উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদের বিজেপি বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল সোমবার সকালে। বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে বাজারে রাস্তার ধারে অবস্থিত একটি চায়ের দোকানে মধ্যে ঝুলন্ত অবস্থায় বিধায়কের দেহ মেলে। বিজেপি নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয়র দাবি, দেবেন্দ্রনাথ রায়কে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিজেপি করার অপরাধেই বিধায়কের এই পরিণতি। টুইটে এমটাই দাবি করেছে রাজ্য বিজেপি। রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ করেছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর কথায়, 'রাজ্যের বিজেপি বিধায়কদের কোনও নিরাপত্তারক্ষী নেই। এই ঘটনার পিছনে শাসক দলের স্থানীয় নেতাদের হাত থাকতে পারে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হোক।'
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা টুইটে লিখেছেন, 'হেমতাবাদের বিধায়ক খুনের ঘটনা মমতা সরকারের গুণ্ডারাজ ও আইন-শৃঙ্খলা অবণতির ছবি তুলে ধরছে। রাজ্যবাসী এই ধরনের বিষয়কে ক্ষমা করবেন না।'
The suspected heinous killing of Debendra Nath Ray, BJP MLA from Hemtabad in West Bengal, is extremely shocking and deplorable. This speaks of the Gunda Raj & failure of law and order in the Mamta govt. People will not forgive such a govt in the future. We strongly condemn this.
— Jagat Prakash Nadda (@JPNadda) July 13, 2020
উত্তর দিনাজপুরের বিজেপি নেতা সুরজিৎ সেনের কথায়, 'এটা আত্মহত্যার ঘটনা নয়, পরিকল্পনা করে বিধায়ককে খুন করা হয়েছে। সিবিআই তদন্তের দাবি করছি।' একই দাবি করে বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা বলেছেন, 'এই হত্যার জন্য দায়ী তৃণমূল। উত্তর দিনাজপুরে বিজেপির সমর্থন বাড়ছিল। যা বুঝতে পেরেই এই নারকীয় কাণ্ড ঘটিয়েছে রাজ্যের শাসক দল। নিহত বিধায়কের পরিবারের তরফেও সিবিআই তদন্তের দাবি করা হয়েছে। পরিবারের দাবি, রাত একটা নাগাদ বেশ কয়েকজন যুবক তাঁকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। তারপর রাতভর তাঁর আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। সকালে দেহ উদ্ধার হয়।
বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি তথা বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ আজ দুপুরেই হেমতাবাদ পৌঁছবেন বলে দলের তরফে জানানো হয়েছে। বিজেপির প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের ২০০ কর্মী বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়কে খুন করেছে বলে টুইটে অভিযোগ করেছেন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়।
বিধায়কের দেহ উদ্ধারের পরেই কয়েকশ এলাকায় জড়ো হন। বিন্দোল গ্রামজুড়ে উত্তেজনা ছড়ায়। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। বিধায়ক খুনের ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বিধায়ক খুনে বিজেপির নিশানায় রাজ্যের শাসক দল। তবে, অভিযোগ উড়িয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগারওয়াল বলেছেন, 'খনু নাকি আত্মহত্যা, পুরো ঘটনাই তদন্ত সাপেক্ষ।'
দেবেন্দ্রনাথবাবু ২০১৬ সালে সিপিএমের টিকিটে হেমতাবাদ বিধানসভা থেকে জয়ী হয়েছিলেন। এর আগে তিনি বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েতে পরপর তিনবার সিপিএমের প্রধান ছিলেন। ২০১৯ সালে দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন