তর্বর্তীকালীন আচার্য পদে বসানো যায় কিনা। খতিয়ে দেখা হবে।‘
রীতিমতো রাজ্যপালকে তোপ দেগে শিক্ষামন্ত্রীর কটাক্ষ, ‘উনাকে একটা সহযোগিতার জায়গায় আসতে হবে। উনি শিক্ষার সঙ্গে জড়িত কাজ না করে শুধু সামাজিক মাধ্যমে ঘোরাফেরা করেন নিজের পদমর্যাদা ভুলে যাচ্ছেন উনি। অতীতে কোনও রাজ্যপালের সঙ্গে এমনটা হয়নি।‘ এদিকে, রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে তুঙ্গে উঠলো নবান্ন বনাম রাজ ভবন সংঘাত। উচ্চশিক্ষার হালহকিকত জানতে চলতি সপ্তাহে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য-উপাচার্যদের ডেকেছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সেই ডাকে সাড়া দেয়নি। এতেই চটেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। শুক্রবারই রীতিমতো ট্যুইট করে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে ক্ষোভ উগড়ে দেন তিনি। রাজ্যের শিক্ষাব্যাবস্থার কঙ্কালসাড় দশার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকেই দায়ী করেন তিনি।
ট্যুইটে তিনি লেখেন, ‘রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা উদ্বেগজনক। কারণ রাজ্যপালের ডাকা বৈঠকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও আচার্য-উপাচার্য উপস্থিত হয়নি। শিক্ষাব্যবস্থায় দলবাজি দেখে আমি স্তম্ভিত।‘ তিনি আরও লিখেছেন, ‘রাজ্যে আইনের নয় শাসকের শাসন চলছে। রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় নিজেরদের লোক নিয়োগ করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বিষয়টা তদন্ত করে দেখুক। রাজ্যের হাতে শিক্ষাব্যবস্থা ছেড়ে দিলে চলবে না।‘
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন