Advertisment

জটমুক্ত হলো না ভাঙড় পাওয়ার গ্রিড, ফের বৈঠক সোমবার

পাঁচ ঘন্টা ধরে আলোচনা চলে। বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন পাওয়ার গ্রিড কর্তৃপক্ষ। তাঁরা জমি কমিটির নেতা ও সমর্থকদের চুক্তি অনুযায়ী সব কাজ হবে বলেই আশ্বাস দেন। কিন্তু তাতে চিঁড়ে ভেজে নি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

একদিকে মুখ্যমন্ত্রীর কড়া হুঁশিয়ারি, অন্যদিকে জমি কমিটির অনড় মনোভাব। ভাঙড়ের নির্মিয়মান পাওয়ার গ্রিড নিয়ে ফের বিপাকে প্রশাসন। বৃহস্পতিবার প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন, জানুয়ারির মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে পাওয়ার গ্রিডের কাজ। অপর দিকে জমি কমিটি চুক্তি খেলাপের অভিযোগ তুলে টাওয়ার নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দিয়ে সুর চড়াতেই বিপাকে প্রশাসন ও পাওয়ার গ্রিড কর্তৃপক্ষ। পুনরায় কাজ চালু করতে শুক্রবার পাঁচ ঘন্টার ম্যারাথন বৈঠক হলেও মেলেনি সমাধান সূত্র।

Advertisment

অচলাবস্থা কাটাতে শুক্রবার সকালে ভাঙড়ের পোলেরহাট ২ গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ে আলোচনা শুরু হয়। দ্বিপাক্ষিক এই আলোচনায় প্রশাসন ও জমি কমিটির নেতারা আলোচনায় বসেন। সেখানে ভাঙড়ের অন্য কোনো জনপ্রতিনিধি ছিলেন না। দীর্ঘ পাঁচ ঘন্টা ধরে আলোচনা চলে। বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন পিজিসিআইএল (পাওয়ার গ্রিড) কর্তৃপক্ষ। তাঁরা জমি কমিটির নেতা ও সমর্থকদের চুক্তি অনুযায়ী সব কাজ হবে বলেই আশ্বাস দেন। কিন্তু তাতে চিঁড়ে ভেজে নি।

আরও পড়ুন: জানুয়ারির মধ্যে শেষ করুন, ভাঙড় নিয়ে বললেন মমতা

বৈঠকে ভাঙড়ের জমি-জীবিকা-বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির সমর্থকরা তাঁদের দাবি মেনে উন্নয়নের কাজ না হওয়া পর্যন্ত খুঁটি পোতার কাজ করতে দেবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন। গোটা আলোচনা জুড়েই সেই সিদ্ধান্তেই অনড় থাকে জমি কমিটি। ফলে আলোচনায় সাব স্টেশনের খুঁটি পোতার কাজের সমধানসূত্র মেলে নি।

এই নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনার দিন ধার্য্য হয়েছে সোমবার। ওই দিন জেলা শাসকের সঙ্গে আলোচনায় বসবে জমি কমিটি বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। যদিও এদিনের আলোচনাতে বিদ্যুৎ সাব স্টেশনের ভিতরের কাজ এবং মাছিভাঙা ও খামারাইট গ্রামের মধ্যে বিদ্যুতের তার টানার জন্য জমি জরিপের কাজ চালু থাকবে বলে স্থির হয়েছে। ওই জরিপের ফলে জমির মালিকরা ক্ষতিপূরণের টাকা পাবেন।

দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টার ম্যারাথন বৈঠক শেষে জমি কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মির্জা হাসান বলেন, "চুক্তি মোতাবেক ভাঙড়ের রাস্তাঘাট, আলো, নিকাশী, স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়ন, হিমঘর, নদী সংস্কার, এমনকি তারা টানার জন্যও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা। কিন্তু প্রশাসন সেদিকে নজর না দিয়ে শুধুই বিদ্যুৎ সাব স্টেশনের কাজ দ্রুত করছে। ভাঙড়ের সার্বিক উন্নয়নের দাবি করা হয়েছে।"

আরও পড়ুন: ফের বন্ধ ভাঙড় পাওয়ার গ্রিডের কাজ, সৌজন্যে যুদ্ধং দেহি গ্রামবাসী

অন্যদিকে প্রশাসন সূত্রে খবর, চুক্তিমতো সব কাজই হবে। করতে একটু সময় লাগবে। সেই সময়টা দিতে হবে। এ বিষয়ে বিডিও কৌশিক কুমার মাইতি বলেন, "ভালো আলোচনা হয়েছে, কিছু কিছু সমস্যা নিয়ে কথা হয়েছে, আবার ৩১ ডিসেম্বর বৈঠক হবে।" তিনি আরো বলেন, "পাওয়ার গ্রিডের কাজ চলছে, টাওয়ার নির্মাণ হয়ে গিয়েছে।" জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও জানান, "গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।"

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার প্রশাসনের বিরুদ্ধে চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ তুলে নির্মীয়মান সাব স্টেশনের টাওয়ার তৈরির কাজ বন্ধ করে দেন গ্রামবাসীরা। এর আগে দীর্ঘদিন এই টাওয়ার তৈরি নিয়ে অচলাবস্থা চলে। মাঝে প্রশাসনের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা বৈঠকে বসে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে পুনরায় কাজ শুরু হয়। অপরদিকে জেলার প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানুয়ারির মধ্যে ভাঙড়ের কাজ সম্পূর্ণ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভাঙড় ২ নং ব্লকের বিডিও কৌশিক কুমার মাইতি, বারুইপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার সৈকত ঘোষ, ভাঙড়ের সিআই সৌগত রায়, কাশিপুর থানার ওসি বিশ্বজিত ঘোষ সহ জমি কমিটির পক্ষ থেকে যুগ্ম সম্পাদক মির্জা হাসান, মোশারেফ হোসেন সহ প্রায় একশো জন প্রতিনিধি।

Bhangar power grid South 24 Pgs
Advertisment