হাইকোর্টের নির্দেশের পরই বগটুই কাণ্ডে কোমর বেঁধে তদন্তে নেমে পড়েছে সিবিআই। শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন, এলাকার থ্রি-ডি স্ক্যানিং, এলাকাবাসীদের জিজ্ঞাসাবাদ হয়েছে এক প্রস্থ। রবিবার হাসপাতালে ভর্তি অগ্নিদগ্ধ-আহতদের বয়ান রেকর্ড এবং ধৃত আনারুল-আজাদ সহ চারজনকে জেরা করেছে সিবিআই। এরই মধ্যে অন্য চিত্র দেখা গেল সাঁইথিয়ার বাতাসপুরে।
গত সোমবার রাতে ভয়াবহ হত্যালীলার পর সেখানেই আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন নিহতদের পরিজন মিহিলাল শেখরা। রবিবার সেই স্বজনহারাদের জন্য খাওয়া-দাওয়ার বন্দোবস্ত করল স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। এদিন সকাল থেকেই রান্নাবান্নার এলাহি আয়োজন দেখা যায় বাতাসপুরে। সকালে জলখাবারে স্বজনহারাদের দেওয়া হয় লুচি-আলুর তরকারি এবং রসগোল্লা। দুপুরের মেনুতে ছিল ভাত-ডাল, আলুপোস্ত, মাছ এবং মাংস। রাতেও খাবারের আয়োজন করা হয়েছে।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, যতদিন মিহিলাল এবং তাঁর পরিবার বাতাসপুরে রয়েছেন তাঁদের খাওয়া-দাওয়া, সবরকম প্রয়োজনে ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। উল্লেখ্য, গতকালই রাজ্য সরকারের তরফে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে মিহিলালদের কাছে। সরকারি গাড়িতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের লোগো দেওয়া প্যাকেটে রেশন, নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী, বেবি-ফুড দেওয়া হয়েছে স্বজনহারাদের। সাহায্যের কোনও খানতি রাখেনি তৃণমূল এবং রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন ‘বিরোধীদের ষড়যন্ত্র আছে’, সিবিআই ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়ার সময় বিস্ফোরক আনারুল
এদিকে, এদিনই রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ গ্রামবাসীদের বয়ান রেকর্ড শুরু করে সিবিআই। সিবিআইয়ের ডিআইজি অখিলেশ সিং নিজে গিয়েছেন বয়ান রেকর্ড করতে। সেখানে চারজন ভর্তি রয়েছেন অগ্নিদগ্ধ অবস্থায়। এক জন মহিলা ৬৫ শতাংশ অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় ভর্তি, আইসিইউ-তে থাকার জন্য তাঁর বয়ান আজ রেকর্ড করা হয়নি। বাকি তিন জনের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারই বগটুই গ্রামে ছুটে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেখা করেছিলেন নিহতদের পরিজনদের সঙ্গে। বগটুই কাণ্ডে নিজের স্ত্রী, কন্যা–সহ পরিবারের একাধিক সদস্যকে হারিয়েছেন মিহিলাল শেখ। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সঙ্গে কথা বলে তাঁকে ইনসাফের আশ্বাস দিয়েছিলেন। বগটুই কাণ্ডে হাইকোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলেও মমতাতেই আস্থা রয়েছে মিহিলালের।
আরও পড়ুন বগটুইকাণ্ড: থ্রি-ডি স্ক্যান, তদন্তে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার CBI-র
সেদিনের নৃশংস কাণ্ডে নিজের স্ত্রী, কন্যা-সহ পরিবার হারানো মিহিলাল বলেছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন আমি ওঁর উপর ভরসা রাখছি। আমাকে পূর্ণ ইনসাফ পাইয়ে দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। ওঁর উপর আস্থা-ভরসা রাখি আমি। কোর্ট সিবিআই রায় দিয়েছে, সেটা কোর্টের ব্যাপার। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের যে আশ্বাস দিয়েছেন সেটার উপর আমি ভরসা রেখেছি।”