Advertisment

বার্ড-ফ্লু শঙ্কায় মন্দা মুরগি ব্যবসায়, কী বলছেন চিকিৎসকরা?

এর আগে গুজব ছড়িয়েছিল ব্রয়লার মুরগি খেলে করোনা হবে। সেই গুজবে তখন ব্যবসা লাটে উঠেছিল। সেই ধাক্কা সামলে উঠেছে ফার্মগুলো।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

করোনার পর এবার বার্ড ফ্লু আতঙ্ক। ইতিমধ্যে দেশের ৯ রাজ্যে বার্ড ফ্লু ছড়িয়ে পড়েছে। এবার প্রথমে রাজস্থানের পোলট্রি ফার্মে শুরু হয়েছিল এই রোগের প্রকোপ। সোমবার রাজধানী শহর দিল্লিতে বহু কাক ও হাঁস মরেছে। এরাজ্যে বা আশপাশের রাজ্যে বার্ড ফ্লু সংক্রমণের কোনও খবর না থাকলেও ব্রয়লার মুরগির ব্যবসায় ইতিমধ্যেই তার প্রভাব দেখা দিয়েছে। দাম কমছে মুরগীর মাংস ও ডিমের। যদিও চিকিৎসকদের মতে, রান্না মাংস বা ডিমে ফ্লুর কোনও ভয় নেই।

Advertisment

এর আগে গুজব ছড়িয়েছিল ব্রয়লার মুরগি খেলে করোনা হবে। সেই গুজবে তখন ব্যবসা লাটে উঠেছিল। এক ধাক্কায় মুরগির পাইকেরি বাজার তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। সেই ধাক্কা সামলে উঠেছে ফার্মগুলো। কিন্তু ফের বার্ড ফ্লু আতঙ্কে মুরগি ও ডিমের ব্যবসা লাটে উঠতে শুরু করেছে। ওয়েস্ট বেঙ্গল পোলট্রি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মদন মোহন মাইতি বলেন, "এখনও অতটা খারাপ হয়নি। তবে কুড়ি শতাংশ বিক্রি কমে গিয়েছে। বাংলা বা পাশের ওড়িশা, আসাম, ঝাড়খন্ড কোথাও কিছু হয়নি। নানা ধরনের ভুয়ো ছবি দেখিয়ে সোশাল মিডিয়ায় কেউ কেউ ছড়িয়ে দিচ্ছে। লোকে ভয় পেয়ে যাচ্ছে। তবে এমন চলতে থাকলে দুঃখ আছে।"

এরাজ্যে প্রায় ৫ লক্ষ পোলট্রি ফার্ম রয়েছে। এছাড়া প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আরও প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। ফেডারেশনের বক্তব্য, সব থেকে কম দামে প্রাণীজ প্রোটিন সরবরাহ করে তাঁরা। প্রতি শীতে এমন কান্ড ঘটে। ব্রয়লারের পাইকেরি বিক্রি হচ্ছে গড়ে প্রতি কেজি ৮০টা। ডিমের দামও প্রায় ৩০ শতাংশ কমেছে। এখন মুরগির খুচরো বিক্রি ১৬০টাকা(নিট মাংস)।

বার্ড ফ্লুর ক্ষেত্রেও সাবধান থাকতে পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। তবে রান্না মাংসে কোনও সমস্যা নেই বলেই তাঁদের অভিমত। বিশিষ্ট চিকিৎসক সুমন পোদ্দার বলেন, "রান্না করা হয়ে গেলে ফ্লুয়ের ভাইরাস থাকে না। রান্না করার আগে পর্যন্ত ছড়াতে পারে। যদি বার্ড ফ্লু আক্রান্ত হয়ে থাকে তাহলে মাংস আনার সময় ড্রপলেট মাধ্যমে ইনফেকশন ছড়াতে পারে। ধরুন মাংস আনার সময় আপনার সামনে জ্যান্ত মুরগি ছিল না। আগে থেকে কেটে রাখা ছিল বা মড়া মুরগি চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে, তেমন যদি হয় সেক্ষেত্রে আপনি মাংসের প্রসেসিং হওয়ার সময় সামনে থাকলে তখন ছড়ানোর সুযোগ থাকে। মাস্ক পড়ে থাকলে বা সাবধানে থাকলে ভয়ের কোনও কারণ নেই।"

তবে সুমনবাবুর মতে, শুধু চিকেনের কথা ভাবলে ভুল হবে। তিনি বলেন, "চিকেনের কথা ছেড়ে দিন। আশে-পাশে চড়ুইপাখি বা কাক ঘুরে বেড়াচ্ছে। সেই পাখিগুলো জনবসতি এলাকায় হঠাৎ করে পট-পট করে মরতে থাকে তাহলেও কিন্তু পুরসভা বা সরকারকে সাবধান হতে হবে। তখন দেখা প্রয়োজন সেই এলাকাগুলোতে বার্ড ফ্লু এসে পড়ল কীনা। যদি সেরকম কিছু হয় তাহলে দ্রুততার সঙ্গে সেই জায়গাতে স্যানিটাইজেশন করলে ভাল হয়। মৃত পাখিগুলোকে সরিয়ে দিতে হবে। বার্ড ফ্লু কিন্তু কোভিডের মত নয় যে হুহু করে মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে দেবে। সেই প্রবণতা বহুগুন কম। তবে একবার রান্না হয়ে গেলে মাংস বা ডিম খাওয়াতে কোনও সমস্যা নেই। অত উচ্চ তাপমাত্রায় কোনও জীবাণু বাঁচে না।"

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

West Bengal Bird Flu
Advertisment