রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের ঘোষিত 'দুর্গারত্ন' পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করল কল্যাণীর লুমিনাস ক্লাব। এবার কলকাতার বাইরের এই ক্লাবের পুজো দেখতে দর্শকদের ঢল নেমেছিল। উদ্বোধনের পর থেকেই সকাল-সন্ধে কী রাত্রি, দর্শকদের ভিড় উপচে পড়েছে কল্যাণী আইটিআই মোড়ের এই ক্লাবের পুজোমণ্ডপে। দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা এসেছেন। আর, সংলগ্ন রেলস্টেশন ভোরের প্রথম লোকাল ট্রেন এবং রাতের শেষ লোকাল ট্রেন পৌঁছনোর পরই থিকথিকে ভিড়ে সরগরম হয়ে উঠেছে। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস নিজেও সেই পুজো দেখতে ২০ অক্টোবর, শুক্রবার, মহাষষ্ঠীতে লুমিনাস ক্লাবের মণ্ডপে গিয়েছিলেন।
তার অনেক আগেই, কলকাতার দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কোর হেরিটেজ স্বীকৃতির কথা মাথায় রেখে, রাজ্য সরকারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবছর সেরা দুর্গাপুজোগুলোকে পুরস্কৃত করার কথা ঘোষণা করেছিলেন। সেইমত, পুজো শেষ হতেই মঙ্গলবার রাজভবন 'দুর্গারত্ন' পুরস্কার ঘোষণা করে। জানিয়ে দেয়, কলকাতার টালা প্রত্যয়, নেতাজি কলোনি লো-ল্যান্ড, বরানগর বন্ধুদল স্পোর্টিং ক্লাব এবং কল্যাণীর লুমিনাস ক্লাবকে পুরস্কৃত করা হবে। চারটি ক্লাবকে মোট পাঁচ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। সঙ্গে দেওয়া হবে মানপত্রও।
বুধবার, রাজভবনের সেই ঘোষণার কথা জানতে পেরেই পালটা পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করার কথা জানিয়ে দিল কল্যাণীর এই ক্লাব। এই ব্যাপারে কল্যাণী লুমিনাস ক্লাবের অন্যতম পুজো উদ্যোক্তা অরূপ মুখোপাধ্যায় বলেন, 'রাজ্যপালকে ধন্যবাদ দুর্গারত্ন পুরস্কারের জন্য। কিন্তু, আমরা এই পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করছি। আমরা পুজোর কয়েকদিন আগেই দেখলাম, গরিব মানুষ ১০০ দিন কাজ করেও টাকা পায়নি। দিল্লিতে আন্দোলন হল। বাংলাতেও ধরনায় বসলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বকেয়ার দাবি রাজ্যপাল কেন্দ্রের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। কিন্তু, এখনও সেই টাকা এল না। আমরা চাই, বাংলার গরিব মানুষ তাঁদের যোগ্য পাওনা পাক। আমাদের পুরস্কার যা পাওয়ার, পেয়ে গেছি। এখন গরিব মানুষগুলো ওই টাকাটা পেলে আমাদের ভালো লাগবে।'
আরও পড়ুন- দর্শকের বিচারে বাংলার চার পুজোকে ‘দুর্গারত্ন’ পুরস্কার দেবেন রাজ্যপাল, তালিকায় রয়েছে কারা?
লুমিনাস ক্লাবের এই প্রতিক্রিয়াকে স্বাগত জানিয়েছেন, রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা ব্রাত্য বসু। তিনি বলেন, 'রাজ্যপাল অনাহূতের মত মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে যান। লুমিনাস ক্লাবকে আমার অভিনন্দন এই পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করার জন্য। এটা একটা সদর্থক পদক্ষেপ। ওরা রাজ্যপালকে সতর্ক করল। মানুষ বুঝছে, কেন্দ্রের দ্বারা বাংলা বঞ্চিত।'