বিজেপির নবান্ন অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি হয়েছিল। জ্বলেছিল পুলিশের গাড়ি, মারা হয় উর্দিধারীদের। পাল্টা বিজেপি কর্মীদেরও রুখতে লাঠি চার্জ, জলকামানের ব্যবহার করেছিল পুলিশ। একাধিক পদ্ম কর্মী, সমর্থক প্রহৃত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। বিজেপির অভিযোগ, শাসক তৃণমূলের দলদাসে পরিণত হয়ে 'অত্যাচার' চালিয়েছিল পুলিশ। এরপরই বাংলায় আসে বিজেপির পাঁচ সদস্যের কেন্দ্রীয় দল। অবস্থা পর্যালোচনা করেন রাজ্যসভার সাংসদ ব্রজলাল, লোকসভার সাংসদ কর্নেল রাজ্যবর্ধন সিং রাঠৌর, লোকসভার সাংসদ অপরাজিতা সারেঙ্গি, রাজ্যসভার সাংসদ সমীর ওরাও, পঞ্জাবের সুনীল জাখার। তাঁরা আহত বিজেপি কাউন্সিলর মীনাদেবী পুরহিত সহ বিজেপি কর্মীদের সঙ্গেও দেখা করেন। শনিবার এই কেন্দ্রীয় দল বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কাছে কমিটির রিপোর্ট জমা দেন।
কেন্দ্রীয় দলের রিপোর্টে ১৩ সেপ্টেম্বরের নবান্ন অভিযানের দিন অশান্তির জন্য সরাসরি পুলিশকে দায়ী করা হয়েছে। ২৫ পাতার একটি রিপোর্ট একাধিক ছবি রয়েছে। রিপোর্টে উল্লেখ, নবান্ন অভিযান ছিল ‘জন আন্দোলন’, যা ছত্রভঙ্গ করতে রাজ্য সরকারের মদতে পুলিশ বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছে।
কখনও মুখ ঢেকে, আবার কখনও সাধারণ পোশাকে তৃণমূলের গুন্ডাদের সঙ্গে নিয়ে পুলিশ বর্বোরচিত আক্রমণ চালায়। সাঁতরাগাছি, হাওড়া ময়দান, লালবাজার, এমজি রোডে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে প্রশাসন। পাথর ছোড়া, জলকামান, রবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস, লাঠির ব্যবহার শুধুমাত্র দুর্ভাগ্যের নয়, সাংবিধানিক অধিকার ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল।
রিপোর্টে আরও উল্লেখ যে, অভিযানে প্রায় সাড়ে সাতশ বিজেপি কর্মী আহত হয়েছেন। অনেকে আইসিইউয়ে। ভিন রাজ্যের হাসপাতালেও ভর্তি অনেকে। অভিযান শুরু ও তার আগে ৫৫০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ৬০ জন এখনও পুলিশ হেফাজতে।
বিজেপির নবান্ন অভিযানের দিন কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার দেবজিত্ চট্টোপাধ্যায় আহত হয়েছিলেন।এসএসকেএময়ে ভর্তি করা হয় তাঁকে। পরে ওই পুলিশ কর্মীকে দেখতে যান ডাযমন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। হাসপাতাল প্রাঙ্গনে দাঁড়িয়েই তিনি বিজেপিকে কড়া নিশানা করেন। বলেছিলেন, 'আমি দেবজিৎবাবুকে বললাম, আপনার জায়গায় যদি আমি থাকতাম, আমার সামনে পুলিশের গাড়িতে আগুন জ্বালানো হতো, এরকম হামলা হতো, তাহলে আমি (কপালে আঙুল ঠেকিয়ে) এখানে শ্যুট করতাম, মাথার উপরে।' যা নিয়ে প্রবল হইচই হয়। বিজেপির কেন্দ্রীয় দলের রিপোর্টের অভিষেকের ওই মন্তব্যেরও উল্লেখ রয়েছে।
এছাড়া, ওই দিন তিন আইপিএস সিদ্ধানাথ গুপ্তা, আইপিএস দময়ন্তী সেন, আইপিএস প্রবীণকুমার ত্রিপাঠীর ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তোলা হয়েছে।