উত্তপ্ত ভাঙড়। তৃণমূল –আইএসএফ সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হাতিশালা এলাকা। শনিবার সকালে সংঘর্ষ চলাকালীন গুলি ও বোমা ছোড়া হয় বলে বলে অভিযোগ। উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি, ধস্তাধস্তি, ইটবৃষ্টির পাশাপাশি বোমাবাজি, গুলি চলেছে বলেও অভিযোগ।
আইএসএফ-এর দাবি, শনিবার দলের প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপনে দলের কর্মী, সমর্থকরা ট্রাকে করে ধর্মতলায় সমাবেশে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। সেইসময় হাতিশালা মোড়ে গাড়ি থেকে নেমে দলীয় পতাকা বাঁধতে যান কর্মীরা। যা দেখে বাধা দেয় স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা।সেখানেই দু'পক্ষের কথা কাটাকাটি হলে উত্তেজনা ছড়ায়। ট্রাক থেকে নেমে পড়ে আইএসএফ কর্মী, সমর্থকরা। ক্রমেই জমায়েত বাড়তে থাকে। বিপুল সংখ্যক আইএসএফ কর্মী, সমর্থকদের সামনে পড়ে পড়ে পিছু হঠেন তৃণমূল সমর্থকরা।
পাল্টা তৃণমূলের দাবি, রাতেই ভাঙড়ে গুলি চলেছিল। আইএসএফ কর্মী-সমর্থকরা গুলি চালায় বলেই দাবি তৃণমূলের। ফলে সকাল থেকেই এলাকায় ছিলেন শাসক দলের কর্মী, সমর্থরা। আইএসএফ সমর্থকরা অতি উৎসাহে স্থানীয় তিনটি তৃণমূল পার্টি অফিসে অগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। এরপরই উত্তপ্ত হয় পরিস্থিতি। চলে পাথর বৃষ্টি, বোমাবাজি ও গুলিও। শাসক দলের অভিযোগ, ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির উপস্থিতিতে আইএসএফ কর্মী, সমর্থকরা তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে। ফলে তাঁর গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়।
এর মাঝেই কলকাতার দিকে ওই এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় তৃণমূলের প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়েন
বিধায়ক নওশদ সিদ্দিকি। আটকে যায় তাঁর গাড়ি। পরে পুলিশি হস্তক্ষেপে নওশদের গাড়ি বেরিয়ে যায়।
আইএসএফের দাবি, সংঘর্ষে তাদের ৬ জন কর্মী, সমর্থক জখম হয়েছেন। তৃণমূলেরও ১ কর্মীর মাথা ফেটেছে বলে খবর। ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে ৪ জনকে আটক করেছে লেদার কমপ্লেক্স থানার পুলিশ।
পুলিশ পক্ষপাতিত্ব করলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি আইএসএফ বিধায়ক নওশদ সিদ্দিকি। তিনি বলেন, 'এটাই বাংলার প্রকৃত গণতন্ত্র। আমরা তৃণণূল সরকারের জনবিরোধী সব সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করছি বলেই এই হামলা।' নওশদকে গ্রেফতারের দাবিতে পথ অবরোধে তৃণমূলের আরাবুল ইসলাম, কাইজার আহমেদরা। তৃণমূল নেতা হাকিবুল ইসলামের দাবি, 'নওশদ সিদ্দিকির মদতেই হামলা করেছে আইএসএফ কর্মী, সমর্থকরা।'
এই ঘটনা নিয়ে বলতে গিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা নওশদ সিদ্দিকিকে ভালো ছেলে বলে দাবি করেছেন। এছাড়া তৃণণূলের বিরুদ্ধে সকল বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিতে আক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, 'নওশদ ভালো ছেলে। তাঁর সঙ্গে আমার মতপার্থক্য থাকতেই পারে। তবে বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে তৃণমূলকে হঠাতে চান নাকি বিজেপির বিরোধিতা করতে চান।'