কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতির বিপুল অভিযোগ এনে এবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে চিঠি দিল বঙ্গ বিজেপি। সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যদের চিঠি পাঠিয়ে সাপ্তাহিক কাজের রিপোর্ট চেয়েছিলেন রাজ্যপাল। তাতে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজভবনের মনোমালিন্য তৈরি হয়। তার মধ্যেই এবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য আশিসকুমার চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হল বঙ্গ বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, দেশের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অন্যতম কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ক্ষমতার বড়সড় অপব্যবহার করছেন।
চিঠিতে রাজ্য বিজেপির বুদ্ধিজীবী সেলের পক্ষ থেকে পুলকনারায়ণ ধর জানিয়েছেন, গত বছর ১৩ সেপ্টেম্বর কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ থেকে সোনালি চক্রবর্তীকে অপসারণ করা হয়েছে। পরে, ১১ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টও একই নির্দেশ বহাল রাখে। সেই সোনালি চক্রবর্তী ব্যানার্জি ও তাঁর পরবর্তীতে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য আশিসকুমার চট্টোপাধ্যায়ের সময় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
চিঠিতে পুলকনারায়ণ ধর অভিযোগ করেছেন, ২০২২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি আশিসকুমার চট্টোপাধ্যায় উপাচার্যের তরফে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায়িক কার্যকলাপ এবং অর্থ বিভাগ দেখভালের দায়িত্ব পান। ২০১১ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় আইন (সংশোধিত) এবং ১৯৭৯ সালের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় আইন না-মেনেই তাঁকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। আশিসকুমার চট্টোপাধ্যায়কে ওই পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক কমিটি। আর, সেই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তদানীন্তন উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী ব্যানার্জি। আর, বর্তমানে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা বিষয়ক, কার্যকলাপ বিষয়ক এবং আর্থিক- এই তিনটি ক্ষেত্রেই তিনি উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন।
পুলকনারায়ণ ধরের অভিযোগ, এবছরের ১৪ মার্চ, ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য আশিসকুমার চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট অধ্যাপিকা সোনালি চক্রবর্তী ব্যানার্জির ৬ মাসের সবেতন ছুটি মঞ্জুর করেছে। এর আগে তাঁকে আরও তিন মাসের সবেতন ছুটি দেওয়া হয়েছিল। সেই হিসেবে ২০২২ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি সবেতন ছুটি ভোগ করছেন। যা শেষ হবে এবছরের ১৩ জুন।
আরও পড়ুন- তাপপ্রবাহ-দাবদাহ বাংলা জুড়ে, আগামীকাল থেকে স্কুল-কলেজ বন্ধের নোটিশ জারি
এই দীর্ঘসময়ের সবেতন ছুটি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন এবং ইউজিসি আইনের বিরুদ্ধ বলেই অভিযোগ বঙ্গ বিজেপি নেতার। শুধু তাই নয়, অধ্যাপিকা সোনালি চক্রবর্তীর অধ্যাপিকা হওয়ার যোগ্যতা না-থাকা সত্ত্বেও তাঁকে অধ্যাপিকা পদে নিয়োগ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ পুলকনারায়ণ ধরের। এরকম ভুরিভুরি অনিয়মের অভিযোগ তিনি রাজ্যপালের কাছে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করেছেন। সঙ্গে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসেবে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করেছেন।