সোমবার জেলা ভাগের ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুর্শিদাবাদ ভেঙে হবে মোট তিনটি জেলা। জেলা ভাগ হয়ে নয়া দুই জেলার নাম হবে কান্দি ও বহরমপুর। এরপরই নাম নিয়ে বিস্তর শোরগোল পড়েছে। রাজ্য প্রশাসনের সিদ্ধান্ত, 'মুর্শিদাবাদের ইতিহাসকে ভুলিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত' বলে অভিযোগ জেলার বিজেপি বিধায়কের। এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। মুর্শিদাবাদকে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল হিসাবে ঘোষণার জন্য রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, রাজ্যপালের কাছে আবেদন জানিয়েছেন বিরোধী দলের বিধায়ক।
মুর্শিদাবাদের বিধায়ক বিজেপির গোরীশঙ্কার ঘোষ। জেলাভাগের তীব্র বিরোধী তিনি। তাঁর অভিযোগ, মুর্শিদাবাদ ইতিহাস প্রসিদ্ধ জেলা। সেই জেলারই ইতিহাস ভুলিয়ে দিতে মরিয়া মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন সকালে সোশাল মিডিয়া পোস্টে গৌরীশঙ্কর লিখেছেন, 'মুর্শিদাবাদ জেলাকে বিভক্ত করে মুর্শিদাবাদের ইতিহাসকে ভুলিয়ে দেওয়ার চক্রান্তের প্রতিবাদে, "মুর্শিদাবাদ " নামে একটি পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরি করে আমাদের অবিভক্ত বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার রাজধানী মুর্শিদাবাদের হৃত গৌরব আমাদের ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য, মাননীয়া রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, মাননীয় রাজ্যপাল মহোদয়ের কাছে আবেদন জানালাম।'
মুর্শিদাবাদের ভাঙন মানছে না কংগ্রেসও। বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেছেন, 'আমরা জেলাভাগের বিরোধী। মমতা প্রশাসনের তুঘলকি কারবার মানব না। মুর্শিদাবাদ জেলার নাম মুছে বাংলার ইতিহাসকে মুছে দেবার চেষ্টা করছেন দিদিমণি । এটা মুর্শিদাবাদ তথা বাংলার মানুষ কোনওদিন মেনে নেবে না । এর বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চলবে, যতদূর যেতে হয় আমরা যাব।'
রাজ্যের এক বিরোধী বিধায়ক ও সাংসদের দাবি ঘিরে শোরগোল পড়েছে। গৌরীশঙ্কর ও অধীরের মন্তব্যকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন। তিনি বলেছেন, 'যারা অশোকস্তম্ভ বদলে দিয়েছেন। সৌম ও শান্তির প্রতীক শান্ত সিংহের রূপ বদলে দিয়ে হিংস্র করে তুলছেন, তাঁদের মুখ এসব মানায় না। বিজেপি দেশভাগ করতে চায়, রাজ্যকে ভেঙে ভাগ করতে চায়। আর বাংলার মুখ্যমন্ত্রী প্রসাসনিক তৎপরতার জন্য বাংলায় জেলা তৈরি করছেন। প্রসানকে তিনি জেলায় জেলায় নিয়ে যাচ্ছেন। ফলে যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোকে ভেঙে ওরা ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার খেলায় নেমেছে।'