Advertisment

বাবরের পর খুন ভাদু, আতঙ্কের বগটুই গ্রাম ছাড়ল নিহত তৃণমূল নেতার পরিবার

পরিবারের আর কেউ মরুক চান না তাঁরা, তাই মঙ্গলবার রাতে গ্রাম ছাড়লেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
bhadu Sheikh murder case cbi probe order by calcutta High Court

ডানদিকে নিহত তৃণমূল নেতা ভাদু শেখ। বাঁদিকে ভাদু শেখের নিথর দেহ। ছবি: পার্থ পাল।

কয়েক মাস আগেই খুন হয়েছিলেন ভাদু শেখের দাদা বাবর শেখ। সোমবার রাতে দুষ্কৃতীদের বোমাবাজিতে খুন ভাদুও। কয়েক মাসের ব্যবধানে দুই ছেলেকে হারিয়ে শোকে ভেঙে পড়েছেন ভাদুর বাবা। কিন্তু আতঙ্ক গ্রাস করেছে গোটা পরিবারকে। ২০০ মিটার দূরে রাস্তার ওপারেই পর পর কয়েকটি বাড়িতে নৃশংস কাণ্ড ঘটে গিয়েছে। তা নিয়ে মুখে কুলুপ ভাদুর পরিবারের। পরিবারের আর কেউ মরুক চান না তাঁরা, তাই মঙ্গলবার রাতে গ্রাম ছাড়লেন।

Advertisment

অন্য দিনের মতো সোমবার রাতেও রামপুরহাটের বগটুই মোড়ে আড্ডা দিতে গিয়েছিলেন বড়শাল পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা ভাদু শেখ। স্কুটিতে বসে আড্ডায় মত্ত ছিলেন তিনি। ঠিক সেই সময়েই হামলা দুষ্কৃতীদের। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় সব সময়ই ভাদু শেখকে ঘিরে থাকতো তাঁর নিজস্ব একটি নিরাপত্তা বলয়। ৮-১০ জন যুবকের একটি দল সব সময় তাঁকে ঘিরে থাকতে। সোমবার রাতেও তারা ছিল।

তবে গতরাতে ভাদুর মোবাইলে একটি ফোন আসে। কারও সঙ্গে কথা বলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। সঙ্গে থাকা যুবকরা সেখান থেকে কিছুটা সরে যায়। মুহূর্তের মধ্যে বাইকে চেপে আসা দুষ্কৃতীরা হামলা চালায় ভাদুর উপর। পরপর বেশ কয়েকটি বোমা ছোড়া হয় ভাদু শেখকে লক্ষ্য করে। ভাদুর অনুগামীদের লক্ষ্য করেও বোমা ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে তৃণমূল নেতা ভাদু শেখ। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।

আরও পড়ুন স্বামীকে নিয়ে বাপের বাড়ি এসেছিলেন স্ত্রী, বগটুইয়ে পুড়িয়ে খুন নবদম্পতিকেও

তার ঠিক এক থেকে দেড় ঘণ্টা পরই বগটুই গ্রামে শুরু হয় তাণ্ডব। স্থানীয় সোনা শেখ এবং মণিরুল শেখের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। সোনা শেখের বাড়ি থেকে মঙ্গলবার সকালে উদ্ধার হয় সাত-সাতটি পুড়ে কাঠ হয়ে যাওয়া দেহ। ছিল দুটি শিশুও। বাড়ির দেওয়াল, টিভি, ফ্রিজ, মোটরবাইক সব পুড়ে ছাই। রাতভর আগুনে জ্বলে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় ঘরগুলি।

আরও পড়ুন রামপুরহাট কাণ্ড: বিজেপির পাঁচ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি শুক্রবার যেতে পারে বগটুই গ্রামে

গ্রামের প্রতিবেশীর বাড়ি জ্বলছে, অথচ প্রাণভয়ে বেরোননি কেউ-ই। আশেপাশের সব বাড়িগুলি ছিল তালাবন্ধ। সবাই ছিলেন গৃহবন্দি। সোমবার রাতে কী হয়েছিল, কারা করেছে এই নৃশংস কাণ্ড, তা নিয়ে এলাকাবাসী মুখে কুলুপ এঁটেছে। কেউ-ই কিছু দেখেননি, কিছু জানেন না। এলাকার পুরুষরা সব গ্রামছাড়া। মঙ্গলবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত একে একে বহু পরিবার গ্রাম ছেড়েছেন। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, গবাদি পশু নিয়ে চোখের জলে গ্রাম ছেড়েছেন অনেক। তাঁদের মধ্যে শামিল ভাদুর পরিবারও।

tmc Birbhum Violence Rampurhat
Advertisment