Bengal Global Business Summit: এক বছর বিরতির পর আগামি বছর অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। ইতিমধ্যে বাংলায় বিনিয়োগের ভাণ্ডার টানতে সক্রিয় হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বাণিজ্য সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রী এবং রাজ্যপালকে। কিন্তু এই বাণিজ্য সম্মেলনের সূচি ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই নবান্ন বনাম রাজ ভবন সংঘাত তুঙ্গে। ইতিমধ্যে রাজ্যপাল অমিত মিত্রর থেকে গত ৪ বছর বাণিজ্য সম্মেলনের খতিয়ান চেয়ে পাঠিয়েছেন। এবার বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনর সাফল্য নিয়ে শ্বেতপত্র চাইলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়।
বৃহস্পতিবার ট্যুইট করে তিনি লেখেন, ‘রাজ্য সরকার দাবি করেছে গত ৫ বছরে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন ব্যাপক সাফল্যের মুখ দেখেছে। তাই মুখ্যমন্ত্রী গত ৫ বছরের বাণিজ্য সম্মেলন নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করুক। দাবির সঙ্গে বাস্তব কতটা দূরে জানাক রাজ্য।‘ এদিকে, দু’বছর বন্ধ থাকার পর আগামী বছর এ রাজ্যে ২০-২১ এপ্রিল বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের আসর বসতে চলেছে। আর সেই সম্মেলনের উদ্বোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আমন্ত্রণ জানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন বলে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। উন্নয়নের কেন্দ্র-রাজ্যের একযোগে কাজের বার্তা শিল্পপতিদের সামনে তুলে ধরতেই এই উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন মমতা।
এদিন বিকেলে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে তাঁদের মধ্যে রাজ্যে বিএসএফের এক্তিয়ার বৃদ্ধি, পাট শিল্পের উন্নতি, কোভিড টিকা সহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়। ওই বৈঠকেই প্রধানমন্ত্রীকে আগামী শিল্প সম্মেলনে উদ্বোধনে জন্য আমন্ত্রণ জানান মুখ্যমন্ত্রী।
বৈঠক শেষ সাংবাদিকদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কেন্দ্র-রাজ্য দুটি দল চালায়। আমাদের মধ্যে রাজনৈতিকভাবে মতাদর্শগত ফারাক থাকবেই। কিন্তু, এর প্রভাব কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সম্পর্কের উপর পড়া উছিত নয়। এটাই কাম্যও নয়। রাজ্যগুলির উন্নয়ন হলেই কেন্দ্রের উন্নতি সম্ভব। তাই ২০-২১ এপ্রিল কলকাতায় বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের আসর উদ্বোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আমি আমন্ত্রণ জানিয়েছি।’ এই আমন্ত্রণ ঘিরে নানা ইতিমধ্যেই নানা চর্চা শুরু হয়েছে। কিন্তু, শুধুই কী সৌজন্যের খাতিরে মোদীকে আমন্ত্রণ জানালেন মমতা? নাকি এর পিছনে রয়েছে অন্য কোনও কারণ? সাংবাদিক বৈঠকেই তা কোলসা করেছেন স্বরং মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘কোভিডের পর শিল্পের পরিস্থিতি ভালো নয়। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করলে, কেন্দ্র-রাজ্যের সব বিভাগ একযোগে সম্মেলনে অংশগ্রহণ করলে শিল্পপতিদের কাছে ভালো বার্তা যাবে। শুধু বাংলার জন্যই নয়, প্রয়োজনে অন্য রাজ্যগুলিও এতে অংশ নিতে পারে। এতে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে।’
পশ্চিমবঙ্গে শিল্পের খরা কাটাতে এবং বেশি পরিমাণে বিদেশি লগ্নির আশায় এর আগে বিভেদ বিতর্ক ভুলে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের পদমর্যাদাকে সম্মান জানিয়ে আসন্ন শিল্প সম্মেলনে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিদেশে গিয়ে বাংলার শিল্পের হয়ে সওয়ালের অনুরোধও করা হয়েছে। পরে অবশ্য গত বেশ কয়েকটি বাণিজ্য সম্মেলনের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রাজ্যপাল। যা ঘিরে রাজভবন-নবান্ন দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন