/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2019/01/2bf8b55e-ced9-43ee-b519-3bc1530d58c5-1.jpg)
মিউজিয়ামে বা জাদুঘরে কী কী থাকে আমরা সবাই জানি। অন্তত আমাদের তাই ধারণা। ঐতিহাসিক বা নানারকম নিষ্প্রাণ সামগ্রীর অধার হলো মিউজিয়াম। কিন্তু জীবন্ত গাছের মিউজিয়াম হতে পারে, কখনো ভেবেছেন? এরকমই এক মিউজিয়াম তৈরী হচ্ছে মুর্শিদাবাদে, অজয় নদীর পাড়ে। ১৮০ বিঘে জমির ওপরে সেই মিউজিয়ামে ইতিমধ্যেই ঠাঁই পেয়েছে ৫,৭৭৫ টি গাছ, এবং আরও বহুরকম গাছ এনে দু'বছরের মধ্যে সেই মিউজিয়ামকে বাস্তব রূপ দিতে কাজ করে চলেছেন আব্দুস সেলিম।
বোলপুর শহর থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে তাঁর হাতে তৈরি 'সবুজ বন', যার ঠিকানা জেনে ইতিমধ্যেই সাধারণ এলাকাবাসী থেকে শুরু করে পর্যটক, সবাই আসতে শুরু করেছেন, কিন্তু সেলিম বলছেন এখনও প্রকল্প শেষই হয় নি।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2019/01/79df0502-bb7f-4e7a-9845-57e18376dadc-1.jpg)
আদপে গল্ফ কোর্স এবং উদ্যান পালনে পারদর্শী বোলপুরের গ্রামের এই মানুষটি এখন একদিন দুবাই তো পরদিন হায়দরাবাদ হয়ে একের পর এক প্রকল্পের কাজ করে চলেছেন। তিনি বলছেন তাঁর যে কাজ, পশ্চিমবঙ্গে সে সব কাজ চলে না, ফলে দেশের অন্য রাজ্যের বড় শহর বা বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় কাজ চলছে। আর দেশ বিদেশের গলিঘুঁজি ঘুরে চলছে তাঁর হরেক গাছ সংগ্রহ, যার ফলে আপাতত ৫,৭৭৫ টি গাছকে মুর্শিদাবাদে আনতে পেরেছেন তিনি। কোনো গাছের ঠিকানা থাইল্যান্ড, তো কোনো গাছ আবার মরুদেশের বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: গোয়েন্দা বিভাগের ভোল বদল, নতুন বছরে নতুন রূপ
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে আব্দুস সেলিম জানান, আবহাওয়া, পরিবেশ, জলবায়ু বা মাটির ওপরে অনেক গাছ নির্ভর করে, ফলে বহু মূল্যবান চারা এনেও অনেক সময় বাঁচানো যায় না, আবার কোনো কোনো গাছ বেঁচেও যায়, এ ভাবেই 'সবুজ বনের' শ্রীবৃদ্ধি হয়।
২০০৩ সাল থেকে ১৫ বছর ধরে টানা পরিচর্যার পরে 'সবুজ বন' অনেকটাই এখন ঘন হয়ে উঠেছে।১০৩ জন স্থানীয় মানুষকে প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন সেলিম। আগামীতে প্রতিটি গাছের ওপর লেখা থাকবে তার বৃত্তান্ত, তার নানা ইতিহাস, তার আদি ঠিকানা এবং সে গাছকে নিয়ে হরেক কথকতা। একদিকে গবেষকরা পাবেন এক জীবন্ত প্রাণকেন্দ্র, সাথে দর্শক বা পর্যটকরাও পাবেন নতুন দ্রষ্টব্য। সেলিম জানান, আরও অসংখ্য প্রজাতির গাছ আনার কাজ চলছে, এবং ২০২১ সালের মধ্যে আন্তর্জাতিক মানের জীবন্ত গাছের মিউজিয়াম চালু করা এখন তাঁর লক্ষ্য।
বাংলার বনেবাদাড়ে জন্মানো আশ শ্যাওড়া গাছ থেকে শুরু করে হরেক প্রজাতির চেনা গাছ যেমন এখানে ডানা মেলেছে, তেমন মরুভূমির বুকে হওয়া নানা প্রজাতির গাছও এখানে বাঁচিয়ে তুলেছেন সেলিম। সবুজ বনের কাছেই অজয় নদী, বন্যার প্রকোপে ক্ষতিও হয়, তবু দমবার পাত্র নন আব্দুস সেলিম, লড়ে যাচ্ছেন 'সবুজ বনকে' এক নতুন আঙ্গিক দিতে।