Advertisment

Bishnu Mal Murder Case: ধর থেকে মুন্ডু কেটে নৃশংস খুন যুবককে! একসঙ্গে ৭ জনকে ফাঁসির সাজা চুঁচুড়া আদালতের

Hooghly Bishnu Mal Murder Case: বৃহস্পতিবার দুপুরে চুঁচুড়া ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক শিবশঙ্কর ঘোষ এদিন বিশাল দাস-সহ সাতজনকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন। বাকি ১ জনের ৭ বছরের সাজা শোনানো হয়।

author-image
Uttam Dutta
New Update
Bishnu Mal Murder Case: চুঁচুড়া ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক শিবশঙ্কর ঘোষ এদিন বিশাল দাস-সহ সাতজনকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন

Bishnu Mal Murder Case: চুঁচুড়া ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক শিবশঙ্কর ঘোষ এদিন বিশাল দাস-সহ সাতজনকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন

Bishnu Mal Murder Case: একসঙ্গে সাতজনকে ফাঁসির আদেশ! হুগলির কুখ্যাত দুষ্কৃতী বিশাল দাস ও তার দলের ৬ জন সদস্য রাজকুমার প্রামাণিক, রতন ব্যাপারী, বিনোদ দাস, বিপ্লব বিশ্বাস, রামকৃষ্ণ মণ্ডল, রথীন সিংকে ফাঁসির আদেশ দেন বিচারক। অপর এক আসামি মান্তু ঘোষকে ৭ বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়। মোট ৯ জন দুষ্কৃতী মিলে পেশায় টোটো চালক এক যুবককে নৃশংস ভাবে হত্যা করেছিল। এই হত্যাকাণ্ডে শেখ মিন্টু আগেই রাজসাক্ষী হওয়ায় ছাড়া পেয়ে গিয়েছিল। 

Advertisment

বিরলতম খুনের ঘটনায় সর্বোচ্চ শাস্তি। এটাই বোধহয় পাওনা ছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে চুঁচুড়া ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক শিবশঙ্কর ঘোষ এদিন বিশাল দাস-সহ সাতজনকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন। বাকি ১ জনের ৭ বছরের সাজা শোনানো হয়। তিনদিন আগেই এই কোর্টেই তারা দোষী সাব্যস্ত হয়। এদিন ছিল রায়দান। 

এবিষয়ে সরকারি আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় জানান, বিশাল-সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে ipc 302 এবং 120b-তে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। বাকি মান্তু ঘোষের অপরাধ বলতে সে একটি দেহের এক খণ্ড ফেলতে সাহায্য করেছিল। তাই তার বিরুদ্ধে ৭ বছর সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। আসামি পক্ষের আইনজীবী মৃন্ময় মজুমদার জানান, এই আপিলের বিরুদ্ধে তাঁরা উচ্চ আদালতে যাবেন। এই রায়দানকে ঘিরে চুঁচুড়া আদালত ঘিরে ছিল তুমুল চাঞ্চল্য। পুলিশি নিরাপত্তায় পুরো এলাকা মুড়ে ফেলা হয়। যে যুবক খুন হয়েছিলেন তাঁর এলাকার বাসিন্দারাও রীতিমতো ভিড় জমিয়ে ছিলেন। 

ঠিক কি হয়েছিল সেদিন?    

চার বছর আগের ঘটনা।  নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয়েছিল এক যুবককে। তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে এক গোপন স্থানে আটকে রেখে রীতিমতো খণ্ড খণ্ড করে দেহের বিভিন্ন অংশ বিভিন্ন জায়গায় ফেলা হয়েছিল। ঘটনাস্থল ছিল চুঁচুড়া রায়ের বেড় এলাকা। চুঁচুড়ার কুখ্যাত দুষ্কৃতী বিশাল দাস তার দলবল মিলিয়ে রায়ের বেড় এলাকার বছর তেইশের এক যুবক বিষ্ণু মালকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল। বিষ্ণুর অপরাধ যে মেয়েটির সঙ্গে তাঁর প্রেম ছিল তাঁকে বিশাল পছন্দ করত। 

২০২০ সালের ১১ অক্টোবরের এই ঘটনার বেশ কিছুদিন পরে বিশাল দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার জীবনতলা এলাকা থেকে ধরা পড়ে। তাকে জেরা করে বাকি সাগরেদদেরও গ্রেফতার করা হয়েছিল। এই মামলার তদন্তকারী অফিসার ছিলেন চন্দননগর কমিশনারেটের সাব ইন্সপেক্টর বতর্মানে ব্যান্ডেল ফাঁড়ির ইনচার্জ তমাল মহান্তি। তিনি শুরু থেকেই এই কেসের পেছনে লেগেছিলেন। তৎকালীন চন্দননগর পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর নিহতদের পরিবারকে কথা দিয়েছিলেন, 'দোষীদের কাউকে ছাড়া হবে না, তাদের চরমতম সাজা যাতে হয় তার জন্য আমরা প্রাণপণ চেষ্টা করব।'

আরও পড়ুন বউবাজার-সল্টলেকের পর এবার হুগলির পাণ্ডুয়া, 'পিটিয়ে খুন' যুবককে, গ্রেফতার ২

সেইমতো কমিশনারেটের দুঁদে অফিসার তমাল মহান্তিকে তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছিল। এদিনের পর বর্তমান পুলিশ কমিশনার অমিত পি জাভালগি ওই অফিসারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ঘটনার দিন চুঁচুড়া শহরের জনবহুল এলাকা রায়ের-বেড় থেকে বছর তেইশের যুবক বিষ্ণু মালকে মোটরবাইকে করে তুলে নিয়ে সেই রাতেই চাঁপদানি এলাকায় একটি বাড়িতে বিষ্ণুকে নৃশংসভাবে হত্যা করে বিশাল। ধর-মুণ্ড আলাদা করে দেহ ছয় টুকরো করে। খুন করে দেহ টুকরো করার ছবি মোবাইলে তুলে রাখে। পরে প্যাকেটে করে শেওড়াফুলি ও বৈদ্যবাটির বিভিন্ন জায়গায় দেহাংশ ফেলে দেয়। 

কে এই বিশাল?

২০১৭ সালে রবীন্দ্রনগরে কুখ্যাত দুষ্কৃতী টোটন বিশ্বাসের দাদা তারক বিশ্বাসকে তার নিজের গোলাতে বোমা মেরে খুন করে এই বিশাল। তারপর থেকেই অপরাধ জগতে তার নামটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। কিশোর বয়সেই চুঁচুড়া রবীন্দ্রনগরের ত্রাস টোটন বিশ্বাসের দলে অপরাধ জগতের হাতেখড়ি বিশালের। কিন্তু পরবর্তী কালে দুজনের মধ্যে মনোমালিন্য ঘটায় বিশাল আলাদা হয়ে নিজে দল গড়ার পরিকল্পনা করে। এবং প্রধান শত্রু হিসেবে টোটনকেই বেছে নেয়। 

কয়েক বছর আগে টোটন জেলে থাকাকালীন তার দাদাকে খুন করে নিজের আধিপত্য বিস্তার করে। এরপর থেকে খুন, তোলাবাজি, মস্তানি সবেতেই পুলিশের খাতায় প্রথম সারিতে ছিল বিশাল। টোটন বিশ্বাসের দাদাকে হত্যা করার কয়েক মাসের মধ্যে হুগলি জেলার বলাগড় এলাকায় দুই গোষ্ঠীর গ্যাং ওয়ারে বিশাল-সহ আরও কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে চুঁচুড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরবর্তী কালে দীর্ঘদিন জেলও খাটে। জেল থেকে বেরিয়েই আবার অপরাধ জগতে ফিরে যায় বিশাল।

Hooghly West Bengal hooghly news Death Sentence Chinsurah crime
Advertisment