রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের মহারাজদের একাংশের বিরুদ্ধে 'রাজনীতি' করার অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মহারাজদের একটি অংশ BJP-র হয়ে কাজ করছে বলেও তোপ দেগেছিলেন তৃণমূলনেত্রী। এমনকী তাঁর মুখে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের এক মহারাজের নাম পর্যন্ত শোনা গিয়েছে। এই ইস্যুতেই এবার তৃণমূল সুপ্রিমোকে কড়া আক্রমণ শানিয়ে ময়দানে BJP।
BJP রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার তৃণমূলনেত্রীকে কটাক্ষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, "ইসকন, আরকেএম, এবং ভারত সেবাশ্রম সংঘের উপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক আক্রমণ নিম্ন স্তরে পৌঁছেছে। তিনি তাঁদের ভারতের ভবিষ্যত হুমকির জন্য অভিযুক্ত করেছেন, দাবি করেছেন RKM হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে বিজেপির পক্ষে প্রচার চালাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে, তাঁর বিভ্রান্তিকর রটনা বাংলার জনগণের জন্য একটি প্রতারণা।"
অন্যদিকে, BJP-র আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল ভারত সেবাশ্রম সংঘের শ্রদ্ধেয় কার্তিক মহারাজ সম্পর্কে মিথ্যা বলেছেন। হিন্দু সাধুদের অপমান করার জন্য সংঘ এখন তাঁর বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবে। বাংলার রক্তক্ষয়ী CAA-বিরোধী দাঙ্গার সময় সংঘ হিন্দুদের জীবন রক্ষায় সাহায্য করেছিল। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে টিএমসি ক্ষিপ্ত।"
কী বলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? যা নিয়ে এত বিতর্ক…
"সব সাধু তো সমান হয় না। সব স্বজন সমান হয় না। আমাদের মধ্যেও কি সবাই সমান। না। এই যে বহরমপুরে একজন মহারাজ আছেন। আমি শুনেছি অনেকদিন ধরে কার্তিক মহারাজ। ভারত সেবাশ্রম সংঘকে আমি খুব শ্রদ্ধা করতাম। আমার শ্রদ্ধার্ঘ্যের তালিকায় তারা দীর্ঘদিন ধরে আছেন। কিন্তু যে লোকটা বলে আমি তৃণমূলের এজেন্ট বসতে দেব না। সেই লোকটাকে আমি সাধু বলে মনে করি না।"
তবে তৃণমূলনেত্রীর তোলা এই অভিযোগ গতকালই অস্বীকার করেছেন বহরমপুরের সেই মহারাজ। সংবাদমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে এবিষয়ে তিনি বলেন, "সম্পূর্ণ মিথ্যা বলা হচ্ছে। আমি কোনও জায়গায় এই ধরনের কোনও কথা বলিনি। ওনাকে চ্যালেঞ্জ করছি আমাদের ভক্তরা এর প্রতিবাদ করবেন। এটা মামলা করা হবে হাইকোর্টে। ওনাকে প্রমাণ দিতে হবে যে আমি বলেছি এই কথা।"
শুধু ভারত সেবাশ্রম সংঘই নয়, গতকাল নির্বাচনী সভা থেকে রামকৃষ্ণ মিশন সম্পর্কেও মন্তব্য করেছিলেন তৃণমূলনেত্রী। তিনি বলেছিলেন, "দিল্লি থেকে নির্দেশ আসে। বলে বিজেপিকে ভোট দিতে বলো। সাধু সন্তেরা কেন একাজ করবেন? রামকৃষ্ণ মিশনকে সবাই সম্মান করে। ওদের একটা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ আছে। যারা মেম্বার হয়, দীক্ষা নেয় তারা আছে। আমি তাদের ভালোবাসতে পারি। দীক্ষা নিতে পারি। রামকৃষ্ণ মিশন ভোটা দেয় না কোনওদিন। আমি জানি। তাহলে আমি অন্যকে ভোট দিতে কেন বলব?"