Attacks On Hindus In Bangladesh: বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবাদল, তার জেরে ঘটে চলা হিন্দুদের উপর নারকীয় অত্যাচারের প্রতিবাদে এবার আওয়াজ তুলল বাঙালি অধ্যাপক ও গবেষক সংঘ। সংস্থার পক্ষ থেকে এদিন কলকাতা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক প্রেস মিটে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর ঘটে চলা অত্যাচার ও তার দ্রুত নিরসনে প্রধানমন্ত্রী মোদীর হস্তক্ষেপের দাবি জানানো হয়।
বাংলাদেশর অবস্থা ভয়াবহ। শেখা হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে আসার পর থেকে সে দেশের হিন্দু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মন্দিরে ভাঙচুর চালানো হচ্ছে। এ সংক্রান্ত একাধিক ভিডিও ও মিডিয়া রিপোর্ট সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে। এরপর গতকালই কলকাতায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর ঘটে চলা নির্মম অত্যাচারের বিরুদ্ধে পথে নেমে প্রতিবাদ দেখানো হয় হিন্দু জাগরণ মঞ্চের তরফে। এবার সংখ্যালঘু হিন্দু সমাজের উপর নেমে আসা আক্রমণের প্রতিবাদে সরব হলেন বাঙালি অধ্যাপক ও গবেষক সংঘের সদস্যরা।
বাংলাদেশে গতকালই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসাবে শপথ নিয়েছেন নোবেল জয়ী মহম্মদ ইউনূস। শপথ নেওয়ার আগে তিনি বলেন, তখন আমি সমস্ত সরকারি কর্মকর্তা, নতুন প্রশাসন ও পুলিশ প্রধান এবং বাংলাদেশের জনগণকে দেশজুড়ে যে হিংসা দেখা দিয়েছে তা বন্ধ করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করার জন্য অনুরোধ করছি।
গতকাল মহম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসাবে শপথ নেওয়ার মাত্র তিন দিন আগে ৫ আগস্ট হিংসাত্মক বিক্ষোভের মধ্যে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেন এবং দেশ ত্যাগ করেন। রাষ্ট্রপতি ভবন ‘বঙ্গভবনে’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মহম্মদ শাহাবুদ্দিন মহম্মদ ইউনূসকে শপথবাক্য পাঠ করান। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মহম্মদ ইউনূসকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন পাশাপাশি মোদী তাঁকে” হিন্দু এবং অন্যান্য সমস্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা ” সুনিশ্চিত করারও আহ্বান জানিয়েছেন।
ইউনূস হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বলেন, তাঁর কাজ হল আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। আগের দিন, বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছিলেন, “বাংলাদেশে লাগাতার আক্রমণ এবং সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি সম্পর্কে বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সংসদে বিবৃতি দিয়েছেন। সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ব্যাপারেও আমরা উদ্বিগ্ন। ভারত সব সময় পরিস্থিতি্র উপর নিবিড় নজর রাখছে”।
আরও পড়ুন - < Bangladesh Crisis: মুখে ‘জয় শ্রীরাম’, ‘হাসিনা জিন্দাবাদ’ স্লোগানে ভারতে ঢোকার মরিয়া চেষ্টা বাংলাদেশিদের >
এদিকে আজ বাঙালি অধ্যাপক ও গবেষক সংঘের তরফে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর নির্মম অত্যাচারের কড়া নিন্দা জানানোর পাশাপাশি বুদ্ধিজীবী সমাজের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। সংগঠনের সদস্যদের কথায়, আমরা ইজরায়েল-প্যালেস্তাইনের যুদ্ধে গাজা ভূখণ্ডে ইজরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ দেখাতে পারছি। অথচ আমাদের পড়শি দেশ বাংলাদেশে যেভাবে হিন্দু সমাজ আক্রান্ত হচ্ছেন তার বিরুদ্ধে নেই কোন জোরদার আন্দোলন। এদিন সংগঠনের তরফে আরও বলা হয়েছে শীঘ্রই এবিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য দেশের প্রথম সারির শিক্ষক, অধ্যাপক ও গবেষকদের সাক্ষর সম্বলিত একটি চিঠি প্রধানমন্ত্রী মোদীর হাতে তুলে দেওয়া হবে। যেভাবে বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের সংখ্যা ২৪শতাংশ থেকে মাত্র ৮ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে তাতে এখনই আওয়াজ না তুললে আগামীদিনে বাংলা ভাষা ও বাঙালি জাতির ভবিষ্যত বিপন্ন হতে চলেছে।