করোনা আক্রান্ত বাংলার পরিস্থিতি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করে সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছে জানতে পাঠানো চিঠির উত্তরে হতবাক রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। উত্তরবঙ্গে বিজেপি নেতাদের ত্রাণ সামগ্রী বিলি ঘিরে পুলিশি আটকের যে অভিযোগ সামনে এসেছে রাজ্যে তার ভিত্তিতে এবার রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহার কাছে ঘটনার প্রতিক্রিয়া চেয়ে পাঠিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেই প্রেক্ষিতে রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব (স্বরাষ্ট্র) আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরে রবিবার ফের টুইটে সরব হলেন জগদীপ ধনকড়।
করোনা পরিস্থিতিতে ত্রাণ সামগ্রী বিলিকে কেন্দ্র করে গৃহবন্দি করা হয়েছে বিজেপি সাংসদদের, এই অভিযোগের উত্তরে রাজ্যপালকে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রাজ্যে যে 'স্ট্যান্ডার্ড প্রোটোকল' রয়েছে সেই মোতাবেকই কাজ করা হয়েছে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং পুলিশ সুপাররা সেই আইন মেনেই কাজ করছেন।
যদিও অতিরিক্ত মুখ্যসচিব (স্বরাষ্ট্র)-এর এই উত্তর একেবারেই না-পসন্দ রাজ্যপালের। রবিবারই টুইটে তিনি এর উত্তর দিয়ে লেখেন, "হায় ভগবান, এ কোন দিকে যাচ্ছি আমরা? সাংসদদের সঙ্গে যা হয়েছে সেই ইস্যুতে স্বরাষ্ট্রসচিবের এ কী ধরনের প্রতিক্রিয়া? "। তবে এখানেই থেমে থাকেননি রাজ্যপাল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ট্যাগ করে টুইটে লেখেন, "এ কেমন পরিস্থিতি! যখন একজন মানুষ হাজার হাজার মানুষকে সাহায্য করছে, তখন অন্যরা কেউ বেরোতেই পারবে না? এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ইস্যু হয়ে দাঁড়াচ্ছে।"
প্রসঙ্গত, রাজ্যে পুলিশের এ ধরণের পদক্ষেপকে “অবৈধ দমনমূলক শাসন” বলেও উল্লেখ করেছেন রাজ্যপাল ধনকড়। প্রসঙ্গত, করোনা আবহে এলাকায় ত্রাণ বিলিকে কেন্দ্র করে ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংকে বৃহস্পতিবার তার নির্বাচনী এলাকার আমডাঙায় ঢুকতে বাধা দেয় পুলিশ, এমনটাই অভিযোগ করা হয়েছিল পদ্ম শিবিরের তরফে। অন্যদিকে আলিপুরদুয়ার সাংসদ জন বার্লা এবং জলপাইগুড়ির সংসদ সদস্য জয়ন্ত কুমার রায়কে বুধবার আটকানো হয় এবং তাঁদের গৃহবন্দী করা হয়েছে বলে দাবি করেছে গেরুয়া শিবির। এছাড়া রাজ্য করোনায় মারা গিয়েছে দু’জন এমন ভুয়ো খবর ছড়ানোর অভিযোগে বিজেপির বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকারের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করেছে রাজ্য সরকার।বৃহস্পতিবার তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এই সব ঘটনার পরই রাজভবনের তরফে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, যেখানে রাজ্যপালকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, “সংবাদপত্রের প্রতিবেদন আমাকে ভাবিয়ে তুলেছে। এছাড়াও সাংসদরাও আমাকে জানিয়েছেন। জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে বর্তমান পরিস্থিতি লাঘবে তাঁরা তাঁদের এলাকায় গিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ এবং প্রশাসন যেভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেপ্রণোদিতভাবে কাজ করছেন তা সঠিক নয়।” এমনকী এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে রাজ্যের ক্ষমতাসীন তৃণমূল সরকারের ভূমিকা রয়েছে এমন মন্তব্যও করেন রাজ্যপাল ধনকড়।
জগদীপ ধনকড় এও বলেন, “ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে যেসব পুলিশ এই কাজ করেছে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানাচ্ছি।” রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ধনকড় বলেন, “আমি দেখেছি এ রাজ্যের পুলিশ প্রচন্ডভাবেই রাজনীতির দ্বারা ঘিরে থাকে।”
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন