ভোটমুখী বাংলায় শিক্ষক-চিকিৎসক নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়াল তৃণমূলের এক চিকিৎসক বিধায়কে তথা মন্ত্রীর। স্বজনপোষণের অভিযোগে বিদ্ধ রাজ্যের শ্রম প্রতিমন্ত্রী নির্মল মাজি। এর আগে এসএসকেএম হাসপাতালে কুকুরের ডায়লিসিস-কাণ্ডে নাম জড়িয়েছিল তৃণমূলের এই চিকিৎসক নেতার। ১৫ ফেব্রুয়ারি শিক্ষক-চিকিৎসক নিয়োগে মোট ৬৪৭ জনের তালিকা প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য নিয়োগ বোর্ড। আর সেই তালিকায় এমবিবিএস হিসেবে বাঙ্গুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরোলজিতে আরএমও পদে নাম উঠেছে মাজি পুত্র অমৃতেশ মাজির। কিন্তু তাঁর থেকে উচ্চ ডিগ্রিধারীর নাম নেই সেই তালিকায়। এখানেই শেষ নয়! অভিযোগ, ‘নির্মল মাজির পুত্রবধূ অর্পিতা বাইন রাজ্যের পৃথক মেডিক্যাল কলেজে আলাদা ১৩টি পদে নিয়োগ পেয়েছেন। অথচ তাঁর থেকে বেশি ডিগ্রিধারী অর্থাৎ স্নাতকোত্তর ও পোস্ট ডক্টরাল ডিগ্রিধারীদের নাম নেই তালিকায়।
এমনকি, শাসক দল ঘনিষ্ঠ দুই চিকিৎসককে একসঙ্গে একাধিক পদে নিয়োগ করা হয়েছে। তৃণমূল ঘনিষ্ঠ হাউস স্টাফদেরও নিয়োগেও স্বজন-পোষণের অভিযোগ উঠেছে। এই তালিকায় স্থান হয়নি অনেক এমডি-এমএস চিকিৎসকদের।
এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে স্বাস্থ্য নিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যানকে চিঠি লিখেছে বাম্পন্থী চিকিৎসক সংগঠন অ্যাসোশিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টর।তাঁদের অভিযোগ, ‘এমন নজিরবিহীন দুর্নীতি এর আগে কোনও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় হয়নি। নিয়ম মতে একজন প্রার্থী একটা পদের জন্য আবেদন করতে পারেন। একটার বেশি পদে আবেদন করলে সেই পত্র খারিজ হয়ে যাবে। কিন্তু এই নিয়োগে সেই নিয়ম মানা হয়নি। এর ফলে অনেক যোগ্যতা সম্পন্ন চিকিৎসক নিয়োগ পায়নি। তাঁরা অচিরেই ভিন রাজ্যে চলে যাবেন। যার প্রভাব পড়বে রাজ্যের সার্বিক চিকিৎসা পরিষেবায়।‘ অবিলম্বে এই নিয়োগ বাতিল না হলে বড়সড় আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন ওই চিকিৎসক সংগঠন।
যদিও এই প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি মানতে নারাজ স্বাস্থ্য-নিয়োগ বোর্ড। এই বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রদীপ সুর বলেন, ‘শিক্ষক-চিকিৎসক পদে নিয়োগের জন্য একজন প্রার্থী পৃথক পৃথক পদে আবেদন করতে পারেন। প্রতি পদের জন্য পৃথক ইন্টারভিউ হয়। অনেক পোস্ট-ডক্টরাল ডিগ্রিধারী শেষ মুহূর্তে এনওসি জমা দিতে পারেনি। তাই তাঁদের নিয়োগ বাতিল হয়েছে। বোর্ড শুধু ইন্টারভিউ নিয়ে তালিকা তৈরি করেছে। কাকে, কোথায় নিয়োগ করা হবে সেটা স্বাস্থ্য ভবন দেখবে।‘