সপ্তাহের প্রথম দিনেই এক ধাক্কায় বেশ খানিকটা বেড়ে গেল দেশের দৈনিক সংক্রমণ।
Bengal Covid Daily Update: রাজ্যের দৈনিক কোভিড গ্রাফে ফের বড়সড় জাম্প। একদিনে সংক্রমিত ৩৪৫১ জন, মৃত ৭। আতঙ্ক বাড়িয়ে মৃত এই ৭ জনের মধ্যে ৪ জন কলকাতার বাসিন্দা। বুধবারই রাজ্যের দৈনিক সংক্রমণ চার অঙ্ক ছুঁয়েছে।বৃহস্পতিবার দ্বিগুণ বেড়ে সেই সংখ্যা দুই হাজার পেরিয়েছিল। এবার ৩ হাজারও পার করে গেল বাংলার দৈনিক করোনা সংক্রমণ।
Advertisment
সচেতনতার অভাব। শহরের মাস্ক ছাড়া ঘোরার ছবি শশী ঘোষের ক্যামেরায়।
জানা গিয়েছে, একদিনে সুস্থ হয়েছেন ১৫১০ জন, সুস্থতার হার কমে ৯৮.১৪%। সুস্থতার হার কমার সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সক্রিয় সংক্রমণ এবং সংক্রমণের হার। রাজ্যে এই মুহূর্তে সক্রিয় সংক্রমণ প্রায় দুই হাজার বেড়ে ১০, ৭১০, আক্রান্তের হার ৮.৪৬%। জেলাভিত্তিক সংক্রমণের নিরিখে অনেক এগিয়ে কলকাতা। শহরে গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত ১৯৫৪ জন। যা রাজ্যের মোট দৈনিক সংক্রমণের প্রায় ৫৫%। এরপরেই আছে উত্তর ২৪ পরগনা ৪৯৬, হাওড়া ২৯৮, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ১২৬, হুগলি ১১৮।
ওমিক্রন দেশে প্রভাব বাড়ালেও মৃত্যু হার নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন না চিকিৎসকরা। কারণ অতি সংক্রামক এই প্রজাতি সংক্রমণ হার বাড়ালেও মৃত্যুহারে প্রভাব ফেলবে না। মোটের এমন নিশ্চয়তা তাঁরা প্রথম থেকেই প্রকাশ করে এসেছে। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রক বলছে আর নিশ্চিত থাকা গেল না। ওমিক্রন আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যুর খবর মিলেছে রাজস্থানে। জানা গিয়েছে উদয়পুর জেলার ওই প্রবীণ ব্যক্তি টিকার দুটি ডোজ নিয়েছিলেন। কিন্তু চলতি মাসের ১৫ তারিখ তাঁর করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। তারপরেই তাঁকে চিকিৎসাধীন করা হয়েছিল। ২৫ তারিখ করোনামুক্ত হয়েছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। এই বৃদ্ধের মৃত্যুই ওমিক্রনে দেশে প্রথম প্রাণহানির ঘটনা।
উদয়পুর এক হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্তা বলেছেন, ‘করোনা সংক্রমিত হয়েই সেই ব্যক্তি আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হয়েছিলেন। সেই সময় তাঁর শ্বাসযন্ত্রে সমস্যা ছিল এবং নিউমোনিয়ার উপসর্গ ছিল। ৭ দিনের মধ্যেই তাঁর করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। কিন্তু ২৫ ডিসেম্বর তাঁর জিন বিন্যাসের রিপোর্টে ওমিক্রন ধরা পড়ে। এরপর ২৫ ডিসেম্বর তাঁর আরও একবার নমুনা পরীক্ষা হয়। দ্বিতীয়বারও রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।‘
সেই স্বাস্থ্যকর্তা জানান, নিউমোনিয়া এবং শ্বাসযন্ত্রের সমস্যার জন্য তাঁকে ছেড়ে না দিয়ে আমরা বাইপ্যাপ সাপোর্টে রেখেছিলাম। সতর্কতা অবলম্বনেই এই সিদ্ধান্ত। কিন্তু শুক্রবার সকালেই অক্সিজেন মাত্রা কমে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। সেই হাসপাতালের অন্য চিকিৎসকদের মত, এই মৃত্যুর পরোক্ষ কারণ করোনা সংক্রমণ। সংক্রমিত হয়ে তাঁর নিউমোনিয়া উপসর্গ দেখা যায়। পাশাপাশি সুপ্ত থাকা কোমর্বিডিটি উপসর্গগুলো জেগে ওঠে। তাতেই এই বিপত্তি।
এদিকে, দেশে একদিনে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ল সাড়ে ৩ হাজারেরও বেশি। দেশে নতুন করোনা আক্রান্ত ১৬ হাজার ৭৬৪। বৃহস্পতিবার এই পরিসংখ্যান ছিল ১৩ হাজার ১৫৪। করোনায় ত্রস্ত দেশ। রাজ্যে রাজ্যে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে বিদ্যুৎ গতিতে। করোনার নয়া ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। শুক্রবার পর্যন্ত দেশে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১২৭০।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন