'ভারতীয় জনতা পার্টি মানেই তৃণমূল।' গত ডিসেম্বরে বীরভূমে অনুব্রত মন্ডলকে পাশে দাঁড় করিয়ে এই মন্তব্য করে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিলেন কৃষ্ণনগর উত্তরের বিজেপি বিধায়ক মুকুল রায়। অবশ্য ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের পরই তিনি সপুত্র তৃণমূল ভবনে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা তুলে নিয়েছিলেন। সোমবার দীর্ঘ দিন পর মেট্রোপলিটনের তৃণমূল ভবনে গিয়েছিলেন তৃণমূলের একসময়ের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড মুকুল রায়। তিনি জানিয়ে দিলেন রাজনীতির লোক রাজনীতির বাইরে কোথায় যাবে।
দীর্ঘ দিন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে না মুকুল রায়কে। একসময় তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরেই দলে দায়িত্ব সামলেছেন মুকুল। পরবর্তীতে বিজেপিতে যোগ দিলেও বেশ সক্রিয় ছিলেন বাংলার রাজনীতিক চানক্য। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে কৃষ্ণনগর থেকে বিজেপির প্রার্থী হিসেবে জয় পেলেও তৃণমূলে যোগ দেন। বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান হন। যদি পরবর্তীতে বিধানসভা অধিবেশনেও তাঁকে সেভাবে দেখা যায়নি। এদিন তৃণমূল ভবনে তাঁর দেখা মেলায় রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে তাহলে কী ফের সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরছেন মুকুল রায়?
জানা গিয়েছে, সোমবার বিকেল ৩টে নাগার অস্থায়ী তৃণমূল ভবনে গিয়ে হাজির হন মুকুল রায়। তখন ভবনে ছিলেন দলের রাজ্য় সভাপতি সুব্রত বক্সী। তাঁর সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা হয় মুকুল রায়ের। সূত্রের খবর, সুব্রত বক্সী দলের পরবর্তী কর্মসূচিতে হাজির থাকার অনুরোধ জানান মুকুল রায়কে। মাঝে-মধ্যে তৃণমূল ভবনে আসার কথাও বলে একদা সেকেন্ড-ইন-কমান্ডকে। প্রায় আধঘন্টা ভবনে ছিলেন তিনি। ভবন থেকে বেরিয়ে মুকুল রায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, 'রাজনীতির লোক রাজনীতির বাইরে যাব কোথায়। পঞ্চায়েত ভোটে যেমন ভূমিকায় থাকার কথা সরকার যেমন দায়িত্ব দেবে। রাজ্যের সব জায়গায় যাব।'
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূলের তৎকালীন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, গরুপাচার কাণ্ডে গ্রেফতার বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডল। কয়লাপাচার কান্ডে ইতিমধ্যে তিনবার তলব করা হয়েছে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সারদাকাণ্ডে একবার তলব করা হয়েছিল মুকুল রায়কে। সিবিআইকে সহযোগিতা করব বলেও তখন দলের সঙ্গে সংঘাতের সূত্রপাত হয়েছিল। যদিও রাজনৈতিক পরিস্থিতির বদল ঘটেছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন তিনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে সহযোগিতা করবেন। নয়া তৃণমূলের কথাও বলছেন দলের একাংশ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডার্টি পলিটিকসের প্রসঙ্গে তুলে বিদায়ের কথা। সেই পরিস্থিতিতে ফের তৃণমূল ভবনে মুকুল রায়ের আগমন রাজ্য-রাজনীতিতে জল্পনা ছড়িয়েছে।