হেমতাবাদের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের রহস্যমৃত্যুর সিবিআই তদন্তের দাবিতে আজ উত্তরবঙ্গ বনধের ডাক দিয়েছে বিজেপি। বনধ সফল করতে এদিন সকাল থেকেই রাস্তায় নেমেছে বিজেপি কর্মীরা। বেলা বাড়তেই কোচবিহার, জলপাইগুড়ি থেকে দুই দিনাজপুরের নানাপ্রান্তে উত্তেজনা ছড়ায়। বন্ধ রয়েছে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ, চোপড়া, ইসলামপুরের দোকানপাট।
এদিন সকালে কোচবিহার শহরের বাস টার্মিনাসে বিক্ষোভদেখাচ্ছিলেন গেরুয়া শিবিরের কর্মীরা। বাস চলাচলে বাধা দেয় বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। ফলে অবরুদ্ধ করা হয় বাস টার্মিনাস। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নামে বিশাল পুলিশ বাহিনী। জেলা সভাপতি মালতী রাভার নেতৃত্বে বনধ সমর্থনকারীদের রাস্তায় বসে থাকতে দেখা যায়। বেশ কয়েকটি সরকারি বাস ভাঙচুরের অভিযোগ ওটে পদ্ম বাহিনীর বিরুদ্ধে। পরে একাধিক বনধ সমর্থককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
কোচবিহার শহরের বাস টার্মিনাসে বিজেপি কর্মীদের বিক্ষোভ। বাস চলাচলে বাধা দেওয়ার অভিযোগ বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। pic.twitter.com/g0n5Qcyk68
— indianexpress bangla (@iebengali) July 14, 2020
উত্তর দিনাজপুরের ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিজেপি। ফলে দাঁড়িয়ে পড়ে পণ্যবাহী ট্রাক। তবে বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন থাকায় গণ্ডগোল হয়নি। দক্ষিণ গিনাজপুরের বালুরঘাটে বনধের মিশ্র প্রভাব দেখা গিয়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ছাড়া দোকানপাট, যানবাহন প্রায় বন্ধ রয়েছে।
জলপাইগুড়িতে বনধের প্রভাব সর্বাত্মক। রাস্তায় মানুষের ব্যস্ততা চোখে পড়েনি। ধূপগুড়িতে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিজেপি। পরে পুলিশ গিয়ে অবরোধ তুলে দেয়। জেলার বিভিন্ন জায়গায় বিজেপির কর্মী সমর্থকরা বনধের সমর্থনে রাস্তায় নামেন। পাশের জেলা আলিপুরদুয়ারেও বিজেপির ডাকা বনধে ভাল সাড়া মিলেছে। যানবাহন, দোকানপাট বন্ধ। কয়েকটি সরকারি বাস চললেও তাতে যাত্রী খুব একটা নজরে পড়েনি। বিভিন্ন জায়গায় পিকেটিং করে গেরুয়া বাহিনী। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেয়। আলিপুরদুয়ারের বিজেপি যুব-মোর্চার সভাপতি সহ বেশ কয়েকজনকে পুলিশ আটক করেছে। মালদায় এমনিতেই গত কয়েকদিন ধরে লকডাউন জারি রয়েছে। তবে এদিনের বনধে জেলাজুড়ে সবই প্রায় বন্ধ।
সোমবার সকালে হেমতাবাদের দেবেন মোড়ের কাছে একটি দোকানের সামনে বিজেপি বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। বিধায়ককে খুন করা হয়েছে বলে দাবি করে গেরুয়া শিবির। এই মৃত্যুর কিনারা করতে সিবিআই তদন্তের দাবি জানানো হয়। তবে, রাজ্য সরকার সোমবারই তদন্তভার সিআইডির হাতে তুলে দিয়েছে। গতকালের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিনভর রাজনৈতিক টানাপোড়েন চলে। ২০১৬-র ভোটে সিপিএমের টিকিটে হেমতাবাদ থেকে জিতেছিলেন দেবেন্দ্রনাথ রায়। ২০১৯-এ তিনি দলবদল করে যোগ দেন বিজেপিতে।
সোমবার বিধায়কের দেহ উদ্ধারের পরই রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন সর্বভারতীয় বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডা। মমতা সরকার 'গুণ্ডারাজ' কায়েম করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। মঙ্গলবার কৈলাশ বিজয়বর্গীয়ের নেতৃত্বে বিজেপির এক প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেন। বাংলার আইন-শৃঙ্খলার অবণতি নিয়ে রাষ্ট্রপতিকে এক স্মারকলিপি জমা দেন তাঁরা।
A delegation of BJP leaders comprising Shri Kailash Vijayvargiya, Shri Arvind Menon, Shri Babul Supriyo, Shri Swapan Dasgupta and Shri Raju Bista called on President Kovind at Rashtrapati Bhavan. pic.twitter.com/wNWk68IneQ
— President of India (@rashtrapatibhvn) July 14, 2020
এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, বাবুল সুপ্রিয়, স্বপণ দাশগুপ্ত, রাজু বিস্ত ও অরবিন্দ মেনন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন