বাড়ির নারকেল গাছটিকে বাঁচাতে বারাসতে আড়াই লাখ টাকার লৌহবর্ম!

সবুজ প্রাণকে বাঁচাতে ‘ট্রি আরমার টাওয়ার’ তৈরি করছেন পেশায় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনয়র নির্মাল্য গত্ত। যত্রতত্র গজিয়ে ওঠা মোবাইল টাওয়ারের রেডিয়েশন থেকে গাছকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে এই বর্ম।

সবুজ প্রাণকে বাঁচাতে ‘ট্রি আরমার টাওয়ার’ তৈরি করছেন পেশায় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনয়র নির্মাল্য গত্ত। যত্রতত্র গজিয়ে ওঠা মোবাইল টাওয়ারের রেডিয়েশন থেকে গাছকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে এই বর্ম।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
tree, গাছ

গড়ে উঠছে ‘ট্রি আরমার টাওয়ার’।

বারাসতের শেঠপুকুরে দত্ত বাড়ির উঠোনে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে গাছের খাঁচা বানানোর কাজ। এ খাঁচা যেমন তেমন নয়, আস্ত ৬৪ ফুট উচ্চতার। পুরোটাই লোহা দিয়ে তৈরি। ভাবছেন, গাছের খাঁচা! এ আবার কী! হ্যাঁ, মোটামুটি ঠিকই ধরেছেন, তবে খাঁচা নয় বর্ম। সবুজ প্রাণকে বাঁচাতে ‘ট্রি আরমার টাওয়ার’ তৈরি করছেন পেশায় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনয়র নির্মাল্য দত্ত। যত্রতত্র গজিয়ে ওঠা মোবাইল টাওয়ারের বিকিরণ (রেডিয়েশন) থেকে গাছকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে এ ধরনের বর্ম। এ জন্য তামা, অ্যালনিকো-সহ বেশ কয়েকটি ধাতব পদার্থ দিয়ে তৈরি হবে একটি 'ডিভাইস' যা মোবাইল টাওয়ারের বিকিরণ থেকে গাছকে রক্ষা করবে। জানা যাচ্ছে, এমন অভিনব উদ্যোগ বাস্তাবায়িত করতে খরচ হয়েছে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা।

Advertisment

আরও পড়ুন: জল বাঁচাতে অভিনব প্রকল্প আসানসোলের গ্রামে

tree, গাছ লোহার খাঁচা তৈরির কাজ চলছে।

Advertisment

এ প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে নির্মাল্য দত্ত বলেন, ‘‘বাড়িতে একটা নারকেল গাছ রয়েছে। ওই গাছের জন্যই বানানো হচ্ছে লোহার বর্ম। আমি নাম দিয়েছি 'ট্রি আরমার টাওয়ার'। লোহার খাঁচা মতো জিনিসটিকে গাছের আবরণও বলতে পারেন। এটার উচ্চতা হবে ৬৪ ফুট। পুরোটাই লোহা দিয়ে তৈরি। এই বর্মের উপরের অংশে জিআই নেট থাকছে। এর ফলে গাছের ডালপালাও বাইরে পড়বে না। সব কিছুই থাকবে জালের মধ্যে। এই খাঁচাতে অ্যালনিকোর মতো মিশ্র ধাতু দিয়ে বানানো ডিভাইস বসাব পরে, যা অনেকটাই রেডিয়েশন থেকে গাছকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করবে। আমার বাড়ির ৫০ মিটারের মধ্যে ২টি মোবাইলের টাওয়ার রয়েছে। ফলে এই ডিভাইস লাগালে গাছ অনেকটাই সুরক্ষিত থাকবে’’। তবে শুধু গাছই নয়, এই ডিভাইস লাগালে ওই চত্বরের পাখিরাও বিকিরণের হাত থেকে অনেকটাই রেহাই পাবে, এমনই দাবি করেছেন ওই ইঞ্জিনিয়র।

আরও পড়ুন: হাওড়া শহরে নয়া আইন, বাড়িতে জল জমালেই এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা

তবে শুধু যে বিকিরণ মোকাবিলা করতেই এই বর্ম প্রস্তুত হচ্ছে তা নয়, এই লোহার কাঠামোয় বসানো হবে ‘লাইটিনিং অ্যারেস্টার’ বা বজ্রনিরোধক যন্ত্রও। ফলে এটি বাজ পড়ে ক্ষতির হাত থেকেও গাছকে রক্ষা করবে। নির্মাল্যবাবুর দাবি, ‘‘আজকাল বাজ পড়া যেভাবে বাড়ছে, তাতে এটা লাগালে বজ্রপাতের হাত থেকে আশপাশের এলাকা সুরক্ষিত থাকবে’’।

কীভাবে মাথায় এল এই ভাবনা? জবাবে নির্মাল্য বলেন, ‘‘আসলে, আমার বাড়িতে যে নারকেল গাছটা ছিল, ঝড় হলে তার ডালপালা পাশের বাড়ির উঠোনে পড়ত। এতে ওঁরা বিরক্ত হতেন। গাছ কাটার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। সেখান থেকেই এটা ভাবলাম। খাঁচার মতো থাকলে গাছের ডালপালা আর বাইরেও পড়বে না। আসলে গাছটাকে কাটতে চাইনি, তাই এমন উদ্যোগ’’। তবে ইঞ্জিনিয়রবাবুর বুদ্ধি হলেও এই বর্ম তিনি একা হাতে বানাচ্ছেন না। এ জন্য এক ঠিকাদারি সংস্থার সাহায্য নিয়েছেন নির্মাল্য।

West Bengal