শটগানের গুলি লেগেই মৃত্যু হয়েছে উলেন রায়ের। ময়না তদন্তের রিপোর্ট তুলে ধরে এই দাবি করল পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। সোমবার উত্তরকন্যা অভিযানে বিজেপি কর্মী উলেন রায়ের মৃত্যু হয়। গেরুয়া বাহিনীর অভিযোগ, পুলিশের অত্যাচারেই দলীয় কর্মী নিহত হয়েছেন। বুধবার ফের একবার সেই অভিযোগ ওড়াল পুলিশ।
এদিন টুইটে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, 'ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, "শটগান আঘাতের কারণে মৃত্যু হয়েছিল।" পুলিশ শটগান ব্যবহার করে না। এটা স্পষ্ট যে শিলিগুড়িতে গতকালের প্রতিবাদের সময় সশস্ত্র ব্যক্তিদের আনা হয়েছিল এবং তারা আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি চালিয়েছিল। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে মৃতের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা কোনো ব্যক্তির শটগান থেকে চালানো গুলির প্যালেট আঘাত পেয়েছিল নিহত ব্যক্তি ।এটি নজিরবিহীন। প্রতিবাদ কর্মসূচিতে সশস্ত্র ব্যক্তিদের আনা এবং তাদের গুলি চালাতে উস্কে দেওয়া শোনা যায় না। আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে হিংসা ছাড়ানোর দুরভিসন্ধি ছিল। পশ্চিমবঙ্গের সিআইডি কে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। সত্য প্রকাশিত হবে এবং যারা জঘন্য অপরাধের পরিকল্পনা এবং সেটা কার্যকর করেছিল তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
যদিও পুলিশের দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেছেন, 'পুলিশ গুলি চালায়নি তো কে গুলি চালাল? এখন সব ধামাচাপা দিতেই সিআইডি তদন্তের কথা বলা হচ্ছে। শুধু উলেন রায় নয়, দলের আরও ১০-১২ জন কর্মীর দেহে ক্ষতের দাহ রয়েছে। নিরপেক্ষ তদন্ত হলেই সব স্পষ্ট হয়ে যাবে।'
রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর দাবি, 'লোক দেখানোর জন্য সিআইডি তদন্তের কথা বলা হচ্ছে। আসলে সবটাই পুলিশের ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা।'
বিজেপির মন্তব্যে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। তিনি বলেছেন, 'পুলিশের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে শটগানের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে উলেন রায়ের। হয়তো শটগান এনেছিল বিজেপিই। ওরা আদালতে গেলে যাক। সব স্পষ্ট হয়ে যাবে।'
উল্লেখ্য, সোমবার বিজেপির উত্তরকন্যা অভিযানকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে শিলিগুড়ি। আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে দফায় দফায় পুলিশ লাঠিচার্জ ও জলকামানের ব্যবহার করে। পুলিশ-আন্দলনকারী ধস্তাধস্তির মাঝে পড়ে মৃত্যু হয় বিজেপি কর্মী উলেন রায়ের। বিজেপির অভিযোগ, পুলিশি অত্যাচারেই দলীয় কর্মী মারা গিয়েছেন। তবে সোমবারই টুইটে পুলিশ জানিয়েছিল, গেরুয়া বাহিনীর কর্মসূচি হিংসাত্মক ছিল। তা দমনের চেষ্টা হলেও কোথাউ অত্যাচার করা হয়নি।
সোমবারের এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ বিজেপির ডাকে ১২ ঘন্টার উত্তরবঙ্গ বনধ চলছে। উত্তরের সাত জেলায় বনধের জেরে ব্যাহত জনজীবন। দোকানপাট-ব্যবসা, বেসরকারি অফিস সবই প্রায় বন্ধ। আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে সরকারি বাস ডিপোতে পিকেটিং করে বিজেপি। কিছু স্থানে জাতীয় সড়কের ওপর টায়ার পুড়িয়েও হয় প্রতিবাদ। বালিরঘাটে জোর করে দোকান বন্ধ করানোর অভিযোগ উঠেছে পদ্ম শিবিরের বিরুদ্ধে। বনধ ঘিরে নানান জায়গায় উত্তেজনা ছড়ায়। রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর বলেছেন, 'পুলিশি অত্যাচারের প্রতিবাদে ডাকা বনধ সর্বাত্মক।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন